জন্মভূমি রিপোর্ট
খুলনা বড় বাজারের ডেলটাঘাট সংলগ্ন ভৈরব স্ট্যান্ড রোডে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে। বুধবার দুপুর ১২টায় এ অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। ছয়টি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান পুড়ে যায়। আগুন নিয়ন্ত্রণে স্থানীয় জনতা ও ফায়ার সার্ভিস এবং সিভিল ডিফেন্স’র সদস্যরা সোয়া এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
প্রত্যক্ষদর্শীর জানিয়েছেন, দুপুর ১২টায় নাহিদ আমব্রেলা নামক একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের গুদাম থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এতে সুব্রত কংস বনিকের মালিকানাধীন কংসস বনিক, নির্মল চন্দ্র কংস বনিকের নিউ কংস বনিক, নাহিদ মোল্লার নাহিদ অমব্রেলা, দিলীপ মুখার্জীর সুরুচি বস্ত্রালায়, গাজী লুৎফর রহমানের গাজী এনামেল এবং আলহাজ মো. সাইদুল হকের হোসেন হার্ডওয়ার সম্পূর্ণ পুড়ে যায়। এই সব ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের দোতলায় সৌরভ দাস ও সান্তনু মদন নামের দু’টি পরিবার বসবাস করতেন। এদের ক্ষতি হয়। সকলের নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার ও মালামালসহ প্রায় পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।
শারদিয়া দুর্গা পূজার ছুটি থাকায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। সেই বন্ধ প্রতিষ্ঠান থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এ জন্য আগুন নেভাতে বিলম্ব ঘটে। বাতাসে আগুনের লেলিহান শিখা চার দিকে ছড়িয়ে পড়লে লোক জড়ো হতে থাকে। সংবাদ পেয়ে আশপাশের ব্যবসায়ী ও তাদের কর্মচারীরা এসে ভিড় জমায়। প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত ঘটতে পারে।
খুলনা হ্যান্ডলিং শ্রমিক ইউনিয়ন (১২১২)’র সাধারণ সম্পাদক মো. শফিকুল ইসলাম শফি বলেন, এই সংবাদ শুনে তার শ্রমিকরা আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন এবং ফায়ার সার্ভিসের সাথে তার শ্রমিকরা সহযোগিতা করেন।
ডেলটাঘাটের ব্যবসায়ী মো. রফিকুল ইসলাম বলেন, পূজায় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। সংবাদ পেয়ে মালিকরা ছুটে আসেন। দু’টি পরিবারের সদস্যরা নিরাপদে দোতলা থেকে নীচতলায় নেমে আসেন। তাদের কোন ক্ষতি হয়নি।
বড় বাজার ক্লথ মার্চেন্ট এ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আলহাজ¦ আজিজুল ইসলাম মৃধা বলেন, কংস বাণিজ্য ভান্ডার থেকে প্রথমে তারা ধোয়া দেখেন। ধোয়া দেখে বাজারে আগত ক্রেতারা দিক-বিদিক দৌড়াতে থাকে। আগুন দেখে তিনি ফায়ার সার্ভিস ও নৌবাহিনীতে খবর দেন। খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ছুটে আসেন। বড় বাজার শ্রমিক তাদের সাথে যোগ দেয়। সোয় এক ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণ আনা সম্ভব হয়েছে। সব মিলিয়ে পাঁচ কোটি টাকার ক্ষতি হতে পারে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স খুলনা বিভাগীয় উপ-পরিচালক মোঃ সালেহ উদ্দিন বলেন, ১ টা ৭ মিনিটে টুটপাড়া ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায়। আগুনের ভয়াবহতা দেখে বয়রা ফায়ার স্টেশনের সহযোগিতা চায়। পরে টুটপাড়া ও বয়রা স্টেশনের ৬টি ইউনিট দুপুর সোয়া ২ টায় আগুন নিয়ন্ত্রেণে আনে। এখন ড্যাম্পিংয়ের কাজ চলছে। ভৈরব স্ট্যান্ডের রাস্তা সরু গলি পথ হওয়ায় গাড়ি প্রবেশ করেনি। নদীতে পাম্প সেট করে আগুনে পানি দেওয়া হয়েছে। তবে কী কারণে আগুনের সূত্রপাত হয়েছে তা এখন বলা সম্ভব নয়। তদন্ত করে ক্ষয়ক্ষতি নিরুপন এবং অগ্নিকান্ডের কারণ জানা যাবে। দুপরে স্থানীয় কাউন্সিলর ঘটনাস্থান পরিদর্শন করেন।
ঘটনার পর বিকেলে নগর বিএনপির আহবায়ক আইনজীবী শফিকুল আলম মনা ও সদস্য সচিব শফিকুল আমন তুহিন এবং নগর শ্রমিক দলের আহবায়ক মো. মো. মজিবর রহমান ও সদস্য সচিব মো. শফিকুল ইসলাম শফিসহ নেতৃবৃন্দ ঘটনাস্থাল পরিদর্শন করে এবং ক্ষতিগ্রস্থ ব্যবসায়ীদের সমবেদনা জানান।
খুলনা বড়বাজারে অগ্নিকাণ্ডে ছয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভস্মীভূত: ক্ষতি পাঁচ কোটি টাকা
Leave a comment