শেখ আব্দুল হামিদ : খুলনা বিভাগে ডেঙ্গু ভয়াবহ আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। চলতি মাসে সাত দিনে বিভাগের দশ জেলা ও দু’টি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শনাক্ত হয়েছে ১ হাজার ৫৩৫ জন ডেঙ্গু রোগী। আর ৭ দিনে মৃত্যু হয়েছে ৮ জনের। এনিয়ে গত ৮ মাস ৭ দিনে মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ৭ হাজার ৯৬০ জন। আর এ সময়ে মোট মৃত্যু হয়েছে ২৭ জনের। চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন মোট ৭ হাজার ৩৯ জন। উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয় ১০০ জনকে।
গত ২৪ ঘন্টায় বিভাগে সর্বোচ্চ শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ২৭৮ জন। মৃত্যু হয়েছে ২ জনের। খুলনা গাজী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আবিদা সুলতানা (৫২) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়। তার স্বামীর নাম নুরুল ইসলাম। মৃত অপরজনের বাড়ি কুষ্টিয়া জেলায়।
চলতি মাসের প্রথম দিনে শনাক্ত হয় ১৩৬ জন, মৃত্যু হয় সাতক্ষীরায় ১ জন, যশোর ১ জন ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জনের। দ্বিতীয় দিনে ১৭৯ জন, এদিনে কোন মৃত্যু হয়নি। তৃতীয় দিনে ২৬৩ জন শনাক্ত হয়, মৃত্যু হয় খুমেক হাসপাতালে ১ জনের। চতুর্থ দিনে শনাক্ত ২৬৯ জন, মৃত্যু যশোর জেলায় ১ জনের। পঞ্চম দিনে ২২৮ জন শনাক্ত হয়, এসময়ে মৃত্যু হয় খুলনা মেডিকেলে ১ জনের। ৬ষ্ট দিনে শনাক্ত ১৮২ জন, এ দিনে কারো মৃত্যু হয়নি। গতকাল সপ্তম দিনে শনাক্ত হয় ২৭৮ জন। মৃত্যু হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১ জন ও কুষ্টিয়া জেলায় ১ জনের।
খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে গত ২৪ ঘন্টায় ডেঙ্গু শনাক্ত হয় ৫০ জনের। এসময় মৃত্যু হয় ১ জনের। এনিয়ে খুলনায় মোট মৃত্যু হলো ১১ জনের। মৃতদের মধ্যে ২ জন খুলনা জেলায় এবং বাকী ৯ জনের মৃত্যু হয় খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গত সাত দিনে খুলনায় মৃত্যু হয় ৪ জনের। খুলনায় মোট শনাক্ত রোগীর সংখ্যা ১ হাজার ৪৩৫ জন। ছড়পত্র নিয়ে ঘরে ফিরেছেন মোট ১ হাজার ২৫৬ জন। চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি আছেন মোট ১৬৩ জন। উন্নত চিকিৎসার জন্য রেফার্ড করা হয় ৫ জনকে।
খুলনা বিভাগীয় পরিচালক (স্বাস্থ্য) ডা: মো: মনজুরুল মুরশিদ দৈনিক জন্মভূমিকে বলেন, বিভাগে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। প্রতি ঘন্টায় আক্রান্ত হচ্ছে প্রায় ১১ জন। তবে জেলার মধ্যে সবচেয়ে বেশী আক্রান্তের সংখ্যা মাগুরা, খুলনা এবং যশোর জেলায়। গত আগষ্ট মাসের চেয়ে সেপ্টেম্বর মাসে ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধির সংখ্যা দ্বিগুনেরও বেশী। মৃত্যুর সংখ্যাও বেড়েছে। তিনি বলেন, এ রোগ হলে প্রথমে জ্বর এবং পরে রোগীর ব্যাপক ভাবে পানি শুন্যতা দেখা দেয়। আগে ডেঙ্গু রোগ হলে ব্লিডিং বেশী দেখা দিত। সে ধরণ পাল্টিয়েছে। সেরোটাইপ পরিবর্তনের ফলে উপসর্গেরও পরিবর্তন ঘটে। তিনি বলেন, চিকিৎসার জন্য মেডিসিনের পাশাপাশি খাবার স্লাইনসহ ইন্টার ভেইন (আইভি) স্লাইন দেয়া হয়। ডেঙ্গু প্রতিরোধে সচেতনতার বিকল্প নেই।