
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনার বাজারে শীতের ভরা মৌসুমেও চড়া সবজির দাম বসন্তে এসে সামান্য কমেছে। পাইকারি বাজার ও খুচরা বাজারে সবজি বিক্রয় হচ্ছে দামের সামান্য ব্যবধানে। তবে মুরগী,গরু এবং মাছের দাম অপরিবর্তিত রয়ে গেছে। এছাড়া বাজারে অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যও চড়া দামেই বিক্রি হচ্ছে। শুক্রবার (১৬ ফেব্রুয়ারি) সকালে খুলনার বিভিন্ন বাজার ঘুরে এমনটিই দেখা গেছে। বাজার ঘুরে দেখা যায়, শীতের শিম, মুলা, শালগম প্রতি কেজি ও এবং ফুলকপি ও বাঁধাকপি এখন খুচরা বাজারে ৩০-৪০ টাকার মধ্যে বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহ থেকে প্রকারভেদে ২০-২৫ টাকা কম। এর মধ্যে প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধাকপি আকারভেদে ৩০ থেকে ৪০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। লাউয়ের দামও প্রায় কমে ৫০ টাকায় নেমেছে। এছাড়া আলুর কেজি ৪০ টাকা, বেগুন ৪০-৫০ টাকা, পেঁপে ৪০ টাকা, টমেটো গাজার ও শসার কেজি ৪০ টাকা, চিচিঙ্গা ৭০ টাকা, কচুর লতি ৮০ টাকা, বরবটি ও করলা ৮০-১০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। গল্লামারী বাজারের সবজি বিক্রেতা হোসেন বলেন, বাজারে সরবরাহ ভালো, যে কারণে সবজির দাম গত সপ্তাহের তুলনায় ১০ থেকে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। দীর্ঘদিন পরে সবজির দাম নিম্নমুখী হওয়াতে ক্রেতাদের অভিযোগ কমেছে। এদিকে বাজারে কেজিতে প্রায় ৫০ টাকা বেড়েছে গরুর মাংসের দাম। ভোটের আগে প্রতি কেজি গরুর মাংস ৬০০ টাকা পর্যন্ত নামলেও ভোটের পর তা ৭০০ টাকায় গিয়ে ঠেকে। কিন্তু গত এক সপ্তাহে আরও দাম বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৭২০ থেকে ৭৫০ টাকা। গরুর মাংসের মূল্যবৃদ্ধির বিষয়ে মাংস ব্যবসায়ীরা বলছেন, রোজা ও কোরবানি সামনে রেখে খামারিরা গরু বিক্রি কমিয়েছেন। সেজন্য বাজারে সরবরাহ কম, দাম বাড়ছে। ফরহাদ হোসেন নামের এক ক্রেতা বলেন, অনেকে দামের কারণে গরুর মাংস কেনা ছেড়ে দিয়েছিলেন। মাঝখানে দাম কমানোয় ক্রেতা বেড়েছিল। এদিকে বাজারে চড়া দামে আটকে আছে ব্রয়লার মুরগি ও ফার্মের মুরগির ডিমের দাম। প্রতি হালি বাদামি ডিম ৪৬ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে বড় বাজারে। আর পাড়া-মহল্লার দোকানে প্রতি হালি ডিমের দাম ৫০ টাকা, ডজন ১৫০ টাকা। এছাড়া ব্রয়লার মুরগির কেজি ১৯০ থেকে ২০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে শতক পেরিয়ে যাওয়া পেঁয়াজের দাম এখনো কমেনি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৮০-১০০ টাকায়। একই সঙ্গে চড়া দামে আদা ও রসুন দুই পদই বিক্রি হচ্ছে ২৪০ থেকে ২৬০ টাকা দরে। অন্যদিকে মুদি বাজারে প্রতি কেজি চিনির দাম ১৫০ টাকা, ছোলা ১২০ টাকা এবং মসুর ডাল ১২০-১৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। যা বছরের অন্য যেকোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি। গল্লামারী বাজারে বাজার করতে আসা জলিল আহমেদ বলেন, কোনো পন্যের দাম একবার বৃদ্ধি পেলে তা কমার লক্ষণ খুব কম থাকে। তবে স্থানীয় বাজার মনিটরিং কমিটি এবং স্থানীয় প্রশাসণ আলোচনা এবং দাম বৃদ্ধির কারন খুজে বের করে তা সমাধান করলে সারা দেশের এ দাম বৃদ্ধির সমস্যা কমে যাবে। গল্লামারী বাজারে সরাসরি সবজি বিক্রয় করতে আসেন কৃষক আলমগীর। তিনি বলেন, শুক্রবার দিন নিজেই আসি সবজি বিক্রয় করতে। ব্যাপারিদের ধার থেইক্কা দাম পাওন যায় না। ১৫ টাকায় সিম কিন্না আইনে হেরা ৪০ টাহা কেজিতে বেচে। লাভের লাভ আমগো কিছু হয় না। এজন্যে নিজে শুক্রবার আমি সবজি বেচতে আহি।