
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনা বিভাগের দুটি সরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে প্রায় ১ কোটি ২৬ লাখ টাকা অডিট আপত্তি এনেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ। ২০২১-২২ অর্থবছরে এসএফআই ভূক্ত প্রতিষ্ঠান দুটির অডিট আপত্তির তালিকা মোতাবেক এসব তথ্য জানা গেছে। তালিকায় উল্লেখ করা হয়েছে, মন্ত্রণালয়ের বেধে দেয়া দামে মেডিকেল যন্ত্রপাতি না কিনে বেশি দামে কেনাসহ নানা অনিয়ম করা হয়েছে। তবে এ অনিয়মকে দুর্নীতি বলতে নারাজ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক। আর সুজন বলছে, বিভিন্ন সময়ে দুর্নীতিকে অনিয়ম বলে পার পেয়ে যাচ্ছেন অসাধু কর্মকর্তারা।
সূত্রমতে, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রয়োজনের অতিরিক্ত এমএসআর সামগ্রী ক্রয় করে মুজুদ করায় নিয়মিত ব্যয় ৩০ লাখ ৮ হাজার টাকা। পিপিআর ২০০৮ লঙ্ঘনপূর্বক বাজার দর অপেক্ষা অধিক মূল্যে এমএসআর (চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি) সামগ্রী ক্রয় করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি ১৮ লাখ টাকা। সেন্ট্রালস্টোর হতে গ্রহণকৃত এক্্র-রে, সিটি স্কান, এমআরআই ফ্লিম লেজারে হিসাবভূক্ত না করায় অনিয়িমিত ব্যয় ৩২ লাখ ৫৪ হাজার টাকা।
একই ভাবে সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বাজার দর অপেক্ষা অধিক মূল্যে এমএসআর (চিকিৎসা ও শল্য চিকিৎসা সরঞ্জামাদি) ক্রয় করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি ৭ লক্ষ ১৬ হাজার ৭৫০ টাকা। সুনির্দিষ্ট বাহির্ভূত এমএসআর সামগ্রী (ওষুধ) ক্রয় করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি ৭ লাখ ১০ হাজার টাকা। কোয়ারেন্টাইন ব্যয়ের খাত থেকে চিকিৎসকদের দৈনিক কর্মকালীন ভাতা অতিরিক্ত পরিশোধ করায় সরকারের আর্থিক ক্ষতি ২১ লাখ ৭৮ হাজার টাকা।
এতসব অভিযোগ মন্ত্রণালয় থেকে আনা হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছেন, বিষয়টি স্বাভাবিক। খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডা. রবিউল হাসান বলেন, অডিট রিপোর্ট দিতে হয় তাই তারা দিয়েছে। তাদের এটাই কাজ। তারা অডিটে এসেছেন কিছু অনিয়ম দেখাতে হয় তাই দেখিয়েছেন। অডিটের রিপোর্ট দিলেই তারা সন্তুষ্ট হয়ে যাবেন। তিনি বলেন, আমাদের খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে কোন ধরণের আর্থিক অনিয়ম হবার সুযোগ নেই। তাই অনিয়মের প্রশ্লই ওঠে না।
বিষয়টি নিয়ে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) এর সভাপতি কুদরত-ই-খুদা বলছেন, শুধু প্রতিবেদনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে এর বিরুদ্ধে সরকারের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। এ গুলোতো আসলেই দুর্নীতি। সরকারের উচিত এর বিরুদ্ধে কঠিন পদক্ষেপ নেয়া। সরকার যথাযথ ব্যবস্থা নিলে পরবর্তীতে আর কোন দুর্নীতি হবে না বলে তিনি জানান।
অপরদিকে নাগরিক নেতারা বলছেন, প্রতি বছর অডিটে অনিয়ম ধরা পড়লেও মন্ত্রণালয়কে কোনভাবে ম্যানেজ করে পার পেয়ে যাচ্ছে এ সমস্ত কর্মকর্তারা।