
জন্মভূমি রিপোর্ট
তীব্র তাপদাহে পুড়ছে খুলনা। রোববার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে খুলনায় মৌসুমের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
তাপদাহে খুলনায় পুড়ছে জনপদ, মাঠ-ঘাট ও শষ্যের ক্ষেত। কোথাও স্বস্তির বাতাস নেই। সর্বত্র গরম আর গরম, কখনও প্রচÐ, আবার কখনও ভ্যাপসা গরম। গরমের তীব্রতায় ছোটবড় সবার হাঁসফাঁস অবস্থা। বাসা থেকে বের হওয়ার দুই এক মিনিটের মধ্যেই রোদের খরতাপে অসহনীয় অবস্থায় পড়ছেন তারা। প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না অনেকে। বৈশাখের তাপদাহের তাÐব চলছে জনপদে, সূর্যের প্রখরতা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে।
সকালে সূর্য উঠার সঙ্গে সঙ্গে তাপমাত্রা বাড়ছে ক্রমাগত। তপ্ত দুপুরে রাস্তায় বের হওয়া কষ্টকর হয়ে পড়েছে। প্রখর তাপ্রবাহে সবুজ গাছপালাও যেন তপ্ত নিশ্বাস ছড়াছে।
গরমের তীব্রতায় মানুষসহ পশু-পাখিরাও হাঁসফাঁস করছে। ঘরে-বাইরে কোথাও এতটুকু যেন স্বস্তি নেই। রমজান মাসে প্রকৃতি যেন রুদ্রমূর্তি ধারণ করেছে। অব্যাহত তাপপ্রবাহে সাধারণ মানুষের নাভিশ্বাস উঠেছে। একটু বৃষ্টি ও শীতল হাওয়ার পরশ পেতে ব্যাকুল হয়ে উঠেছে মানুষ। অসহনীয় রোদ, আর গরমে স্থবিরতা নেমে এসেছে কর্মজীবনেও। বাসা, অফিস কিংবা ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সবখানেই যেন গরম আর গরম। গরমের তীব্রতা থেকে রক্ষা পেতে ঈদের কেনাকাটা করতে অনেকে সন্ধ্যার পর মার্কেটে ছুটবেন।
চারিদিকে কেবল গরম আর গরম। যে গরমে কেবলমাত্র জনজীবনেই অস্থিরতা আনছে না, নানান ধরনের গরমজনিত এবং পানি বাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়ছে।
দীর্ঘ খড়ার কারণে ভ‚গর্ভস্থ পানির স্তর (লেয়ার) নিচে নেমে যাওয়ায় মহানগরীর অনেক জায়গায় নলক‚পে পানি উঠছে না। একই অবস্থা জেলার কয়রা, বটিয়াঘাটা, দাকোপ, পাইকগাছা ও রূপসাসহ উপক‚লীয় এলাকায়। এসব এলাকায় এক কলস খাবার পানি সংগ্রহের জন্য নারী ও শিশুদের বহুদূর পথ হেঁটে ছুটতে হচ্ছে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রামে। তবে পানি সঙ্কটে সবচেয়ে বিপাকে পরেছেন দাকোপ ও বটিয়াঘাটার তরমুজ চাষিরা।
রোববার (২৪ এপ্রিল) বিকেল খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের সিনিয়র আবহাওয়াবিদ মো. আমিরুল আজাদ বলেন, রোববার খুলনার তাপমাত্রা ৩৮ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। যা এ বছরে খুলনায় এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। খুলনার ওপর দিয়ে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। আরও দুই তিন দিন এ তাপপ্রবাহ থাকবে।
এদিকে তীব্র দাবদাহে প্রায় জনশূন্য হয়ে পড়েছে মহানগরীর অধিকাংশ সড়ক। অন্যান্য দিন সড়কে যানবাহন ও মানুষের ভিড় থাকলেও রোববার সেটি নেই। গরমে ঘরে অবস্থান করছেন তারা।
সোহেল আহমেদ নামের এক যুবক বলেন, কিছু প্রয়োজনীয় ওষুধ কেনার জন্য হেরাজ মার্কেট এলাকায় গিয়েছিলাম। গরমে টিকতে না পেরে চলে এসেছি। দাবদাহের কারণে ঈদ বাজারেও ক্রেতার সমাগম খুবই কম।
\ সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায় \
খরতাপে পুড়ছে চুয়াডাঙ্গা। বেলা গড়াতেই প্রখর তাপ নিয়ে রোদ ছড়াচ্ছে সূর্য। কড়া রোদ আর গরমে বিপর্যস্ত জনজীবন। রবিবার (২৪ এপ্রিল) বিকালে চুয়াডাঙ্গায় ৪১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে। যা রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা। এই নিয়ে টানা দুই দিন জেলাটিতে দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা বিরাজ করছে।
চুয়াডাঙ্গার আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিস থেকে জানানো হয়েছে, এটিই রোববার দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা এবং যা চলতি মৌসুমে চুয়াডাঙ্গার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা।
শনিবারও দেশের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল এই জেলায়। শনিবার ৩৯ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছিল।
চুয়াডাঙ্গার আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সামাদুল হক জানান, গত তিন দিন ধরে চুয়াডাঙ্গার ওপর দিয়ে মাঝারি থেকে তীব্র ধরনের তাপদাহ বয়ে যাচ্ছে। দিনে দিনে তাপমাত্রা বাড়ছে। আরও কিছুদিন এমন পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে।