জন্মভূমি ডেস্ক : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, ‘জনবান্ধব পুলিশ যেন বাস্তবে হয়, এটা যেন শুধু কাগজ-কলমে না থাকে, সেটা করতে বলা হয়েছে। থানা পর্যায়ে লোকজন অনেক সময় বিভিন্ন কাজে যান। তাদের সমস্যা সবসময় সমাধান করতে পারেন না পুলিশ, সবসময় সম্ভবও নয়। সেক্ষেত্রে তাদের যেন বুঝিয়ে বলা হয়, কীভাবে সমস্যা সমাধান করা যায়।’
বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) ডিএমপি সদর দফতরে পুলিশ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
বিগত সময়ে পুলিশ বাহিনীর অনেক ক্ষতি হয়েছে, যে কারণে তাদের কাজে প্রতিবন্ধকতা দেখা দিচ্ছে উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘তাদের জনবান্ধব হয়ে পুরনো ফর্মে কাজে ফিরে আসতে হবে।’
তিনি বলেন, ‘এখন তাদের মনকে উজ্জীবিত করে তারা কীভাবে তাদের পুরনো গৌরবটা ফিরে পায়, সেটাই তাদের করতে বলা হয়েছে।’
ট্রাফিক সমস্যা কীভাবে উন্নত করা যায়, মতবিনিময় সভায় সেটা নিয়েও আলোচনা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা। তিনি বলেন, ‘চাঁদাবাজি কীভাবে বন্ধ করা যায়, সেটা নিয়েও বলা হয়েছে। চাঁদাবাজি যদি বন্ধ হয় তাহলে জিনিসপত্রের দাম সহনীয় পর্যায়ে চলে আসবে। চাঁদাবাজি যেন না হয়, ঘুষ এবং দুর্নীতি যে আমাদের সমাজটাকে গ্রাস করে নিয়েছে। এসব কীভাবে বন্ধ করা যায় সেসব নিয়ে কথা হয়েছে।’
‘বৈঠকে মূলত আলোচনা হয়েছে যে, পুরনো ফর্মে কত দ্রুত পুলিশ ফিরে যেতে পারে, সে বিষয়ে। তারা যেন জনবান্ধব পুলিশ হতে পারে। সবার আশা, পুলিশ যেন জনবান্ধব হতে পারে’, বলছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।
সারা দেশে যেসব মামলা হচ্ছে, সেখানে শত শত আসামি করা হচ্ছে। অনেকক্ষেত্রে মামলার বাদীও জানেন না কত আসামি, কারা আসামি— এমন প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘এখন পুলিশ কোনও মামলা দিচ্ছে না। আগে পুলিশ ১০ জনের নাম দিয়ে অজ্ঞাত হাজার হাজার আসামি করেছে। এখন কিন্তু সাধারণ মানুষ মামলা দিচ্ছে। পুলিশ যদি এমন মামলা দেয় আমাকে বলবেন।’
এখন যেসব মামলা হচ্ছে, এগুলো করছেন সাধারণ মানুষ উল্লেখ করে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, ‘এ বিষয়ে সাধারণ মানুষকে বলতে হবে যে, তারা যেন অরিজিনাল ক্রিমিনালকে (মামলায়) আসামি করেন। যারা দোষী, (মামলায়) যেন শুধু তাদেরই নাম দেওয়া হয়। অন্য কারও নাম যেন নাম দেওয়া না হয়। অন্য কারো নাম দিলে সেটা তদন্ত করতেও সময় বেশি যাবে।’
নিরীহ লোক যেন হেনস্থার শিকার না হন, সে বিষয়ে সতর্ক করে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘আজও ডিবি-কে বলা হয়েছে, তারা তাদের নিজেদের পরিচয় দিয়ে এবং আসামি বা অপরাধীর পরিচয় নিশ্চিত হয়ে তাদের ধরেন। আমি শুধু বলবো ক্রিমিনালকে ধরতে, সাধারণ মানুষকে নয়।’
অপর এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, ‘কেউ অন্যায় করলে তাকে আইনের হাতে তুলে দিতে হবে। নিজের হাতে আইন তুলে নেওয়া যাবে না। এজন্য জনসচেতনতা বাড়াতে হবে।’