শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনা মহানগরীসহ জেলার বিভিন্ন বাজারে বিক্রি হচ্ছে ছোট বড় বিভিন্ন সাইজের পলিথিন শপিং ব্যাগ। আর এ ব্যাগে বাজার সয়লাব হলেও কারখানা মালিকরা রয়েছেন ধরা ছোঁয়ার বাইরে। খুলনা বড় বাজার, নিউ মার্কেটসহ বিভিন্ন এলাকায় ইতোপূর্বে অভিযান চালিয়ে গোয়েন্দা বাহিনী ও অন্যান্য প্রশাসনের সদস্যরা কয়েক লাখ টাকার পলিথিন জব্দ ও ব্যবসায়ীদের জরিমানা করেন। কিছুদিন ব্যাগ বিক্র বন্ধ থাকে। তবে তাদের ব্যাগ বিক্রি করা বন্ধ করা হলেও পলিথিনের শপিং ব্যাগ তৈরীর কারাখানা এখনও বন্ধ হয়নি। দৌলতপুর এলাকায় কয়েকটি প্লাষ্টিক কারখানার নেপথ্যে পলিথিন ব্যাগ তৈরীর অভিযোগও রয়েছে। কোন গোয়েন্দা সংস্থা এখনও সে সব কারখানার নিশানা খুঁজে পায়নি। নগরীরর বড় বাজারের বিক্রেতা এবং ক্রেতাদের সাথে আলাপ কালে পরিচয় গোপন রাখার শর্তে তারা এ সব তথ্য দেন।
তারা জানান, বড় বাজারের মাঝামাঝি এবং খালিশপুর শিল্প এলাকায় দু’টি ভিন্ন কারখানার অন্তরালে গভির রাতে চলে পলিথিনের শপিং ব্যাগ তৈরী। এ সব ব্যাগ বস্তা বন্দি হয়ে চলে যায় নগরীর বিভিন্ন ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠানসহ জেলার বাইরে। ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে যে পরিমাণ পলিথিনের শপিং ব্যাগ উদ্ধার হয়েছে তার দ্বিগুন রয়েছে ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের আন্ডার গ্রাউন্ডে। প্রাশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে গোপনে পলিথিন ব্যাগ বিক্রি অব্যাহত রয়েছে। যে কোন দোকান থেকে মোড়ক ছাড়া মাল ক্রয় করলেই পলিথিনের শপিং ব্যাগে দেয়া হয়। তাছাড়া বাজারের নানা রকমের মালামাল হরেক রকমের পলিথিনের মোড়কে বিক্রি হয়ে থাকে। একটি গোয়েন্দা সূত্র থেকে বলা হয়েছে, অনুমোদিত পলিথিন মোড়কের আদলে নিষিদ্ধ ঘোষিত পলিথিন দিয়েই তৈরীর চেষ্টা চলছে মোড়ক।
মহানগরী থেকে শুরু করে বিভিন্ন উপজেলা আর গ্রাম গঞ্জের দোকানে হর হামেশা বিক্রি হচ্ছে পরিবেশ বিধ্বংসী পলিথিনের শপিং ব্যাগ। প্রশাসনের সামনেই শপিং ব্যাগে মালামাল পরিবহন হলেও বন্ধের কোন উদ্যোগ নেই। বাংলাদেশ পরিবেশ ও মানবাধিকার বাস্তবায়ন সংস্থার বিভাগীয় সভাপতি আবু হেনা মুক্তি বলেন, পরিবেশ রক্ষায় সরকার বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে দীর্ঘদিন ধরে কার্যক্রম চালিয়ে গেলেও নেপথ্যে একটি চক্র পরিবেশ ধ্বংসের কাজে নিয়োজিত রয়েছে। তারা প্রকাশ্যে এবং গোপনে বাজারে পলিথিন ব্যাগ সাপ্লাই দিয়ে চলেছে। রাতে তৈরী পলিথিনের শপিং ব্যাগ ভোরে চলে যাচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাটে-বাজারের বিভিন্ন দোকানে। দেশের বিভিন্ন গোয়েন্দা বাহিনী আরও সক্রিয় হলে পলিথিন তৈরীর কারখানা জব্দ করে আইনের আওতায় আনা সম্ভব হবে। আর তখনই এ সব বন্ধ হবে। একটি মাছ কোম্পানী ও বেসরকারী হাসপাতালের নেপথ্যে ভেজাল ওষুধ তৈরীর কারখানা র্যাব-৬ উদ্ধার করে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থাও নেয়া হয়। তার পরেই ভেজাল ওষুধ তৈরী বন্ধ হয়েছে। একই ভাবে যদি ভিন্ন কারখানার নেপথ্যে পলিথিন তৈরীর কারখানা গড়ে ওঠে সেটাকেও আইনের আওতায় আনা উচিৎ।
খুলনা বড় বাজারে পলিথিনিনে শপিং ব্যাগ ক্রয়ের উদ্দেশ্যে আসা আব্দুল রাজ্জাক ও অনিল কুমার বলেন, পলিথিনের ব্যাগ তৈরী শুধু বড় বাজার বা খালিশপুর এলাকা নয়, সীমান্ত এলাকায়ও বেশ কয়েকটি পলিথিন কারখানা রয়েছে। তাছাড়া খোদ রাজধানীতেও পলিথিন ব্যাগ তৈরীর কারখানা আছে। সেখান থেকেও ট্রাক যোগে ব্যাগ চলে আসে।
একটি গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, পলিথিন কারখানা সনাক্ত করে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে। দ্রুত বিষয়টি সম্পর্কে আপনারা জানতে পারবেন।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত