
ক্রীড়া ডেস্ক : আর্জেন্টাইন ফুটবল কিংবদন্তি ডিয়েগো ম্যারাডোনার মৃত্যুর প্রায় আড়াই বছর হতে চললো। কিন্তু ম্যারাডোনার মৃত্যু ঘিরে রহস্য যেন থামছেই না। এমনকি তার মৃত্যুর পেছনে চিকিৎসকদের দায় রয়েছে বলেও শোনা গেছে। কিংবদন্তি আর্জেন্টাইন ফুটবলারের মৃত্যু নিয়ে তদন্তে গেল বছরই চিকিৎসায় অবহেলা করা চিকিৎসকদের বিচারের আওতায় আনার দাবি জানায় তদন্তকারীরা।
সেই ধারাবাহিকতায় ৮ চিকিৎসাকর্মীকে বিচারের মুখোমুখি হতে হবে বলে মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) জানিয়েছেন আর্জেন্টিনার আদালত। তবে এখনও বিচারের কোনো তারিখ নির্ধারণ করা হয়নি। অভিযুক্তদের মধ্যে একজন মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, একজন ক্লিনিক্যাল চিকিৎসক, একজন মেডিকেল সমন্বয়কারী, নার্সিং সমন্বয়কারী এবং কয়েকজন নার্স রয়েছেন।
ম্যারাডোনার মৃত্যুর জন্য নিউরোসার্জন এবং পারিবারিক চিকিৎসক লিওপোল্ডো লুক এবং মনোরোগ বিশেষজ্ঞ আগুস্টিনা কোসাচভকে প্রধান অভিযুক্ত হিসেবে তদন্তে উল্লেখ করা হয়। সেই সঙ্গে মনোবিজ্ঞানী কার্লোস ডিয়াজ এবং চিকিৎসা সমন্বয়কারী ন্যান্সি ফোরলিনিসহ আরও ছয়জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। তদন্তে দোষী প্রমাণিত হলে তাদের ৮ থেকে ২৫ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
ডিয়েগো ম্যারাডোনাকে ফুটবল ইতিহাসের সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় হিসেবে বিবেচনা করা হয়। প্রায় একক নৈপুণ্যে তিনি আর্জেন্টিনাকে জিতিয়েছিলেন ১৯৮৬ বিশ্বকাপ। বহু বছর মাদকে আসক্ত থাকার পর ২০২০ সালের নভেম্বরের শুরুর দিকে মস্তিষ্কে রক্তজমাট বাঁধার কারণে তার অস্ত্রোপচার হয়। এ অস্ত্রোপচারের ৮ দিন পর গত ১১ নভেম্বর হাসপাতাল থেকে তিনি ছাড়া পান।
নিয়মিত স্থানীয় ক্লিনিকে থেরাপি এবং একই সঙ্গে বাসায় ডিয়েগো ম্যারাডোনার চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু হাসপাতাল থেকে ফেরার দুই সপ্তাহের পর ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর আর্জেন্টিনার রাজধানী বুয়েনস এইরেসে এক ভাড়া বাসায় তাকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। ধারণা করা হয়, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েই ৬০ বছর বয়সে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান এ আর্জেন্টাইন ফুটবল কিংবদন্তি। ম্যারাডোনার মৃত্যুর পর ২০২১ সালে ২০ জন মেডিকেল বিশেষজ্ঞের সমন্বয়ে একটি প্যানেল গঠন করেন আর্জেন্টিনার সরকারি কৌঁসুলি। প্যানেলটি জানিয়েছিল, যথাযথ চিকিৎসা ও ওষুধ পেলে ম্যারাডোনার বেঁচে থাকার সম্ভাবনা ছিল।
২০২২ সালে ওই ৮ অভিযুক্ত চিকিৎসাকর্মী বুয়েনস এইরেসের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত সান ইসিদ্রোর আদালতে হত্যা মামলার বিরুদ্ধে আবেদন করেন। অভিযুক্তদের আইনজীবীরা যুক্তি দেন, তাদের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত হত্যার অভিযোগ আনা উচিত। প্রাথমিক অভিযোগে চিকিৎসকদের দায়িত্বে অবহেলার কথা বলা হয়। প্রয়োজনীয় সুযোগ সুবিধা না থাকায় মৃত্যু হতে পারে- এটা জানার পরও এরকম গুরুতর একজন অসুস্থ ব্যক্তিকে বাড়িতে রেখে বেপরোয়াভাবে চিকিৎসা দেওয়ার অভিযোগের কথাও উল্লেখ করা হয়।