
ডেস্ক রিপোর্ট : বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের দীর্ঘ ১৭ বছর পর স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের দিনে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নতুন এক আলোচনার জন্ম দিয়েছে তাঁর কন্যা জাইমা রহমানের একটি সেলফি। সেই ছবিতে জাইমা রহমানের হাতে থাকা একটি বইকে কেন্দ্র করে নেটিজেনদের মধ্যে নানা আলোচনা দেখা যাচ্ছে।
জাইমা রহমানের শেয়ার করা সেই সেলফিতে দেখা যায় তিনি ‘দ্য পেঙ্গুইন বুক অব বেঙ্গলি শর্ট স্টোরিজ’ বইটি বাংলাদেশ বিমানের উড়োজাহাজে তাঁর আসনের পাশেই রেখেছেন। বইটি সম্পাদনা করেছেন ভারতীয় অনুবাদক অনুরাভা সিনহা।
পেঙ্গুইন মূলত একটি যুক্তরাজ্যভিত্তিক বিশ্ববিখ্যাত প্রকাশনা সংস্থা। কিন্তু ব্যবসায়িক ও ভৌগোলিক কারণে দক্ষিণ এশিয়ার জন্য তারা ভারত থেকে বই মুদ্রণ ও সরবরাহ করে থাকে।
আলোচিত এই সংকলনটি মূলত বাংলা সাহিত্যের এক শতাব্দীর সেরা ছোটগল্পগুলোর ইংরেজি অনুবাদ। সংকলনটিতে ব্রিটিশ আমল থেকে শুরু করে বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধ পর্যন্ত দীর্ঘ সময়ের পরিক্রমা উঠে এসেছে। এতে স্থান পেয়েছে ভূমি যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, দেশভাগ এবং সামাজিক বাস্তবতার নিখুঁত চিত্র।
ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের হাত ধরে বাংলায় ছোটগল্পের আগমন ঘটেছিল এবং বাঙালি লেখকেরা দ্রুতই এই শিল্পরূপটিকে আপন করে নিয়েছিলেন। বিংশ শতাব্দীর মধ্যে অসংখ্য সাহিত্য পত্রিকা ও সাময়িকীর প্রসারের ফলে লাখ লাখ মানুষ এই গল্পগুলো পরম আগ্রহে পড়তে শুরু করে।
লেখকেরা তাঁদের সময়ের অস্থিরতাকে ধারণ করে এক প্রচণ্ড প্রাণশক্তি নিয়ে শব্দের এই ক্ষুধার প্রতি সাড়া দিয়েছিলেন। এই গল্পগুলোতে ভূমি যুদ্ধ, দুর্ভিক্ষ, বর্ণপ্রথা, ধর্মীয় সংঘাত, পিতৃতন্ত্র, দেশভাগ এবং বাংলাদেশের স্বাধীনতাযুদ্ধের প্রেক্ষাপট উঠে এসেছে। এই পরিবর্তনশীল ভৌগোলিক সীমানার মাঝে লেখকেরাও অন্তর্মুখী হয়েছেন, নতুন সাহিত্যশৈলী উদ্ভাবন করেছেন এবং সামাজিক বাস্তববাদ, রাজনৈতিক কথাসাহিত্য ও অন্তরঙ্গ পারিবারিক আখ্যানের সম্ভাবনাকে প্রসারিত করেছেন।
ইংরেজিতে প্রথমবারের মতো এই সংকলনটি এক শতাব্দীর অসাধারণ সব গল্পকে একত্র করেছে। গোপনে মাছ খাওয়া এক নারী থেকে শুরু করে এক বয়স্ক ফুটবলারের দুঃখ, মধ্যবিত্ত ইউনিয়ন প্রতিনিধির উদ্বেগ থেকে পরশপাথর খুঁজে পাওয়া এক আইনজীবী—এটি এমন এক সংগ্রহ, যা জীবনের সমস্ত প্রতিকূলতা ও আনন্দকে শিল্পে রূপ দেওয়ার মহিমা প্রচার করে।

