শেখ আব্দুল হামিদ : আবহাওয়ার খামখেয়ালীপনায় তীব্র দাবদহে প্রতিদিনই বাড়ছে শিশু রোগীর সংখ্যা। সূর্যের দেখা মিলতেই শুরু হয় তাপ। দিনের বেলা অতিরিক্ত গরম এবং রাতের শেষাংশে সামান্য ঠান্ডার কারণে শিশুরা প্রতিনিয়ত আক্রান্ত হয়ে পড়ছে ডায়রিয়া, পানি শুন্যতাসহ বিভিন্ন রোগে। দিনের বেলা তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ৪ ডিগ্রি সে: থাকলে সন্ধ্যায় নেমে আসে ৩২.২৯ ডিগ্রি সে:। আবহাওয়ার এ খামখেয়ালীতে খুলনা শিশু হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া জনিত রোগে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা বেড়েই চলেছে। গত ৪৫ দিনে এ হাসপাতালে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগে আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয় ৬০৪ জন শিশু। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় চিকিৎসা দিতে হিমসিম খাচ্ছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। অনেক শিশুকে ভর্তী করতে না পেরে অভিভাবকরা হাহাকার করছেন। বহি:বিভাগে প্রতিদিন চিকিৎসা নিতে আসছে ৫০০ থেকে ৬০০ শিশু।
এদিকে খুলনা আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিরুল আজাদ বলেন, দিনের বেলা তাপমাত্রা বৃদ্ধি পেয়ে সন্ধ্যায় প্রায় গড়ে ৮ ডিগ্রি সে: কমে আসে। ঘন্টায় ঘন্টায় তাপমাত্রা ওঠানামা করছে।
খুলনা শিশু হাসপাতালের দেয়া সূত্রমতে, চলতি বছরের মার্চ থেকে ১৫ এপ্রিল পর্যন্ত ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তির সংখ্যা ৬০৪ জন। ভর্তি রোগীর মধ্যে রয়েছে ডায়রিয়া, নিয়মোনিয়া, চিকেনপক্্র, পানিশুন্যতায় আক্রান্ত শিশু।
শিশু বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মতে দিনের বেলা গরমের তীব্রতা ও রাতের বেলায় হঠাৎ তাপ নেমে যাবার কারণে ডায়রিয়া ও নিউমোনিয়া রোগ বেড়েই চলেছে। প্রতিদিন এ হাসপাতালে মায়েরা ৫শ’ থেকে ৬শ’ শিশুকে চিকিৎসা করাতে নিয়ে আসেন। তাদের মধ্যে ডায়রিয়া নিউমোনিয়া ও সর্দি জ্বরে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যাই বেশী। রোগীর চাপ বেড়ে যাওয়ায় বেড স্বল্পতার কারণে অনেক শিশুকে ভর্তি করাতে পারছেন না। অনেক অভিভাবক তাদের শিশুকে অন্য হাসপাতালে সাময়িক ভাবে চিকিৎসা দিতে নিলেও শিশু হাসপাতালে ভার্তির জন্য খোঁজ খবর রাখেন। বেড খালি পেলেই শিশুকে নিয়ে আসেন।
খুলনা শিশু হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ও তত্বাবধায়ক ডা: মো: কামরুজ্জামান বলেন, শিশু হাসপাতালে ডায়রিয়া, নিউমোনিয়া ও সর্দিজ্বরে আক্রান্ত ও পানি শুন্যতা রোগী বেশী আসছে। প্রতিদিন আউটডোরে ৫শ’ থেকে ৬শ’ শিশুকে তাদের অভিভাবকরা নিয়ে এসে চিকিৎসা নিচ্ছেন। অনেক শিশুকে ভর্তির দরকার হলেও বেড স্বল্পতার কারণে তা সম্ভব হয়ে উঠছে না। পাশাপাশি রয়েছে অক্্িরজেন সংকট। গত ২৫ দিন ধরে রোগীর চাপের এমন পরিস্থিতি চলছে। তিনি বলেন, খুলনার মানুষের কাছে হাসপাতালটি আস্থার স্থলে পরিণত হওয়ায় আগের চেয়ে অনেক বেশী অভিভাবক তাদের শিশুকে চিকিৎসা দিতে নিয়ে আসছেন। এ কারণে ৯ তলা বিশিষ্ট আরও একটি ভবন নির্মাণের উদ্যোগ নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। তিনি বলেন ৬ মাসের কম বয়সি বাচ্চাদের বুকের দুধ খাওয়ানো কোন ভাবেই বন্ধ করা যাবে না। বিশুদ্ধ পানি বেশী করে পান কারাতে হবে। টাটকা ফল খেতে দিতে হবে। জ্বর হলে ঘাম শুকিয়ে যাবার আগে মুছে দিতে হবে। চিকিৎসকদের পরামর্শ নিতে হবে।