শেখ আব্দুল হামিদ
ঘুর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ খুলনায় আঘাত হানার শঙ্কায় রায়েছেন উপকূলবাসী। বৃহত্তর খুলনার নদ নদীতে গেল অমাবশ্যায় পানির চাপ বৃদ্ধি পায়। আসন্ন ঘূর্ণিঝড় এ অঞ্চলে আবারও আঘত হানলে কমপক্ষে ১০টি নদ নদীর পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার আশংকা রয়েছে। ঝড় শুরু হলেই খুলনা শহর রক্ষা বাঁধ সহ খুলনা বাগেরহাট ও সাতক্ষীরা জেলার স্পর্শকাতর বাঁধগুলো আবারও চরম ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠবে। গত মাসে খুলনা বাগেরহাট সাতক্ষীরা তথা গোটা উপকুলীয় অঞ্চলের প্রায় ২০টি স্পটে নীচু বাঁধ উপচে জোয়ারের পানি প্রবেশ করে। চরম ঝুকিপূর্ন অবস্থায় প্রায় ৭-৮টি উপজেলার বিভিন্ন বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার প্রহর গুনছে।
সাতক্ষীরার উপকূলীয় এরাকায় ২০০৯ সালের ২৫ মে ঘূণিঝড় আইলা আঘাত হানে। সে সময় সবচেয়ে বেশি ক্ষতির মধ্যে পড়ে সাতক্ষীরার উপকূলীয় অঞ্চল। ২০১৩ সালের ১৬ মে আঘাত হানে মহাসেন, ২০১৫ সালের ৩০ জুলাই কোমেন, ২০১৬ সালের ২১ মে রায়ানু, ২০১৭ সালের ৩০ মে মোরা, ২০১৯ সালে ৩ মে ফণী, ২০১৯ সালের ৯ নভেম্বর বুলবুল আঘাত হানে। সবশেষে ২০২০ সালের ২০ মে বিকেলে সুন্দরবনের শাশ দিয়ে সাতক্ষীরা উপকূলে আছড়ে পড়ে ঘুণিঝড় আম্পান। এসময় বেড়িবাঁঘ ভেঙে প্লাবিত হয় আশাশুনি ও শ্যামনগর উপজেলার বেশ কয়েকটি ইউনিয়ন। যার ক্ষত এখনও এ এলাকার মানুষ বয়ে চলেছে।
গত বছর এ সময আমাবশ্যার জোয়ারে খুলনা ও সাতক্ষিরায় বাঁধ উপচে পানি ঢুকে যায় লোকালয়ে। জোয়ারের পানিতে তলিয়ে যায় সাতক্ষিরা জেলার শ্যামনগর ও আশাশুনি উপজেলার কপোতাক্ষ, খোলপেটুয়া। চুনা নদীর বেঁড়িবাধে প্রবল জোয়ারের কারণে ব্যাপক ভাঙ্গন ও ফাটল দেখা দেয়। এছাড়া খুলনার কয়রা উপজেলার বেশ কয়েকটি বাঁধ তলিয়ে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে। হরিহরপুর, গাজিপাড়া, মেদেরচর, চরমূখা, দশহালিয়া, ষাটবাড়িয়া, লোকা, ঘাটাখালীসহ মোট ১৬টি স্পটে ৩ কোটি ৮৭ লাখ টাকায় বাঁধ মেরামতের কাজ হয়। এসময় অমাবশ্যায় হঠাৎ জোয়ারের পানিতে বটিয়াঘাটার হালিয়া গ্রামে ওয়াপদা বাধ তলিয়ে পানি প্রবেশ করে। শিয়ালীডাঙ্গা গ্রামের পাশে কাজিবাচা নদীর ওয়াপদা বাঁধ আবারও ভেঙ্গে যাবার আশংকা দেখা দিয়েছে।
‘সিত্রাং’ আগামী ২৪ অক্টোবর আঘাত হানলে খুলনা, বাগেরহাট ও সাতক্ষিরা জেলার রূপসা, ভৈরব, পশুর, চালনা, মংলা, শিবসা, কপোতক্ষ, ইছামতি, কাকশিয়ালি, শ্যামনগর, আশাশুনি খোলপেটুয়া, মরিচাপ ও কয়রার নদ নদীতে পানি বিপদ সীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হওয়ার শঙ্কা রয়েছে।
ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’ আঘাতের শঙ্কায় শংকিত উপকূলবাসী
Leave a comment