জন্মভূমি ডেস্ক : চুয়াডাঙ্গায় ১৮ বছর বয়সী খালেদা আক্তার মুন্নির হত্যাকাণ্ডের ঘটনা নতুন মোড় নিয়েছে। পুলিশ তদন্তে উঠে এসেছে, এই নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি ছিল একটি প্রতিশোধমূলক ঘটনা, যা পরিকল্পনা করে ঘটানো হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মূল আসামি মানিক আলী মুন্সি ও তার সহযোগী পারভেজ মহাসিন স্বপনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
মুন্নি ৯ নভেম্বর সকালে বাড়ি থেকে বের হয়ে নিখোঁজ হন। পাঁচ দিন পর, ১৪ নভেম্বর তার অর্ধগলিত বিবস্ত্র মরদেহ উদ্ধার হয় চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার বোয়ালমারি নীলমনিগঞ্জ এলাকার জঙ্গলে। মরদেহের ট্যাটুর মাধ্যমে মুন্নির পরিচয় শনাক্ত হয়, এবং তার পরিবার থানায় হত্যা মামলা দায়ের করে।
তদন্তে পুলিশ জানতে পারে, মুন্নি পূর্বে মানিকের সাথে সম্পর্কিত একটি ব্ল্যাকমেইলিং ঘটনার শিকার হয়েছিলেন। এক সময়, মুন্নি মানিকের কাছ থেকে ২০ হাজার টাকা আদায় করে এবং তারপর থেকে মানিকের মধ্যে ক্ষোভ জমে ওঠে। পরে, ৯ নভেম্বর সন্ধ্যায়, মানিক এবং তার সহযোগী পারভেজ মুন্নিকে আবারো ডেকে নেয় বোয়ালমারি শ্মশান এলাকায়।
মুন্নি সেখানে গিয়ে শারীরিক সম্পর্কের প্রস্তাবে সম্মতি জানায়, তবে কিছু সময় পর ৫ হাজার টাকা নিয়ে তাদের সঙ্গে চুক্তি ভেঙে ফেললে, মানিক ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করে। হত্যার পর, তাকে হাত-পা বেঁধে জঙ্গলে ফেলে চলে যায়।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা তাদের অপরাধ স্বীকার করে এবং আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়েছে। তারা জানিয়েছে, মুন্নি তাদেরকে ব্ল্যাকমেইল করেছিল, এবং ওই ঘটনার পর মানিক প্রতিশোধ নেয়ার পরিকল্পনা করে।
চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার খন্দকার গোলাম মওলা বলেন, ‘এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মূল অপরাধীদের গ্রেফতার করা হয়েছে এবং আমরা নিশ্চিত করব যে, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা হবে।’ পুলিশ এই ঘটনার পেছনে আরও কিছু গভীর সামাজিক ও মানসিক দিক অনুসন্ধান করছে।
এই হত্যাকাণ্ড চুয়াডাঙ্গা শহরের জনগণের মধ্যে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে, এবং এটি একটি সতর্কবার্তা হয়ে উঠেছে যে, প্রতিশোধের কারণে এমন সহিংসতা হতে পারে। পুলিশ প্রশাসনের সাফল্য আশা জাগিয়েছে, তবে এই ধরনের অপরাধের বিরুদ্ধে সচেতনতা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতার প্রশ্নও সামনে এসেছে।