
জন্মভূমি রিপোর্ট : খুলনা বিভাগে প্রতিদিনই বাড়ছে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা। এ কারণে সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালেও রোগীর ঠাঁই হচ্ছে না। হাসপাতালের করিডোর, বারান্দা, ফ্লোর, সিঁড়ির নিচেও ডেঙ্গু রোগীদের অবস্থান করতে হচ্ছে। গত ২৪ ঘন্টায় বিভাগের ১০ জেলায় ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়েছে ১৬৫ জন। এ সংখ্যা পূর্বের দিন ছিল ১৫২ জন। শনাক্তের দিক থেকে খুলনা ও মাগুরা রয়েছে শীর্ষে। গত ২৪ ঘন্টায় খুলনায় আক্রান্ত হয়েছে ৩০ জন। মাগুরা জেলায়ও একই সময়ে ৩০ জনের দেহে ডেঙ্গু শনাক্ত হয়। এখন শহর থেকে শুরু করে প্রতিটি গ্রাম-গঞ্জেই মানুষের জ¦র, সর্দি, কাশি, মাথা ব্যথা, গায়ে ব্যথা লেগেই আছে। অথচ প্রতিকারের বিষয় নিয়ে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মাঝে তেমন সাড়া এখনও দেখা যাচ্ছে না।
চিকিৎসকরা বলছেন, একমাত্র এডিস মশার কামড়েই ডেঙ্গু জ¦র হয়। আর এই ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশা সবাই চেনে। যার কারণে এর উৎপত্তি স্থল ধ্বংস করার মাধ্যমেই একমাত্র এর থেকে প্রতিকার পাওয়া সম্ভব। মূলত: এটি ঘরের ভিতর জমে থাকা পানিতে জন্ম নেয়। যেমন-ফুলের টব, ফ্রিজের পানি, কমোডের জমা পানি, ডাবের খোসা প্রভৃতি। এছাড়া নির্মাণাধীণ ভবন, ভবনের বেজমেন্টে ৪৮-৭২ ঘন্টা পানি জমে থাকলেই মশা জন্মে। যার কারণে পানি জমতে দেয়া যাবে না। সব সময় ঘরের ভিতর ও বাহির পরিষ্কার রাখতে হবে। ঘরের ভিতর পরিষ্কার রাখার দায়িত্ব ঘরের মালিকের আর বাহির পরিস্কার রাখার দায়িত্ব সিটি কর্পোরেশনের। তাই সমন্বিতভাবে এটা মোকাবিলা করতে হবে। একটি সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে।
প্রতিকার হিসেবে তারা বলছেন, ডেঙ্গু হলে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্যকোন ওষুধ খাওয়া যাবে না। জ¦রের সঙ্গো হাত-পা ব্যথা, ব্যাক পেইন হলে শুরুতেই ডেঙ্গু পরীক্ষা করাতে হবে। পরীক্ষা করে শনাক্ত করাতে পারলে চিকিৎসা নিয়ে বড় জটিলতা থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব বলে জানান চিকিৎসকরা।
গত ২৪ ঘন্টায় খুলনা জেলায় শনাক্ত হয়েছে ১১ জন আর খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ১৯ জন। বাগেরহাট ২১ জন, সাতক্ষীরা জেলায় ৫ জন আর মেডিকেলে ৯ জন, যশোর ১৫ জন, ঝিনাইদহ ১৮ জন, মাগুরা ৩০ জন, নড়াইল ১৩ জন, কুষ্টিয়া ১৩ জন, চুয়াডাঙ্গা ৫ জন এবং মেহেরপুর ৬ জন। চলতি বছর মোট আক্রান্ত হয়েছে ৩ হাজার ২২৫ জন, মৃত্যু হয়েছে ৭ জনের। মোট ছাড়পত্র নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন ২ হাজার ৬৩৬ জন। বর্তমানে হাপাতালে ভর্তি আছে ৫২৩ জন আর রেফার্ড করা হয়েছে ৫৯ জনকে।