মনিরামপুর প্রতিনিধি : যশোরের মনিরামপুরে অক্ষরজ্ঞানহীন কৃষক পিতার কাছ থেকে দুই শতকের পরিবর্তে প্রতারনা করে ৩২ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে বড় ছেলে উজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে। শুধু জমি নিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়নি উজ্জল। ওই জমি থেকে কয়েকটি গাছ বিক্রির সময় বাধা দেওয়ায় পিতাকে মারপিটের পর ধারালো অস্ত্র দিয়ে জবাই করার চেষ্টা করা হয়েছে। ফলে পাষন্ড ছেলের হাত থেকে রেহাই পেতে পিতা সোমবার বিকেলে থানায় হাজির হয়ে ছেলের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। অবশ্য পুলিশ বিষয়টি আমলে নিয়ে অভিযোগের সত্যতা সম্পর্কে তদন্ত শুরু করেছেন।
এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার হানুয়ার গ্রামের কৃষক জামাল মোড়লের চার ছেলের মধ্যে সবার বড় উজ্জল হোসেন। সে বিয়ের পর আলাদা হয়ে যায়। স্ত্রী এবং ছোট তিন ছেলেকে নিয়ে পিতা জামাল মোড়ল অপরের জমি বর্গা নিয়ে চাষাবাদ এবং দিনমজুর গিরি করে অভাব অনটনের মধ্যে সংসার চালিয়ে আসছে। পিতা জামাল মোড়ল জানান, মাঠের জমিতে স্যালো মেশিন স্থাপনের জন্য কয়েকমাস আগে বড় ছেলে উজ্জল হোসেন তার কাছে দুই শতক জমি দাবি করেন।ফলে ছেলের সুখের আশায় জামাল মোড়ল গত জানুয়ারি মাসে মনিরামপুর সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে গিয়ে দুই শতক জমি বড় ছেলের নামে রেজিষ্ট্রি(টিপ স্বাক্ষর) করে দেন।
জামাল মোড়ল অভিযোগ করেন, মাঠের ওই জমি থেকে বড় বড় বেশ কয়েকটি গাছ গোপনে বিক্রি করে দেন বড় ছেলে উজ্জল হোসেন। রোববার দুপুরে ওই গাছ কাটার সময় খবর পেয়ে জামাল মোড়ল বাধা দেয়। অভিযোগ রয়েছে এ সময় বড় ছেলে উজ্জল হোসেন তার পিতাকে জানান, ৩২ শতক এ জমির মালিক সে নিজেই। তার দাবি ৩২ শতক জমি তার পিতা তার নামে রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছে। অভিযোগ রয়েছে গাছ কাটার সময় বাধা দেওয়ায় উজ্জল হোসেন তার পিতাকে বেধড়ক মারপিট করে। জামাল মোড়ল জানান, দুই শতকের পরিবর্তে ৩২ শতক প্রতারনা করে রেজিষ্ট্রি করেই ক্ষ্যান্ত হয়নি বড় ছেলে। গোপনে গাছ কাটার সময় বাধা দেওয়ায় মারপিটের পর ধারালো দা দিয়ে জবাই করার জন্য এগিয়ে আসলে পিতা সেখান থেকে দৌড়ে জীবন রক্ষা করেন। এ ব্যাপারে প্রতিকার চেয়ে জামাল মোড়ল সোমবার বিকেলে মনিরামপুর থানায় বড় ছেলে উজ্জল হোসেনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেন। তবে পিতাকে মারপিট এবং খুনের চেষ্টার অভিযোগ অস্বীকার করে বড় ছেলে উজ্জল হোসেন জানান, পিতা সজ্ঞানে তার নামে ৩২ শতক জমি রেজিষ্ট্রি করে দিয়েছে। মনিরামপুর থানার ওসি(তদন্ত) গাজী মাহাবুবুর রহমান জানান, অভিযোগটি আমলে নিয়ে তদন্ত শুরু করা হয়েছে। সত্যতা পেলে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।