
চাল উৎপাদন ১১ লাখ মেট্রিক টনের বেশী
হারুন-অর-রশীদ : খুলনা কৃষি অঞ্চলে এ বছর বোরোর বাম্পার ফলনে কৃষকের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে। সরকার কৃষকদের প্রণোদনা দেয়ায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে উৎপাদন বেশী হয়েছে। খাদ্য উৎপাদনে বোরো ধান বিশেষ ভূমিকা রাখছে। নিবিড় বার্ষিক ফসল উৎপাদন কর্মসূচির ২০২২-২৩ এর আওতায় রবি মৌসুমে খুলনা অঞ্চলের জেলায় ২ লাখ ৫৫ হাজার ৫১০ হেক্টর জমি বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। আবাদকরা হয়েছে ২ লাখ ৫৫ হাজার ৪০৯ হেক্টর। এখানে বাগেরহাটের ৫টি উপজেলায় অতিরিক্ত লবণাক্ততার করণে ১০১ হেক্টর জমির ধানের ক্ষতি হয়েছে। ১০ লাখ ৮৮ হাজার ১১৪ মেট্্িরকটন চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। উৎপাদন হয়েছে ১১ লাখ ২৯ হাজার ৪০৯ মেট্রিক টন। বেশী উৎপাদন হয়েছে ৪১ হাজার ২৯৫ মেট্রিক টন। এই অঞ্চলে ব্রিধান-২৮, ৬৭,৮১,৮৮ এবং বঙ্গবন্ধু ধান (ব্রিধান-১০০) আবাদ হয়েছে। খুলনা কৃষি অঞ্চলে হাইব্রিড ও উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান আবাদ করা হয়েছে। প্রতি হেক্টরে গড়ে চাল উৎপাদন হয়েছে ৪ মেট্্িরকটন ৪২কেজি। নতুন জাত,কলা কৌশল ও প্রযুক্তি উদ্ভাবন, সেচ ও সার নিশ্চিত করণ, ভর্তুক্তি প্রদান, পোকা মাকড় দমন এবং আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে বলে সূত্র জানান।
সূত্র জানিয়েছেন, মৃত্তিকা সম্পাদ উন্নয়ন ইনস্টিটিউট’র জিকেবিএসপি প্রকল্প থেকে সাতক্ষীরার তালা, দেবহাটা, খুলনার ডুমুরিয়া, বটিয়াঘাটা, বাগেরহাট সদর, ফকিরহাট, কচুয়া, পিরোজপুরের নাজিরপুর এবং গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া ও কাশিয়ানি উপজেলায় ৬০বিঘা জমিতে ৬০টি প্রদর্শনী প্লট করা হয়েছে। হাইব্রিড জাতের ধানের আবাদ করা হয়েছে। প্রতি বিঘায় ৩৫মন ফলন হয়েছে। বাম্পার ফলন হওয়াতে কৃষকের মুখে ফুটছে হাসি। তাদের স্বপ্ন পূরণ হয়েছে।
খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা ও নড়াইল জেলা নিয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চল। এই অঞ্চলের মধ্যে খুলনা জেলায় জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬৩৭৯০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ওই পরিমান জমি এবং চাল উৎপাদন হয়েছে ২৮৮৯২০ মেট্রিক টন। বাগেরহাট জেলায় জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৬২১৬৯ হেক্টর। আবাদ করা হয়েছে ৬২০৬৮ হেক্টর। চাল উপাদন হয়েছে ২৮৪৯৭৯ মেট্রিক টন। সাতক্ষীরা জেলায় জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭৯৫২৬ হেক্টর। আবাদ করা হয়েছে ৭৯৫২৬ হেক্টর। চাল উৎপাদন করা হয়েছে ৩৩৩৩২৫ মেট্রিক টন এবং নড়াইল জেলায় জমি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫০০২৫ হেক্টর। শতভাগ আবাদ করা হয়েছে। চাল উৎপাদন করা হয়েছে ২২২১৮৫ মেট্রিক টন।
গোপালগঞ্জ-খুলনা- বাগেরহাট -সাতক্ষীরা-পিরোজপুর জিকেবিএসপি প্রকল্প পরিচালক অমরেন্দ্রনাথ বিশ^াস বলেন, হাইব্রিড জাতের ধান আবাদ করে কৃষক লাভবান হচ্ছেন। ভালো দামে বিক্রি করা হচ্ছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও বিক্রি করছেন। কৃষক অর্থনৈতিক ভাবে ঘুরে দাড়িয়েছেন। প্রধান মন্ত্রীর নির্দেশনা অনুযায়ী কোন জমি পতিত ফেলে না রেখে আবাদ করা হয়েছে। সে মোতাবেক কৃষকদের ফসল ফলাতে উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। কৃষকদের কীটনাশক ও সার বিনামূল্যে এই প্রকল্প থেকে দেয়া হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের খুলনা অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক মোহন কুমার ঘোষ বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে বাম্পার ফলন হয়েছে। বোরো ধানে খাদ্য উৎপাদনে বড় ভূমিকা রাখে। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনা মতে এক ইঞ্চি জমিও পতিত রাখা হয়নি। কৃষক সরকারী প্রণোদনা পেয়েছেন। লবণাক্ততার কারণে বাগেরহাটে ১০১ হেক্টর জমির ধান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।