জন্মভূমি ডেস্ক : ঈদুল আজহার আগে সন্তানের ১৫ লাখ টাকার ছাগল কেনাকে কেন্দ্র করে আলোচনায় আসা জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কর্মকর্তা মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন।
দুদক রোববার (২৩ জুন) ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছে। দুদক বলেছে, মতিউর রহমানের অবৈধ সম্পদ অর্জন ও অর্থ পাচারের অভিযোগ তদন্তের সিদ্ধান্ত হয় গত ৪ জুন। এরপর একজন উপপরিচালককে প্রধান করে যে তিন সদস্যের তদন্ত দল গঠন করা হয়েছে, তারা ইতিমধ্যে কাজ শুরু করেছে।
এর আগে রোববার মতিউর রহমানকে তার পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) কাস্টমস, এক্সাইজ ও ভ্যাট আপিল ট্রাইব্যুনালের প্রেসিডেন্ট পদ থেকে তাকে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগে (আইআরপি) সংযুক্ত করা হয়েছে। রোববার (২৩ জুন) মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের জারি করা এক প্রজ্ঞাপনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
এর আগে মতিউর রহমানের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। এরপরই তাকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেয়া হলো। পাশাপাশি সোনালী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ থেকেও বাদ দেওয়া হচ্ছে মতিউর রহমানকে। এরই মধ্যে সোনালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষ মৌখিকভাবে বিষয়টি মতিউর রহমানকে জানিয়েছে। সোনালী ব্যাংকের সিইও আফজাল করিম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
ঈদের ছুটির পর এখনো কর্মস্থলে যোগ দেননি মতিউর রহমান। সকালে ভ্যাট ও কাস্টমস আপিলেট ট্রাইব্যুনালে তাকে পাওয়া যায়নি। কর্মচারীরা জানিয়েছেন, ঈদের ছুটির পর কর্মস্থলে যোগ দেননি মতিউর রহমান।
উল্লেখ্য, ঈদের আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় একটি ছাগলের ভিডিও। ১৭৫ কেজি ওজনের ছাগলটির দাম হাঁকা হয় ১৫ লাখ টাকা। ৫ ফুট দুই ইঞ্চি উচ্চতার খাসিটি বাজারে নিয়ে আসে সাদিক এগ্রো। আলোচিত সেই ছাগলটি কিনে নেন একজন তরুণ। সেই তরুণ মুশফিকুর রহমান ইফাত এনবিআর কর্মকর্তা মতিউর রহমানের ছেলে। পরে তিনি দাবি করেন, ইফাত তার ছেলে নয়।
যদিও অনুসন্ধানে প্রমাণিত হয়েছে, ইফাত তার দ্বিতীয় স্ত্রীর একমাত্র সন্তান। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বাবা-ছেলের একাধিক ছবি ঘুরে বেড়াচ্ছে। এই প্রতারণার তথ্য সামনে আসার পর কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে যেন সাপ বেরিয়ে আসছে। দেশের বিভিন্ন গণমাধ্যমে তার অবৈধ সম্পদের ফিরিস্তি উঠে আসছে একের পর এক। এবার আর তিনি গণমাধ্যমের সামনে মুখ খুলছেন না। অনেকটা চুপসে গেছেন এই কর্মকর্তা।