
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি ও স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস খুলনায় যথাযোগ্য মর্যাদা এবং ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে পালিত হয়। সূর্যোদয়ের সাথে সাথে সকল সরকারি, আধাসরকারি, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও বেসরকারি ভবনে জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার মধ্য দিয়ে দিবসের কর্মসূচি শুরু হয়।
সকাল আটটায় স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বাংলাদেশ বেতার খুলনা কেন্দ্রে অবস্থিত জাতির পিতার ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ১৫ আগস্টে শাহাদৎ বরণকারী জাতির পিতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংগঠণ জেলা ও মহানগর মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড, খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেকের পক্ষে প্যানেল মেয়র আলী আকবর টিপু, খুলনা-৬ আসনের সংসদ সদস্য মোঃ আক্তারুজ্জামান বাবু, বিভাগীয় কমিশনার মোঃ ইসমাইল হোসেন, কেএমপির পুলিশ কমিশনার মোঃ মাসুদুর রহমান ভূঞা, রেঞ্জ ডিআইজি ড. খঃ মহিদ উদ্দিন, জেলা প্রশাসক মোঃ মনিরুজ্জামান তালুকদার, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহবুব হাসান, জেলা পরিষদ, মহানগর ও জেলা আওয়ামী লীগ এবং অংঙ্গসংগঠনসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক-সাংস্কৃতিক ও নানা পেশাজীবী সংগঠণসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরে খুলনা জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে সকালে জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষ থেকে অনলাইনে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনলাইনে প্রধান অতিথি ছিলেন খুলনা সিটি কর্পোরেশনের মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক। জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে খুলনা আঞ্চলিক তথ্য অফিসে উপপ্রধান তথ্য অফিসার জিনাত আরা আহমেদের সভাপতিত্বে বঙ্গবন্ধুর জীবন ও কর্ম নিয়ে আলোচনা সভা এবং দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
গল্লামারী শেখ রাসেল শিশু প্রশিক্ষণ ও পুনর্বাসন কেন্দ্রে ক্যান্সার, কিডনি, লিভার সিরোসিসসহ দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্তদের মাঝে এককালীন অনুদানের চেক ও স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার চেক বিতরণ করা হয়। এছাড়া জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে সকল সরকারি-বেসরকারি অফিস, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভার্চুয়াল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে দিবসটি উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, কবিতা পাঠ, রচনা ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা, চিত্র প্রদর্শনী, হামদ-নাত প্রতিযোগিতা এবং দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
কেসিসি’র উদ্যোগে জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সামাজিক দূরত্ব নিশ্চিত এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে বাদ জোহর টাউন জামে মসজিদ, কালেক্টরেট জামে মসজিদ, পুলিশ লাইন জামে মসজিদসহ নগরীর বিভিন্ন মসজিদে দোয়া ও মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বিভিন্ন মন্দির, গীর্জা, প্যাগোডা ও অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে বিশেষ প্রার্থনা অনুষ্ঠিত হয়।
জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গ্রোথসেন্টারসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে শোক দিবসের পোস্টার স্থাপন এবং এলইডি বোর্ডের মাধ্যমে জাতীয় শোক বিষয়ক প্রচারের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে এবং স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণ করে কোরআন তেলাওয়াত, হামদ-নাত, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে। দিবসটি উপলক্ষ্যে মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তর ও সমাজসেবা অধিদপ্তর তাদের অধীন জাতীয় প্রতিবন্ধী উন্নয়ন ফাউন্ডেশন, সরকারি শিশু পরিবারসহ অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কোরআন তেলাওয়াত, আলোচনা সভা, চিত্রাংকন প্রতিযোগিতা, হামদ-নাত ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে।
জাতীয় শোক দিবসে স্থানীয় সংবাদপত্রগুলো বিশেষ সংখ্যা বা ক্রোড়পত্র প্রকাশ করে এবং বাংলাদেশ বেতারের খুলনা কেন্দ্র বিশেষ অনুষ্ঠানমালা প্রচার করে। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান, রাজনৈতিক-সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন দিবসটি উপলক্ষ্যে পৃথক পৃথক কর্মসূচি পালন করে। খুলনার উপজেলাগুলোতেও অনুরূপ কর্মসুচি পালিত হয়।
\ কেসিসি \
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের উদ্যোগে যথাযথ মর্যাদায় রোববার স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান-এর ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস ২০২১ পালিত হয়েছে। দিবসটি পালন উপলক্ষে নগর ভবনে পবিত্র কোরআনখানি, বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে মাল্যদান, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তৃতা করেন (জুম এ্যাপের মাধ্যমে) সিটি মেয়র তালুকদার আব্দুল খালেক।
প্রধান অতিথির বক্তৃতায় সিটি মেয়র বলেন, ১৫ আগস্ট বাঙালী জাতির জন্য অত্যন্ত শোকাবহ একটি দিন। স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশের মহান স্থপতি, বাঙালি জাতির পিতা, স্বাধীনতার ঘোষক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান’কে ১৯৭৫ সালের এই দিনে স্বাধীনতা যুদ্ধের পরাজিত শক্তির ষড়যন্ত্রে নির্মমভাবে স্বপরিবারে হত্যা করা হয়।
কেসিসি’র ক্রীড়া ও সংস্কৃতি স্থায়ী কমিটির সভাপতি কাউন্সিলর এস এম মোজাফফর রশিদী রেজা’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন মেয়র প্যানেলের সদস্য মো: আলী আকবর টিপু ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) মো: আজমুল হক। অন্যান্যের মধ্যে কাউন্সিলর মো: আব্দুর রাজ্জাক, মো: সাইফুল ইসলাম, শেখ মোহাম্মদ আলী, শেখ শামসুদ্দিন আহম্মেদ প্রিন্স, মো: ডালিম হাওলাদার, মো: মাহফুজুর রহমান লিটন, মো: মনিরুজ্জামান, মো: আনিছুর রহমান বিশ্বাষ, শেখ হাফিজুর রহমান হাফিজ, ইমাম হাসান চৌধুরী ময়না, জেড এ মাহমুদ ডন, মো: আরিফ হোসেন মিঠু, সংরক্ষিত আসনের কাউন্সিলর মনিরা খাতুন, সাহিদা বেগম, আমেনা হালিম বেবী, মাহমুদা বেগম, রেক্সনা কালাম লিলি, প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো: মনোয়ার হোসেন, প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: একেএম আব্দুল্লাহ, বাজেট কাম একাউন্টস অফিসার মো: হাফিজুর রহমান, নির্বাহী প্রকৌশলী মশিউজ্জামান খান, প্রধান পরিকল্পনা কর্মকর্তা আবির উল জব্বার, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা: স্বপন কুমার হালদার, ভেটেরিনারী অফিসার মো: রেজাউল করিম, নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নাজিবুল আলম, শিক্ষা ও সাংস্কৃতিক কর্মকর্তা এসকেএম তাছাদুজ্জামানসহ সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও কেসিসি পরিচালত মক্তবসমূহের শিক্ষকবৃন্দ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।
\ খুলনা প্রেসক্লাব \
যথাযোগ্য মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্য্যরে মধ্য দিয়ে স্বাধীনতার মহান স্থপতি, হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙ্গালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৬তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস পালিত হচ্ছে। দিবসটি উপলক্ষে রবিবার সকালে খুলনা প্রেসক্লাবের পক্ষ থেকে জাতির পিতার স্মৃতি ভাস্কর্যে পুষ্পমাল্য অর্পণ, আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়।
ক্লাবের আয়োজনে তিনদিনব্যাপী কর্মসূচির দ্বিতীয় দিনেও বঙ্গবন্ধু’র জীবন, কর্ম ও শোকাবহ পনেরই আগস্টের ওপর খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউটের রাষ্ট্রপতি স্বর্ণপদকপ্রাপ্ত প্রাক্তন ছাত্রী চিত্রশিল্পী হিমা আক্তার হিরামনি’র ‘একক চিত্র প্রদর্শনী’ চলছে।
খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবীর বালু মিলনায়তনে দুপুরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থেকে জাতির পিতার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে বক্তৃতা করেন প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী।
খুলনা প্রেসক্লাবের সভাপতি এস এম জাহিদ হোসেনের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাসান আহমেদ মোল্লার সঞ্চালনায় আলোচনা সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন বিএফইউজে’র সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, বিএফইউজে’র সাবেক মহাসচিব ওমর ফারুক, নাগরিক টিভির হেড অব নিউজ দীপ আজাদ, বাংলা একাডেমি পুরস্কারপ্রাপ্ত কবি মারুফুল ইসলাম, খুলনা প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মকবুল হোসেন মিন্টু, ক্লাবের সাবেক সভাপতি শেখ আবু হাসান, এস এম নজরুল ইসলাম ও ফারুক আহমেদ, খুলনা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি ও ক্লাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি মোঃ মুন্সি মাহবুব আলম সোহাগ, ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মামুন রেজা প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে কবি মারুফুল ইসলাম জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু’র উপর রচিত তার নিজের একটি কবিতা আবৃত্তি করেন। এছাড়া শিল্পী হিসেবে অনুভূতি ব্যক্ত করেন খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী চিত্রশিল্পী হিমা আক্তার হিরামনি। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় খুলনা প্রেসক্লাবের সদস্যসহ অন্যান্য সাংবাদিক ও অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে দিবসের কর্মসূচির শুরুতে ক্লাবের নেতৃবৃন্দ ক্লাব চত্বরে জাতির পিতার স্মৃতি ভাস্কর্যে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। আলোচনা সভার শুরুতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানসহ ১৫ আগস্ট শাহাদত বরণকারী সকলের আত্মার মাগফেরাত কামনা করে দাঁড়িয়ে ১ মিনিট নিরবতা পালন করা হয়। পরে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।