
কয়রা (খুলনা) প্রতিনিধি : নির্বাচনী আচরণবিধি ভেঙে বিশাল গাড়িবহর নিয়ে পাইকগাছা উপজেলা থেকে আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২ টার দিকে কয়রা উপজেলা সদরে পৌছান খুলনা-৬ (কয়রা-পাইকগাছা) আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামান। তাঁর আসার খবরে সকাল থেকেই কয়রা উপজেলা সদরে নেতা-কর্মী, সমর্থকেরা ফুলের মালা, ফুলের নৌকা নিয়ে জড়ো হন। তিনি পৌছানোর সাথেসাথে ‘নৌকা নৌকা, রশীদুজ্জামানের নৌকা’ বলে মিছিল নিয়ে শত শত নেতা-কর্মীরা উপজেলা সদরের তিন রাস্তার মোড় এলাকায় জড়ো হন। এতে কয়রা থানা সড়ক দিয়ে যানবাহন চলাচলে কিছুক্ষণের জন্য প্রতিবন্ধকতা তৈরি হয়।
এরপর কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে সংবর্ধনা সভা শেষে দুপুর দেড় টার দিকে শোডাউন দিয়ে সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেনর কাছে মনোনয়নপত্র জমা দিতে যান রশীদুজ্জামান।
জাতীয় সংসদ নির্বাচন আচরণ বিধিমালার ৮ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় কোনো প্রার্থী কোনো ধরনের মিছিল কিংবা শোডাউন করতে পারবেন না। (ক) ধারায় বলা হয়েছে, কোনো প্রার্থী, ট্রাক, বাস, মোটরসাইকেল, নৌযান, ট্রেন কিংবা অন্য কোনো যান্ত্রিক যানবাহনসহকারে মিছিল বা শোডাউন করতে পারবেন না।
বিষয়টি নজরে আনা হলে কয়রা উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. আসাদুর রহমান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) সঙ্গে কথা বলার পরামর্শ দেন।
কয়রা উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. কামাল হোসেন বলেন, মনোনয়নপত্র দাখিলের সময় আমার কক্ষে আমি মো. রশীদুজ্জামানসহ পাঁচজনের বেশি ঢুকতে দিইনি। বাইরে আচারবিধি ভঙ্গের মতো কিছু ঘটার অভিযোগ পেলে বিধি অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।
আচরণবিধি লঙ্ঘনের বিষয়ে কথা বলতে মো. রশীদুজ্জামানকে ফোন করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত সংবর্ধনা সভার বক্তৃতায় তিনি বলেন, গতকালও পাইকগাছার কমিলমুনি এলাকা থেকে পাইকগাছা উপজেলা সদর পর্যন্ত গণসংবর্ধনা দিয়েছে মানুষ। সাধারণ মানুষদের দেখে মনে হয়েছে বিগত ৫ বছর আটক থাকার পর আজ তারা মুক্তি পেয়েছে। মানুষ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে আমার কাছে ছুটে এসেছে।
মো. রশীদুজ্জামান বলেন, আজকেও কয়রা উপজেলার পথে পথে মানুষ ফুল দিয়ে আমাকে বরণ করেছে। যারা এখানে (সংবর্ধনা সভায়) এসেছেন তাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।
তিনি নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, আমার স্ত্রী একটি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক। তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে দলের মনোনয়ন ফর্ম কিনেছিলাম। গোয়েন্দা সংস্থার কেউ আমাকে চিনতেন না। অথচ শেক হাসিনা আমাকে চিনে মনোনয়ন দিয়েছেন। মনোনয়ন পেতে যে টাকা লাগেনা তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ আমি।
এসময় রশীদুজ্জামান মাইকে উচ্চস্বরে বলল, বিগত ৫ বছর আমার কেমন কেটেছে সে কথা বলতে গেলে আমার নিজের দলের বিপক্ষে যাবে, নেতার বিপক্ষে যাবে। আমি সেসব কথা উচ্চারণ করতে চাইনা। মনোনয়ন পেয়ে দলের সকলের কাছে আমি কৃতজ্ঞ।
মো. রশীদুজ্জামানের বক্তৃতার সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা নৌকা নোকা বলে শ্লোগান দিতে থাকলে মাইকে কয়রা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জি এম মহসীন রেজা বারবার নেতাকর্মীদের নির্বাচনী আচারবিধি মেনে চলার কথা বলেন।
আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. রশীদুজ্জামান ছাড়াও কুলনা-৬ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পত্র জমা দিয়েছেন খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ প্রকৌশলী মাহবুবুর রহমান, জাতীয় পার্টির শফিকুল ইসলাম মধু, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী আন্দোলন (বিএনএম) থেকে ব্যারিস্টার নেওয়াজ মোর্শেদ, স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম রাজু, মোস্তফা কামাল জাহাঙ্গীর।