
শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনা মহানগরী এবং সোনাডাঙ্গা থানা এলাকায় সড়ক-মহসড়ক উন্নয়নে জাতীয় সংসদ সদস্য সেখ সালাউদ্দিন জুয়েলের ভূমিকা এখন দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে। ২০১৮ সালে তিনি প্রথম নির্বাচিত হওয়ার পর অবহেলিত নগরীর সড়ক ও মহাসড়ক গুলোর উন্নয়নে মনোনিবেশ করেন। তিনি খুলনা সিটি কর্পোরেশন (কেসিসি) এর মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেককে সার্বিক সহযোগীতা এবং পরামর্শ দিয়ে শুরু করেন খুলনাকে তিলোত্তমা নগরী হিসেবে গড়ে তোলার কাজ। এলাকার ব্যাপক কর্মযজ্ঞ তারই প্রমাণ। নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসন, জরাজীর্ণ সড়ক মেরামত, বর্জ্য ব্যবস্থাপনার উন্নয়ন এ তিনটি মেগাপ্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ এখন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। বেশ কয়েকটি প্রকল্পের কাজ মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের অপেক্ষায় আছে। খুলনাবাসী মনে করেন প্রকল্পগুলো পূর্ণাঙ্গ বাস্তবায়ন হলে নগরবাসী একটি তিলোত্তমা নগরী হিসেবে শহরে বসবাসের সুবিধা পাবেন। বদলে যাবে নগরীর দৃশ্যপট।
২০১৮ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বঙ্গবন্ধুর ভ্রাতুষ্পুত্র সেখ সালাউদ্দিন জুয়েল সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর পরই তিনি নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের জন্য প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকা বরাদ্দের ব্যবস্থা করেন। পরবর্তীতে আরও ৫টি প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ নিয়ে আসেন। কাজগুলোর প্রায় ৯৮ শতাংশ শেষের পথে রয়েছে। দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেয়ায় ও লকডাউনের কারণে নগরীর উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়নে বিঘ্ন সৃষ্টি হয়। করোনার ধাক্কা কাটিয়ে চলমান প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ পুরোদমে চলে শেষ পর্যায়ে এসেছে। ৮২৩ কোটি ৭৯ লাখ টাকা ব্যয়ে জলাবদ্ধতা নিরসনে ‘নগরীর ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন’ প্রকল্প বাস্তবায়ন কাজ এখনও চলমান রয়েছে। প্রকল্পের আওতায় প্রধান সড়কের পাশে ও বিভিন্ন ওয়ার্ডে ২২০ দশমিক ১৬ কিলোমিটার ড্রেন সংস্কার কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। ৬০৭ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে ১৯৭ দশমিক ৪৫ কিলোমিটার সড়ক উন্নয়নের কাজও শেষ পর্যায়ে। এরমধ্যে রয়েছে ৭৮ কিলোমিটার সড়ক কার্পেটিং, ১৫১ কিলোমিটার সড়ক আরসিসি ঢালাই ও ৩৩ কিলোমিটার সড়ক সিসি ঢালাই দেয়ার কাজ।
খুলনা শিপইয়ার্ড সড়ক প্রশস্তকরণ ও উন্নয়ন কাজের সমাপ্তি ঘটবে আগমী ২০২৪ সালের জুন মাসের মধ্যে। সাতক্ষীরা সড়ক ও সিটি বাইপাস সড়কে সংযুক্ত করে সংযোগ সড়কসহ তিনটি লিংক রোড নির্মাণ কাজ শেষের পথে রয়েছে। কেডিএ নিউ মার্কেটের নিকট বিপনী বিতান নির্মাণ ২০২৪ জালের ডিসেম্বরের মধ্যে শেষ হবার কথা রয়েছে।
তার প্রচেষ্টায় যে সব সড়কের উন্নয়ন প্রকল্প চলমান রয়েছে তার মধ্যে এমএ বারী সড়ক হতে ময়ূর ব্রিজ পর্যন্ত সংযোগ সড়ক পুন:নির্মাণ যা শেষ হবে ২০২৪ সালের ডিসেম্বরে। শেখ রাসেল সিভিক সেন্টার নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে গত জুলাই মাসে। আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে কাজটি শেষ হবার কথা রয়েছে। খুলনা সিটি আউটার বাইপাস সড়ক নির্মাণ কাজ শেষ হবে ২০২৬ সালের জুন মাসে। স্বাধীনতা স্কয়ার নির্মাণ কাজ আগামী ২০২৫ সালের ডিসেম্বরে শেষ হচ্ছে।
তার দেয়া প্রকল্পের মধ্যে অনুমোদিত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে কেডিএ আন্তজেলা বাসটার্মিনালের অভ্যন্তরে অধিকতর উন্নয়ন, ময়ূরী -২ আবাসিক এলাকার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ, কেডিএ মাল্ট্রিপারপাস বিল্ডিং উর্ধমূখী সম্প্রসারণ। এসব প্রকল্পের কাজ আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে শেষ হবে।
নতুন পরিকল্পনাধীন প্রকল্পের মধ্যে আছে নিরালা-২ আবাসিক এলাকার জন্য ভূমি অধিগ্রহণ প্রকল্পগুলির সম্ভব্যতা যাচাই কাজ, হরিণটানা এলাকায় স্বল্প আয়ের লোকদের জন্য ফ্লাট নির্মাণ, বয়রা প্রধান সড়ক হতে ময়ূর নদী পর্যন্ত সড়ক প্রশস্তকরণ, শের-ই- বাংলা রোড হতে সিটি বাইপাস পর্যন্ত সংযোগ সড়ক এবং ময়ূর নদী থেকে কৈয়া বাজার পর্যন্ত সংযোগস সড়ক নির্মাণ, ময়ূর নদের পাশে পূর্ণঙ্গ পার্ক নির্মাণ, রূপসা নদীর পাশে সড়ক ও বিনোদন কেন্দ্র নির্মাণ।
নগরবাসী মনে করেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আবারও সেখ সালাউদ্দিন জুয়েল নির্বাচিত হলে অসমাপ্ত প্রকল্প গুলোর সমাপ্তিসহ নতুন সড়ক-মহাসড়কের উন্নয়ন শুরু হবে।