
জঙ্গিবাদের অপতৎপরতা থেকে বাংলাদেশ মুক্ত নয়। জাতীয় রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির কারণে বাংলাদেশেও জঙ্গিবাদের বিস্তার ঘটেছে। শক্তিশালী অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক নেটওয়ার্কের মধ্য দিয়েই এই তরুণদের জঙ্গিবাদে যুক্ত করা হয়েছে।
দুই দশকের বেশি সময় ধরে ইসলামের নামে জঙ্গিদের উত্থান সারা বিশ্বেই উদ্বেগের কারণ হয়ে আছে। বাংলাদেশেও হুজি, জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এমন সব নামে জঙ্গিরা তৎপরতা চালিয়েছে। তাদের হামলায় বহু নিরীহ মানুষের প্রাণ গেছে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীরও অনেকে প্রাণ হারিয়েছেন। বর্তমানে নতুন নামে জঙ্গি সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ডের যে খবর পাওয়া যাচ্ছে, তাতে আতঙ্কিত হওয়ার যথেষ্ট কারণ আছে। সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো।
সম্প্রতি বান্দরবানের থানচি উপজেলার দুর্গম পাহাড়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনীর অভিযানে ২০ জনকে গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতার ওই ২০ জনের মধ্যে ১৭ জন নতুন জঙ্গি সংগঠন জামাতুল আনসার ফিল হিন্দাল শারক্বিয়ার সদস্য। অন্য তিনজন পাহাড়ি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্টের (কেএনএফ) সদস্য। গ্রেফতার হওয়া অন্য ১৬ জনের অভিভাবকরা বলেছেন, জঙ্গিদের দাওয়াতি ফাঁদে পড়ে তাঁদের সন্তানরা ঘর ছেড়েছে। অপরাধ বিশ্লেষকরা বলছেন, জঙ্গিরা সহজ-সরল শিক্ষার্থীসহ সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষকে দলে ভেড়াচ্ছে। এটা নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে এই প্রক্রিয়ায় জঙ্গিরা সাংগঠনিকভাবে শক্তি সঞ্চয় করতে থাকবে।
তরুণদের জঙ্গি ফাঁদে ফেলতে অনেক শীর্ষ পর্যায়ের জঙ্গিনেতা নেপথ্যে থেকে তৎপর। এসব তথ্য থেকে এটা স্পষ্ট হয়েছে যে দেশের জঙ্গি তৎপরতা থেমে নেই। সময় ও সুযোগের অপেক্ষায় রয়েছে জঙ্গিগোষ্ঠীগুলো। অতীতে দেখা গেছে, রাজনৈতিক উত্তাপ যখন তীব্র হয় তখন মাথাচাড়া দিয়ে ওঠে জঙ্গিবাদ। এবারও যে তার ব্যতিক্রম হবে না, সে আভাসও পাওয়া যাচ্ছে।
জঙ্গিবাদের বিস্তারের নেপথ্যে অর্থের জোগান একটি বড় বিষয় হিসেবে কাজ করছে। অর্থায়নের উৎস বন্ধ করা গেলে জঙ্গি তৎপরতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। আমরা চাই, দেশে শান্তি ও স্থিতিশীলতা বিরাজ করুক। কোনো অবস্থায়ই জঙ্গিবাদ যেন সুযোগ না পায়।