জন্মভ‚মি রিপোর্ট
জাতীয় পার্টির মহানগর কমিটি’র সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও খুলনা চেম্বার অব কমার্সের সাবেক সভাপতি শেখ আবুল কাশেম ও তার গাড়ির ড্রাইভার মিকাইল হত্যা মামলার সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আজ বুধবার দিন ধার্য রয়েছে। গত ২৬ জানুয়ারি নির্ধারিত দিনে চার জন সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মোঃ সাইফুজ্জামান হিরো পুনরায় দিন ধার্য করেছিলেন। উচ্চ আদালতের আদেশে প্রায় এক যুগ মামলার কার্যক্রম স্থগিত থাকার পর আবার বিচার কাজ শুরু হয়েছে। তিন দফায় স্থগিতাদেশের আগ পর্যন্ত ১৮ জন সাক্ষী আদালতের বিভিন্ন কার্যদিবসে সাক্ষ্য দিয়েছিলেন। চার্জশিটভুক্ত ছয় আসামি গ্রেফতারি পরোয়ানা মাথায় নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন।
তৎকালীন মহানগর হাকিম মোঃ ছবির আহম্মেদ, মোঃ আব্দুল হান্নান ও মোঃ ফেরদৌস মোল্লা এবং উপ-পরিদর্শক মোঃ মোস্তফা কামালের আজ সাক্ষ্য প্রদাণের কথা রয়েছে। চার সাক্ষীর মধ্যে মোঃ ছবির আহম্মেদ সেতু বিভাগের অতিঃ সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন শেষে অবসর জীবন কাটাচ্ছেন। তিনি পলাতক আসামি মোঃ তারেকের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি রেকর্ড করেছিলেন। অন্য তিন জনের অবস্থান ও বর্তমান কর্মস্থল সম্পর্কে স্থানীয় প্রশাসন অবগত ছিলেন না। যে কারণে তৎকালীন ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ আব্দুল হান্নান এবং মোঃ ফেরদৌস মোল্লার প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিবের মাধ্যমে সমন ইস্যু করা হয়েছে। তখনকার এসআই মোঃ মোস্তফা কামালের প্রতি খুলনা মেট্রোপলিটন পুলিশ-কেএমপি কমিশনারের মাধ্যমে সমন ইস্যু করা হয়। ট্রাইব্যুনালের দায়িত্বশীল একটি সূত্র দৈনিক জন্মভ‚মিকে এ তথ্য জানান।
২৫ এপ্রিল, ১৯৯৫। দুপুর প্রায় দু’টা। স্যার ইকবাল রোডস্থ ব্যাংক অব স্মল ইন্ডাস্ট্রিজ কমার্স বাংলাদেশ লিঃ এর ম্যানেজারের সাথে কথা বলে বিদায় নেন আবুল কাশেম। ব্যাংকের সামনের সড়কে তার সুবারো কোম্পানির প্রাইভেট কার, ঢাকা মেট্রো ‘ক’ ০৩-৪৩৭৩। সেখানেই ওৎ পেতে ছিল পাঁচ-ছয় জন ঘাতক। তাদের হাতে ছিল আগ্নেয়াস্ত্র, বয়স ২০ থেকে ৩০। আবুল কাশেম গাড়ীর পেছনের ছিটে উঠে বসার পর শ্যুটার তার দিকে কাটা রাইফেল তাক করে। শুরু করে গুলিবর্ষন। আততায়ীর রাইফেলের কয়েকটি বুলেট গাড়ীর কাঁচ ছিদ্র করে কশেমের পিঠে বিদ্ধ হয়। ঘাতক দলের আরেক সদস্য ড্রাইভার মিকাইলের কোমর ও পিঠে গুলি করে। এরপর তারা গুলি করতে-করতে পিকচার প্যালেস সিনেমা হলের সামনের সড়ক দিয়ে চলে যায়। পরবর্তিতে পুলিশ অকুস্থল থেকে গুরুতর জখম দু’জনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মৃত বলে ঘোষনা করেন। ওই জোড়া খুনের ঘটনায় নিহত কাশেমের নিকট আত্মীয় মোঃ আলমগীর খুলনা সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। এজাহার থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
ট্রাইব্যুনাল সূত্র জানান, চার্জশিটভুক্ত আসামি জাপা মনোনীত মেয়র প্রার্থী মুশফিকুর রহমান মুশফিক, তরিকুল হুদা টপি, মিল্টন ওরফে আনিছুর রহমান, মফিজুর রহমান মফিজ, ওয়াছিকুর রহমান ওয়াছিক এবং মোঃ তারেক পলাতক রয়েছে। অভিযুক্ত সাবেক এমপি ও নিউ মার্কেট দোকান মালিক সমিতি’র সভাপতি আব্দুল গফফার বিশ্বাস জামিনে আছেন। অন্য দু’ আসামি সৈয়দ মনিরুল ইসলাম মনি এবং ইখতিয়ার উদ্দীন বাবলু মৃত্যুবরণ করেছেন।