জন্মভূমি ডেস্ক : নানা জল্পনা কল্পনা শেষে ইতিহাস সৃষ্টি করে নৌকা প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে ১৬ হাজার ১৯৭ ভোটে হারিয়ে জয়ী হয়েছেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জায়েদা খাতুন। তিনিই একমাত্র নারী যিনি গাজীপুর শুধু নয় পুরো দেশের মধ্যে দ্বিতীয় নারী হিসেবে সিটি মেয়র নির্বাচিত হয়েছেন। আর ছেলের পর মা হয়ে একই শহরের মেয়র হবার কীর্তিও গড়েছেন এই গৃহিণী।
তথ্যসূত্র বলছে, স্বশিক্ষিত জায়েদা খাতুন নির্বাচনী হলফনামায় পেশা ‘ব্যবসা’ লেখা হলেও মূলত তিনি ছিলেন একজন গৃহিণী। গাজীপুর সিটি করপোরেশন (গাসিক) নির্বাচনে মা বিকল্প প্রার্থী হিসেবে মেয়র পদে ছেলের সহযোগী হিসেবে গাজীপুর সিটিতে মেয়র পদে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন।
বৃহস্পতিবার (২৫ মে) অনুষ্ঠিত গাজীপুর সিটি নির্বাচনে টেবিল ঘড়ি প্রতীকে তিনি পেয়েছেন দুই লাখ ৩৮ হাজার ৯৩৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আজমত উল্লা খান পেয়েছেন দুই লাখ ২২ হাজার ৭৩৭ ভোট। এর ফলে ১৬১৯৭ ভোট বেশি পেয়ে জায়েদা খাতুন জয়লাভ করেন সকলকে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন।
জানা যায়, দেশের প্রথম নারী সিটি মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী। ২০১১ সালে নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশন নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে জয়ী হন তিনি। ওই নির্বাচনে আইভীর প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বিএনপির তৈমুর আলম খন্দকার। আইভীর পর দ্বিতীয় নারী হিসেবে সিটি করপোরেশনের মেয়র হয়েছেন জায়েদা।
নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী- জায়েদা খাতুনের জন্ম ১৯৬২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। পিতার নাম সামছুল ইসলাম, মাতা আফাতুন। স্থায়ী ঠিকানা কানাইয়া, গাজীপুর সদর, গাজীপুর। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ‘স্বশিক্ষিত’। তার স্বামী মো. মিজানুর রহমান পাঁচ বছর আগে মার গেছেন। তিনি দুই ছেলে ও এক মেয়ের জননী। তার বিরুদ্ধে কোনো মামলার তথ্য নেই।
হলফনামায় তার আয় দেখানো হয়েছে তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকা। অস্থাবর সম্পদ হিসাবে নগদ অর্থ দেখিয়েছেন ৩৫ লাখ টাকা। ব্যবসা ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত অর্থের পরিমাণ ৫০ হাজার টাকা। অনারেবল টেক্সটাইল কম্পোজিট লিমিটেডে শেয়ারমূল্য দেখিয়েছেন দুই লাখ ৫০ হাজার টাকা।
ঘোষিত ফলাফলে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত জায়েদা খাতুনের সবচেয়ে বড় পরিচয় তিনি গাজীপুর সিটির সাবেক মেয়র জাহাঙ্গীর আলমের মা। মনোনয়নপত্র দাখিল করার আগে জায়েদা খাতুনকে রাজনীতির মাঠে দেখা যায়নি। মূলত ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ইমেজকে ভিত্তি করেই তিনি রাজনীতিতে আসেন। জাহাঙ্গীর গাজীপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদকও। তিনি সিটি মেয়র হিসেবে পুরো মেয়াদকাল দায়িত্ব পালন করতে পারেননি।