চৌগাছা প্রতিনিধি : ঝিনাইদহ জেলার মহেশপুর উপজেলার বাঁশবাড়িয়া ইউনিয়নের মকধধাজপুর গ্রামে গত শুক্রবার বিকেলে মাঠে সবজী ক্ষেতে কাজ করছিলেন কৃষক পিতা-পুত্র। হঠাৎ বজ্রপাতে পিতা গোলাম মোস্তফা (৬০) ও পুত্র মাহাবুবুর রহমান (২৭) আহত হন। স্থানীয়রা তাদেরকে উদ্ধার করে মহেশপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। পুত্র মাহবুবুর রহমানের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় চিকিৎসক তাকে যশোর আড়াইশো শয্যা জেনারেল হাসপাতালে রেফার্ড করেন। হাসপাতালে নেওয়ার পথে তার অবস্থা খারাপ হওয়ায় পথিমধ্যে চৌগাছা হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মাহবুবুর রহমানকে মৃত ঘোষণা করেন।
নিয়ম অনুযায়ী হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চৌগাছা থানাকে বিষয়টি অবহিত করেন। এরপর শুরু হয় আইনি জটিলতা। মৃতহেদ নিয়ে বিপাকে পড়েন স্বজনরা। দুই থানার আইনি জটিলতা কাটাতে দৌড়া-দৌড়ি করতে হয় স্বজনদের। আর এতেই মৃতদেহ চৌগাছা হাসপাতালে পড়ে ছিলো ২৪ ঘন্টা।
এদিকে স্বামীর মৃত্যুর খবর শুনে গর্ভবতী স্ত্রী রিমা খাতুন অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে ভর্তি করা হয় ভৈরবার একটি ক্লিনিকে। সবমিলিয়ে এক হৃদয়বিদারক পরিস্থিতি তৈরী হয়।
জানতে চাইলে চৌগাছা থানার ওসি সাইফুল ইসলাম সবুজ বলেন, আমরা রাতেই বিষয়টি মহেশপুর থানা পুলিশকে জানিয়েছি। কিন্তু তারা কোনো গুরুত্ব দেয়নি। বজ্রপাতে মৃতুহেদ নিয়ে ঘন্টার পরে ঘন্টা বসে থাকা খুবই দুঃখজনক। রাত ৮টার ঘটনা মহেশপুর থানা জিডি করেছেন পরের দিন সকাল ১০ টায়। যে কারণে এত দেরি হয়েছে।
মহেশপুর থানার ওসি খন্দকার শামিম উদ্দীন বলেন, আমি ট্রেনিংয়ে রয়েছি। তার পরেও চৌগাছা থানার ম্যাসেজ রাতেই রিপ্লাই দিয়েছি। তিনি বলেন, লাশ চৌগাছায়। আমার কারণে দেরি হবে কেনো ? এটা সম্পূর্ণ চৌগাছা থানার ব্যাপার।
দুই থানার টানপড়েনে এক রাত আর একদিন একবার মহেশপুর থানা আর একবার চৌগাছা থানায় দৌড়াতে থাকেন মৃতের আপনজনেরা। এ যেন মরার উপর খাড়ার ঘা ! অবশেষে শনিবার বিকেলে সাংবাদিকরা খোঁজ নেওয়া শুরু করলে টনক নড়ে পুলিশ প্রশাসনের। চৌগাছা থানা পুলিশ লাশ হস্তান্তর করেন স্বজনদের কাছে। পরিসমাপ্তি ঘটে বজ্রপাতে নিহত এক কৃষকের করুণ মৃত্যুর কাহিনী।
প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত