জন্মভূমি রিপোর্ট : বাজারে সবজির দাম ক্রমেই বাড়ছে। ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজিই কিনতে পারছেন না ক্রেতারা। দাম অস্বাভাবিক বৃদ্ধির কারণে চরমভাবে অস্বস্তিতে পড়েছেন নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষ। তারা ক্ষোভ ঝেড়ে বলছেন, মাছ-মাংস তো দূরের কথা এখন দু-বেলা পাতে সবজি দেওয়াও দায়।
বৃহস্পতিবার খুলনার কয়েকটি কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, ১৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে সিম। একই দামে বিক্রি হচ্ছে কাঁচামরিচ। ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে বেগুন ও বরবটি। তার চেয়ে বেশি দরে বিক্রি হচ্ছে গাজর ১৩০ টাকা ও টমেটো ১২০ টাকা। সেঞ্চুরির কাছাকাছি দামে বিক্রি হচ্ছে (৮০ থেকে ৯০ টাকা) কচুরমুখি, কচুর লতি, করলা উচ্ছে ও করলা। চাল কুমড়া, লাউ বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা পিস। এছাড়াও প্রতি পিস ফুলকপি ও বাঁধা কপির দাম ৬০ টাকা। কাঁচা-কলা প্রতি হালি ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
গরিবের সবজি বলে খ্যাত ধুন্দলের কেজি ৬০ টাকা। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঢেঁড়স ও পটল। অর্থাৎ ৬০ টাকা কেজির নিচে কোনো সবজিই নেই বাজারে।
এক দশক ধরে পাঁচ সদস্য নিয়ে খুলনার বটিয়াঘাটা উপজেলার কিসমত ফুলতলা গ্রামে বসবাস করা সোহেল সেখ বলেন, এত কষ্টের দিন আগে কখনো পার করিনি। আয়ের তুলনায় ব্যয় বাড়ায় পরিবারের খরচ মেটাতে গত ঈদের পর থেকে এখন পর্যন্ত গরুর মাংস কিনতে পারিনি। মাছ কিনেছি মাত্র ৮ থেকে ১০ দিন। এত দিন আমার সংসার চলছে ডাল-সবজিতেই। এখন সবজির যেভাবে দাম বাড়ছে তাতে, সবজি খাওয়াও বন্ধ করে দিতে হবে। কীভাবে যে সংসার চালাবো সেই চিন্তা করছি। সরকার বেধে দেয়া দর উপেক্ষা করে আলু, পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে।
বাজারের এই পরিস্থিতির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বসুপাড়া এলাকার ক্রেতা সাজ্জাদ হোসেন। তিনি বলেন, ৬০ টাকা টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। এক সপ্তাহ আগেও ৪০ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া ঢেঁড়স ও পটল এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজিতে। বাজারে সব কিছুর দাম বাড়তি। খুব খারাপ অবস্থায় দিন পার করছি। আর কিছু দিন বাজারের অবস্থা এমন থাকলে বাজার করাই ছেড়ে দিতে হবে।
একই বাজারে আসা ইজিবাইক চালক আজগর আলী বলেন, ৬০ টাকার নিচে কোনো সবজি নেই। সবকিছুর যেভাবে ঊচ্চমূল্য তাতে এমনিতেই তো মাছ-মাংস কেনার অবস্থা নেই। এখন ভর্তা-ভাত, সবজি খেয়ে থাকব সেটারও কঠিন হয়ে পড়েছে। আমরা নিম্নআয়ের মানুষ কতটা বিপদে আছি বলে বোঝানোর ভাষা নেই।
সবজি বাজারের বিক্রেতা ফরহাদ হোসেন বলেন, আমরা পাইকারি বাজার থেকে যেমন দামে কিনে থাকি তার চেয়ে কিছু লাভে বিক্রি করি। আমরা দাম বাড়াই না। বাজারে সরবরাহ কম, তাছাড়া যে ভাবে প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে, তাতে সবজির মূল্য ১০০ টাকার নিচে আর পাওয়া যাবে না।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত