
গোপালগঞ্জ প্রতিনিধি : প্রাবাসী ৪ জন দাতার অনুপস্থিতিতে দলিল রেজিস্ট্রি করে দিলেন সাব রেজিস্টার! অভিযোগ উঠেছে দলিল লেখক ও অফিসের কয়েকজনের যোগসজসে মোটা অংকের টাকার বিনিময়ে গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা সাব রেজিস্ট্রার আনোয়ারুল হাসান দলিলটির রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করেছেন।
জানাগেছে, গোপালগঞ্জ পৌরসভাধীন ১২নং ওয়ার্ডের নবীনবাগ এলাকায় প্রায় ১০ কোটি টাকা মূল্যের ৮তলা বিশিষ্ট বিসমিল্লাহ টাওয়ার। যার মালিক ৩৬ জন। গত ৩০ এপ্রিল এই সম্পত্তির একটি বন্টন নামা দলিল রেজিস্ট্রি সম্পন্ন হয়। দলিলের সময়ে ৩৬ জনই রেজিস্ট্রি অফিস উপস্থিত হয়ে রেজিস্টারের সামনে স্বাক্ষর করার কথা। কিন্তু কারসাজি করতে সাবরেজিস্ট্রার কমিশনের ভিত্তিতে বাসায় দলিলটি রেজিস্ট্রি সম্পন্ন করান। ওই কর্মকর্তা নিজে না গিয়ে নিয়ম-নীতি ভঙ্গকরে সেখানে রেজিস্ট্রি অফিসের বাবুল সরদার নামে এক মোহরারকে পাঠান। সেখানে নাম পরিচয় ঠিক রেখে বিদেশে থাকা ৪ জনের ছবি পাল্টে বাংলাদেশে থাকা ৪ সজনের ছবি যুক্ত করে স্বাক্ষর করানো হয়। এর মধ্যে শামিম শেখের স্থলে তার ভগ্নিপতি ইসরুল মোল্লার ছবিযুক্ত করে স্বাক্ষর করানো হয়। বর্তমানে শামিম শেখ সিংগাপুরে, ছামিয়া খানম তিষা লন্ডন এবং অপর দুইজন আমেরিকা অবস্থান করছেন।
দলিল লেখক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন খান বলেন, এমন বিরল ঘটনা এখানে আগে কোনদিন ঘটেনি। যে লেখক দলিলটি সম্পাদন করেছে সে আমাদের সমিতির সদস্য না। এজন্য আমরা সমিতির পক্ষ থেকে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যাবস্থা গ্রহণ করতে পারছিনা। এমন অনৈতিক কাজের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।
দলিল লেখক আমিনুল ইসলাম টিক্কার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার সাথে অফিসের একজন ছিলো, আমরা ছবি দেখছি আর টিপ নিয়েছি। এ কর্মকান্ড নিয়ে তার সাময়িক বরখাস্তের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সাব রেজিস্ট্রার আমাকে আপাতত কোন দলিলে সই করতে নিষেধ করেছেন।
মোহরার বাবুল সরদার বলেন, অফিস থেকে আমি একাই ওই বাসায় গিয়েছিলাম। ছবি মিলেয়ে ৩৬ জন দাতার স্বাক্ষর নিয়েছি।
রেজিস্ট্রার আনোয়ারুল হাসান অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, এ ঘটনার সাথে দলিল লেখক জড়িত। ঘটনাটি জানার পর তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বাসায় গিয়ে দলিল সম্পন্নের বিষয়ে কখনো বলেছেন তিনি নিজে গিয়ে সকলকে ৩৬ জনকে সনাক্ত করেছেন, কখনও বলেছেন আমার প্রতিনিধি পাঠিয়েছিলাম। আবার কখনও বলছেন আইডি কার্ড টেম্পারিং করা হয়েছে।