সিরাজুল ইসলাম শ্যামনগর : বঙ্গোপসাগরে তৈরি হচ্ছে ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’। আবহাওয়াবিদদের পূর্বাভাস অনুযায়ী, মে মাসের ২৭ থেকে ২৯ তারিখের মধ্যে ঘূর্ণিঝড়টি বাংলাদেশের স্থলভাগে আঘাত আনতে পারে।
তবে এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড়টি কোথায় আঘাত হানবে, তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। তবে ভারতের উড়িষ্যা ও মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের মধ্যবর্তী উপকূলীয় এলাকায় এটি আছড়ে পড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
আবহাওয়াবিদ মোস্তফা কামাল পলাশ জানিয়েছেন, এটি অতিপ্রবল ঘূর্ণিঝড় না হলেও ভারী বৃষ্টি ও দমকা হাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে বাংলাদেশের খুলনা উপকূল এবং ভারতের পশ্চিমবঙ্গ অঞ্চল সবচেয়ে ঝুঁকিতে থাকতে পারে।
দুপুরের মধ্যে তিন অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের শঙ্কা!
বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, ১৬ থেকে ১৮ মের মধ্যে বঙ্গোপসাগরে একটি সার্কুলেশন তৈরি হতে পারে। সেটি ধীরে ধীরে নিম্নচাপে রূপ নেবে এবং তা থেকেই ঘূর্ণিঝড় শক্তি সৃষ্টি হতে পারে।
ভারতীয় সংবাদমাধ্যম জাগরণ জানিয়েছে, ভারতের আবহাওয়া বিভাগ এখনো ঘূর্ণিঝড়ের বিষয়ে চূড়ান্ত কিছু জানায়নি। তারা বলছে, এটি আদৌ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হবে কি না, তা এখনও অনিশ্চিত।
বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদফতরও জানায়, এখন পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ নিয়ে কোনো চূড়ান্ত সতর্কতা জারি করা হয়নি। তবে তারা পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজন হলে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেবে।
বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, মে মাস দক্ষিণ এশিয়ায় ঘূর্ণিঝড়ের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ সময়। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে এখন ঘূর্ণিঝড়ের আচরণ আগের চেয়ে বেশি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
তারা উপকূলীয় বাসিন্দাদের আগাম প্রস্তুতি নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। নৌকা ও ট্রলার নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিতে এবং আশ্রয়কেন্দ্রগুলো প্রস্তুত রাখতে বলা হয়েছে, যেন ঘূর্ণিঝড় আঘাত হানলে মানুষ দ্রুত নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।
ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ নিয়ে আবহাওয়া অবজারবেশন টিমের সতর্কবার্তা
গত বছর অক্টোবর মাসে ঘূর্ণিঝড় ‘দানা’ ভারতের উপকূলে আঘাত হেনেছিল। তখন ব্যাপক বৃষ্টিপাতের পাশাপাশি উপকূলীয় জনজীবনে দুর্ভোগ নেমে এসেছিল।
চলমান দাবদাহের মধ্যে সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘শক্তি’ নতুন করে উদ্বেগ তৈরি করেছে। দেশের অনেক অঞ্চলে তাপমাত্রা বাড়ার পাশাপাশি সাগরে ঝড়ের আশঙ্কা জনমনে উৎকণ্ঠা ছড়াচ্ছে।