জন্মভূমি ডেস্ক : বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় এক নারীর হত্যার ঘটনা নিয়ে র্যাব ও পুলিশ দুই ধরনের বক্তব্য দিয়েছে। র্যাব এই হত্যার পেছনে ছেলেকে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত মনে করলেও পুলিশ বলছে, এর সঙ্গে ছেলের সম্পৃক্ততা নেই। এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ও সংবাদমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার পর র্যাবের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, এ ঘটনা তদন্তে কোনো র্যাব সদস্যের গাফিলতি থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বগুড়ার দুপচাঁচিয়ায় গৃহবধূ উম্মে সালমাকে (৫০) হত্যার পর ডিপ ফ্রিজে রাখার ঘটনায় ছেলেকে গ্রেফতার করেছিল র্যাব। তবে পুলিশের তদন্তে ভিন্ন বিষয় উঠে আসে। পুলিশ বলেছে, গৃহবধূ হত্যায় ছেলে নয়, বাড়ির ভাড়াটিয়া জড়িত। এ ঘটনায় তিনজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আজ শনিবার (১৬ নভেম্বর) রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সংস্থার মুখপাত্র লেফটেন্যান্ট কর্নেল মুনিম ফেরদৌস বলেন, র্যাবের তদন্তে যদি কারও গাফিলতি থাকে বা তথ্যগত প্রক্রিয়াগত ভুল থাকে, এর সঙ্গে র্যাবের কেউ যদি দায়ী হয়, তাহলে তাঁর বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গৃহবধূ খুনের ঘটনায় প্রথমে ছেলেকে গ্রেফতার করে র্যাব। ওই ঘটনা তদন্তে পুলিশ সম্পূর্ণ ভিন্ন তথ্য উপস্থাপন করে। যেখানে তিন ভাড়াটিয়া এই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত বলে জানায় পুলিশ। তাহলে ঘটনা নিশ্চিত হওয়ার আগেই প্রকাশ করায় এক ব্যক্তি ‘মিডিয়া ট্রায়ালের’ শিকার হলেন কি না—এই প্রশ্নে র্যাবের মুখপাত্র মুনিম ফেরদৌস বলেন, বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার ঘটনায় ছেলে জবানবন্দি দিয়েছেন। সেই তথ্য আমরা রেকর্ড করেছি। তাকে যখন ক্যাম্পে আনা হয়, তখন তার আত্মীয়স্বজন ছিলেন। ছেলের দেওয়া জবানবন্দির ভিত্তিতেই র্যাব কাজ করেছে।
তিনি বলেন, তদন্তে ভিন্নতা হতেই পারে। ঘটনায় পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও তদন্ত করছে। পুলিশ তদন্তে যদি র্যাবের সহযোগিতা নেওয়ার প্রয়োজন মনে করে আমরা করব।
তিনি আরও বলেন, আমাদের র্যাবের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে যদি কোনো অভিযোগ আসে বা তদন্তে গাফিলতির তথ্য-প্রমাণ পাওয়া যায়, তাহলে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা নেব।
দুই সংস্থার তদন্তে ভিন্নতা কেন? আর ছেলে আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিও দেননি। আদালতে জবানবন্দি দিতে অস্বীকার করায় তাঁকে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। রহস্য উদ্ঘাটিত হওয়ার আগেই গণমাধ্যমে এ বিষয়ে বক্তব্য দিয়ে একজনকে মিডিয়া ট্রায়ালের শিকার করা হলো কি না, এমন প্রশ্নে মুনিম ফেরদৌস বলেন, স্বীকারোক্তি অনেক ধরনের আছে। কেউ কোনো ঘটনায় স্বীকারোক্তি দেওয়া মানেই ঘটনায় সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করে না। আবার যিনি স্বীকারোক্তি দেবেন, তিনি যেকোনো সময় তাঁর বক্তব্য অস্বীকার, পরিবর্তন, পরিমার্জন করতে পারবেন। এটা তাঁর আইনগত অধিকার। ১৬৪, ১৬১ (ধারায় জবানবন্দি) আলাদা। এখানে র্যাবের অন্য কোনো উদ্দেশ্য ছিল না। তবু ঘটনার তদন্তে গাফিলতি আছে কি না, তা তদন্ত করে দেখা হবে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা আরও বলেন, মিডিয়া ব্রিফিং সচেতনতামূলক কাজ। এখানে অন্য কোনো উদ্দেশ্য নেই। ব্রিফিং নিবারণমূলক কাজের অংশ। মানুষ যাতে শিক্ষা নেয় বা সচেতন হয়। এখানে পুলিশের তদন্ত ভুল, এমন বলার সুযোগ নেই। ঘটনার আরও অধিকতর তদন্ত হবে। তদন্ত কিন্তু শেষ হয়নি।