বাগেরহাট : ‘মাথা গোজার ঠাঁই ছিল না। পরিবার নিয়ে পথে পথে ঘুরেছি। সামান্য আয় দিয়ে বস্তিতে ভাড়া থেকেছি। কোনদিন ভাবতে পারিনি পাকা ঘরের মালিক হব। নিজের নামে দলিলসহ জায়গা পাব। মা হাসিনার দোয়ায় আজ স্বপ্নের ঠিকানায় আছি। শেষ বয়সে এটা আমার জীবনের সেরা উপহার। আমি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দীর্ঘায়ু কামনা করি।’ গতকাল সোমবার (৩০ জানুয়ারী) সকালে বাগেরহাটের চিতলমারী উপজেলার সাবোখালী গ্রামে নিজের নামে পাওয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরে বসে এমনটাই বলছিলেন মোঃ শাহজান খান (৬৭)। আব্দুল মাজেদ শেখ (৫৬)। স্ত্রী হেলেনা বেগম ও ছেলে-মেয়েকে নিয়ে ৪ সদস্যর পরিবার। টোকাইয়ের কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। কাজ করে যে টাকা আয় করতেন তা দিয়ে বাসা ভাড়ার টাকা হতো না। তাই পরিবার নিয়ে চিতলমারী ওয়াপদা পাড়ের বস্তিতে থাকতেন। তিনিও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও জায়গা পেয়েছেন। এ জন্য তিনি ও তাঁর পরিবারের সকলে প্রধানমন্ত্রীর জন্য দোয়া করেন। শান্তনা বিশ্বাস (৫০)। স্বামী কোমল বিশ্বাস, ২ ছেলে ও ২ মেয়েকে নিয়ে ৬ সদস্যর পরিবার। স্বামী অসুস্থ্য তাই গৃহপরিচারিকার কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। মাথা গোজার জায়গা ছিল না। পথে পথে থেকেছেন। তিনিও প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘর ও জায়গা পেয়েছেন। এখন বাস করেন সাবোখালী গ্রামে নিজের নামে পাওয়া আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘরে। এটা ঘর নয়, এটা তাঁদের কাছে স্বপ্নের ঠিকানা। আর এ জন্য তিনি সকাল-সন্ধ্যা প্রধানমন্ত্রীর জন্য আশির্বাদ করেন। শুধু মোঃ শাহজান খান, আব্দুল মাজেদ শেখ আর শান্তনা বিশ্বাস নয় এ উপজেলার আরও ২১৯ টি ছিন্নমুল পরিবার স্বপ্নের ঠিকানায় বসবাস করছেন। অতিশিঘ্র আরও ১১০ টি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাবেন। চিতলমারী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) অপূর্ব দাস জানান, মুজিব শতবর্ষ উপলক্ষে ভূমিহীন-গৃহহীন “ক” শ্রেণীর ২১৯ জন উপকারভোগী ঘর পেয়েছেন। তাঁদের সকলেই শান্তিতে প্রধানমন্ত্রীর উপহার পাওয়া ঘরে বসবাস করছেন। চিতলমারীর ৭ টি ইউনিয়নের মধ্যে চিতলমারী সদর ইউনিয়নে ৮১টি, বড়বাড়িয়ায় ৩৩ টি, হিজলায় ৬টি, শিবপুরে ১৪ টি ও কলাতলা ইউনিয়নে ৮৫ টি ঘর। প্রথম পর্যায়ের প্রতিটি ঘরের নির্মান ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ লাখ, ৭১ হাজার টাকা ও দ্বিতীয় পর্যায়ের ৫০টির প্রতিটি ঘরের নির্মান ব্যয় ছিল ১ লাখ ৯০ হাজার টাকা। প্রতিটি ঘরে একটি বারান্দা, দুটি শোবার কক্ষ, রান্নাঘর ও পায়খানা রয়েছে। রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। বর্তমানে প্রতিটি ঘরে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকা। শীঘ্রই আরও ১১০ টি পরিবার প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া স্বপ্নের ঠিকানায় পৌঁছাবেন। সোমবার (৩০ জানুয়ারী) দুপুরে বাগেরহাট জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আজিজুর রহমান বলেন, ‘আমরা যাদেরকে জমিসহ ঘর দিয়েছি, অনেক যাচাই-বাছাই করে দিয়েছি। ঘর পাওয়া ব্যাক্তিদের কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও স্বাবলম্বী করার লক্ষে বিভিন্ন ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। আশাকরি তাঁরা স্বাবলম্বীর পথে।’
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত