
শেখ আব্দুল হামিদ : প্রচন্ড দাবদহে খুলনার সকল সরকারি বেসরকারি হাসপাতালে প্রতিনিয়ত রোগীর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গরম সহ্য করতে না পেরে সোমবার সকালে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে হিটস্টোকে প্রতীমা দত্ত নামে এক শিক্ষিকার মৃত্যু হয়। গরমের তীব্রতায় শিশু এবং বৃদ্ধ অসুস্থের সংখ্যাই বেশী। রোগীর ভিড়ে কোন চিকিৎসা কেন্দ্রে তিল ধারণের ঠাঁই নেই। অসয্য গরমে বারান্দায় শুয়ে হাঁসফাঁস করছে রোগী। পাশেই বসে রয়েছন স্বজনেরা। কিছুই করার নেই।
খুলনার সর্বত্রই চলছে তাপদাহ। ঘর থেকে বের হলেই যেন গায়ের চামড়া পুড়ে যায়। ঈদের পূর্ব মুহূর্তে গরমের তীব্রতা উপেক্ষা করেই শ্রমজীবী মানুষকে ঘর থেকে বের হতে হচ্ছে কর্মের তাগিদে। বৃদ্ধ আর শিশুদের মধ্যে দেখা দিচ্ছে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া, ডিহাইড্রেশন, জ¦র, চিকেন পক্সসহ বিভিন্ন রোগ। গরমের এই ভয়াবহতা সহ্য করতে না পেরে গত রবিবার রাতে নগরীর খালিশপুর হাউজিং এলাকার শিক্ষিকা প্রতীমা দত্ত অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরিবারের লোকজন দ্রুত তাকে খুলনা সিটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সোমবার সকাল ৭-৪০ মিনিটের সময় তার মৃত্যু হয়। পরিবারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, রাতে বিদ্যূৎ না থাকায় গরমে প্রতীমা দত্ত ছটফট করতে থাকেন। তার একটি ছেলে ও একটি মেয়ে রয়েছে। নগরীর মান্নান চটপটির গলিতে তার বাড়ি।
খুলনা সদর হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিটি মেডিকেল কলেজ, খুলনা শিশু হাসপাতাল, গাজি মেডিকেল কলেজসহ বিভিন্ন সরকারি বেসরকারি হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, রোগীর অসহনিয় যন্ত্রনা। শিশু হাসপাতালে বহি:বিভাগে প্রতিদিন ৫শ থেকে ৬শ রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করছে। তাদের মধ্যে বহু রোগীকে ভর্তি করার প্রয়োজন হলেও শয্যা না থাকায় চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠিয়ে দেয়া হয়। একই ভাবে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহি:বিভাগে প্রতিদিন দু থেকে তিন হাজর রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করেছেন। হাসপাতালের কোথাও কোন শয্যা খালি না থাকায় বহু রোগীকে দেখা গেছে বারান্দায় গাদগাদি হয়ে শুয়ে থাকতে। গরমে তাদের গা যেন পুড়ে যাচ্ছে। খুলনার শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত হাসপাতালেও রোগীর ভিড়ে ঠাসাঠাসি ভাবে চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। একই অবস্থা সিটি মেডিকেল, সার্জিক্যালসহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা: রবিউল ইসলাম বলেন, অতিরিক্ত গরমের কারণে রোগীর সংখ্যা পূর্বের তুলনায় দ্বিগুন বেড়েছে। হাসপাতালের বহি:বিভাগে প্রতিদিন দু’থেকে তিন হাজার রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। তিনি বলেন, রোগীদের মধ্যে শিশু এবং বৃদ্ধদের সংখ্যাই বেশী। এসময়ে সকলকে তাদের প্রতি যত্নবান হতে হবে। অযথা ঘরের বাইরে না যাওয়াই ভালো। শিশুদের ক্ষেত্রে বাড়তি যত্ন নিতে হবে। তাদেরকে বিশুদ্ধ পানি এবং ফল জাতীয় খাবার বেশী দিতে হবে।

