
কোটি টাকার ওপরে জমা দিয়েছেন প্রবাসীরা
চাঁদা দিয়েছেন ১৪ হাজারের অধিক জনগণ
প্রাথমিকভাবে ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ
জন্মভূমি ডেস্ক : প্রতিদিনই নতুন নতুন মানুষ যুক্ত হচ্ছেন সর্বজনীন পেনশন স্কিমে। এতে বাড়ছে স্কিমে জমা পড়া অর্থের পরিমাণ। এরই মধ্যে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে চাঁদা পরিশোধ করেছেন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ১০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। চলতি মাসেই জমা পড়া অর্থ নিরাপদ ও লাভজনক খাতে বিনিয়োগ করবে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষ।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, সর্বজনীন পেনশন স্কিমে জমা পড়া অর্থ বিনিয়োগের পরিকল্পনা প্রায় চূড়ান্ত। টাকার পরিমাণ কম হওয়ায় প্রাথমিকভাবে বিনিয়োগ করা হবে শুধু সরকারি সিকিউরিটিজ বা ট্রেজারি বন্ডে। চলতি মাসেই হবে এই বিনিয়োগ। একই সঙ্গে সর্বজনীন পেনশন স্কিম নিয়ে চলতি মাসে চালানো হবে ব্যাপক প্রচারণা। সে বিষয়েও নেওয়া হয়ছে পরিকল্পনা।
প্রাথমিকভাবে প্রবাস, প্রগতি, সুরক্ষা এবং সমতাÍ এই চার স্কিম নিয়ে সর্বজনীন পেনশন চালু করেছে সরকার। গত ১৭ আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধন করেন। এর পরপরই শুরু হয় আবেদন। সর্বজনীন পেনশন স্কিম চালুর পর এরই মধ্যে দেড় মাস পার হয়েছে। তবে প্রথমদিকে সর্বজনীন পেনশন স্কিমে নিবন্ধন করে যে হারে মানুষ চাঁদা জমা দিয়েছেন, ধীরে ধীরে তার পরিমাণ কিছুটা কমেছে।
অবশ্য সর্বজনীন পেনশন স্কিমের তত্ত্বাবধানে যারা রয়েছেন তাদের দাবি, সর্বজনীন পেনশন স্কিমের প্রতি মানুষের আগ্রহ কমেনি। কারণ প্রতিদিন ৫০০-৬০০ জন করে নিবন্ধন করছেন। এটা ভালো লক্ষণ। সর্বসাধারণের মধ্যে সর্বজনীন পেনশন স্কিমের বিষয়ে বিস্তারিত জানানোর জন্য চলতি (অক্টোবর) মাসেই চালানো হবে ব্যাপক প্রচারণা।
সর্বজনীন পেনশন স্কিম উদ্বোধনের পর প্রথমদিনেই অর্থাৎ ১৭ আগস্ট নিবন্ধন সম্পন্ন করে চাঁদা পরিশোধ করেন এক হাজার ৭০০ জন। তারা ওইদিন প্রায় ৯০ লাখ টাকা চাঁদা জমা দেন। প্রথম এক সপ্তাহে চাঁদা পরিশোধ করেন ৮ হাজার ৫৫১ জন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ছিল ৪ কোটি ৩৯ লাখ ২৫ হাজার টাকা। আর প্রথম এক মাস শেষে চাঁদা পরিশোধকারীর সংখ্যা দাঁড়ায় ১২ হাজার ৯৯৯ জনে। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ৭২ লাখ ৪৭ হাজার ৫০০ টাকা।
দেড় মাসের মাথায় ৫ অক্টোবর দুপুর পর্যন্ত সর্বজনীন পেনশনে চাঁদা পরিশোধকারীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ২২৩ জন। তাদের জমা দেওয়া চাঁদার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১০ কোটি ৪০ লাখ ৩ হাজার টাকা। শুরুর মতো এখনো চাঁদা দেওয়ার ক্ষেত্রে এগিয়ে রয়েছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের চাকরিজীবীরা। জমা পড়া চাঁদার অর্ধেকের বেশি দিয়েছেন তারা।
জমা পড়া চাঁদার টাকা বিনিয়োগের বিষয়ে জানতে চাইলে সর্বজনীন পেনশন কর্তৃপক্ষের সদস্য গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘হ্যাঁ, এ (অক্টোবর) মাসের মধ্যেই আমরা বিনিয়োগ করবো। যে টাকা জমা পড়েছে, সেই টাকা আমরা এ মাসের মধ্যেই বিনিয়োগ করার উদ্যোগ নিয়েছি। যেদিন বিনিয়োগ করবো, সেদিন আমরা জানিয়ে দেবো।’ কোথায় বিনিয়োগ করা হবে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘টাকা তো এখনো অত না। টাকা বাড়লে আমরা বিভিন্ন খাতে বিনিয়োগ করবো। এখন আপাতত সব থেকে নিরাপদ যেটা সেই জায়গায় যাবো।’
তাহলে কি এখন শুধু ট্রেজারি বন্ডে বিনিয়োগ হবে? এমন প্রশ্ন করা হলে গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘এরকমই চিন্তাভাবনা। এটা জনগণের আমানত, আমরা এমন কোনো জায়গায় যাবো না যেটা ইয়ে হয়…..। আমরা খুব কনশাসলি (খুব সতর্কতার সঙ্গে) বিনিয়োগ করবো।’
প্রচারণা চালানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘প্রচারণার বিষয়ে এরই মধ্যে আমরা কর্মপরিকল্পনা নিয়েছি। এ মাসের মধ্যেই আপনারা দেখতে পারবেন ব্যাপক প্রচারণা হচ্ছে।