
জন্মভূমি ডেস্ক : খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে ব্যবসায়ী ও মেডিকেলের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় কর্মবিরতিতে যাওয়া ইন্টার্ন চিকিৎসকরা আন্দোলন স্থগিত করেছেন।
আজ বৃহস্পতিবার (১৭ আগস্ট) বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কর্মবিরতি সাময়িক স্থগিতের ঘোষণা দেন তারা। ইন্টার্ন চিকিৎসক। মেডিকেল কলেজের ইন্টার্ন চিকিৎসক মিথুন ঘোষ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ইন্টার্ন চিকিৎসক অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক মো. শামসুজ্জোহা সজীব বলেন, আমাদের তিন দফা দাবি মেনে নেয়ার আশ্বাস দেয়া হয়েছে। আশ্বাসের ভিত্তিতে এবং কর্মবিরতিতে রোগীদের দুর্ভোগ বিবেচনায় কর্মবিরতি স্থগিত করেছি।
সোনাডাঙ্গা মডেল থানার ওসি মোমতাজুল হক জানান, বৃহস্পতিবার ভোররাতে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় অভিযুক্ত বিল্লব মেডিসিন কর্ণারে মালিক এস এম মাহমুদুর রহমান বিপ্লব (৩০) ও আবিদ ফার্মেসীর কর্মচারী মীর বায়েজিদ (২০)কে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্যদেরও গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।
শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় খুলনা মেডিকেল কলেজের সচিব মো. মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে বুধবার (১৬ আগস্ট) রাতে নগরীর সোনাডাঙ্গা থানায় মামলা দায়ের করেছেন। মামলায় চারজনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত পরিচয়ে ৫০ জন ওষুধের দোকানীকে আসামি করা হয়েছে। মামলা দায়েরের পর বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে সোনাডাঙ্গা থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে খালিশপুর থানার ৪১/১, বয়রা জংশন রোড এলাকার মৃত শেখ শাহাজাহানের ছেলে ও বিপ্লব ফার্মেসির মালিক মাহমুদুর রহমান বিপ্লব (৩০) এবং সোনাডাঙ্গা থানার হাসানবাগ এলাকার ছোট বয়রার মীর বাড়ীর মোশারেফ মীরের ছেলে ও আবিদ ফার্মেসীর কর্মচারী মীর বায়েজিদ (২০) কে গ্রেপ্তার করে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকরা কর্মবিরতির ঘোষণা দিলেও ওষুধ ব্যবসায়ীরা এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত তাদের উপর ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার, শাস্তি ও ব্যবসায়ীদের নিরাপত্তার দাবিতে ওষুধের ৯০টি দোকান বন্ধ রেখে ধর্মঘট করছিলেন। দোকানীদের ওপর হামলাকারী মেডিকেল শিক্ষার্থীরা গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অনড় রয়েছে বাংলাদেশ কেমিস্ট অ্যান্ড ড্রাগিস্ট সমিতির খুলনা শাখা। সমিতির সহ-সভাপতি এসএম কবীর উদ্দিন বাবলু বলেন, হামলায় তাদের ১০ থেকে ১২ দোকান মালিক ও কর্মচারী আহত হয়েছিল।
ঘটনার সূত্রপাত সোমবার রাতে। মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীদের দাবি, ওই রাতে খুমেক কে-৩২ ব্যাচের শিক্ষার্থী রোমিও ওষুধ কিনতে যান মেসার্স বিপ্লব মেডিসিন কর্নারে। দোকানদার অতিরিক্ত মূল্য চাওয়ায় তিনি প্রতিবাদ করলে তাকে লাঞ্ছিত করা হয়। পরে অন্য শিক্ষার্থী গিয়ে এ বিষয়ে জানতে চাইলে দোকানদাররা জড়ো হয়ে বহিরাগতদের সহায়তায় তাদের ওপর হামলা করে। ওষুধ ব্যবসায়ী ও বহিরাগতদের হামলায় ২০ শিক্ষার্থী আহত হয়।
অপরদিকে ওষুধ দোকানদার এমডি রহমান ও সাখাওয়াত হোসেন বলেন, মেডিকেলের এক শিক্ষার্থী ৭০ টাকার ওষুধ কেনার পর ২০ শতাংশ কমিশন চেয়েছিল। দোকানদার কমিশন দিতে রাজি না হওয়ায় দুজন বাগবিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে মেডিকেল কলেজের হল থেকে শিক্ষার্থীরা এসে দোকানে ভাঙচুর চালায়। এতে বিপ্লবের দোকানসহ আশপাশের কয়েকটি দোকান ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনায় মঙ্গলবার দুপুর থেকে কর্মবিরতিতে যান ইন্টার্ন চিকিৎসকরা। পরদিন বুধবার সকাল থেকে হাসপাতালের সামনের ব্লু স্কয়ার মার্কেটের ওষুধ ব্যবসায়ীরা দোকান বন্ধ রেখে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন।