
আগামী ২৯ জুন ঈদুল আজহা। আমরা পবিত্র জিলহজ মাস অতিবাহিত করছি। আরবি বারো মাসের সর্বশেষ মাস জিলহজ মাস। এ মাসটি বছরের চারটি সম্মানিত মাসের একটি। অনেক বৈশিষ্ট্যের অধিকারী এ মাস। এ পবিত্র মাসের ১০ তারিখে কোরবানির ঈদ পালনের মাধ্যমে বিশ্বের ধর্মপ্রাণ মুসলমানগণ আল্লাহর প্রিয় বান্দা হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাইল (আ.)এর অতুলনীয় আনুগত্য এবং মহান ত্যাগের পুণ্যময় স্মৃতি বহন করে।
মহানবী (সা.) বিভিন্ন সময় কোরবানির বিষয়ে তার উম্মতকে নসিহত করেছেন। কারো হৃদয়ে যদি এমন ধারণার উদ্রেক হয় যে, প্রতি বছরই তো কোরবানি দিয়ে যাচ্ছি এবার করোনার জন্য না হয় দিলাম না, এমন চিন্তাভাবনা মোটেও ঠিক নয়, কেননা কোরবানি শুধু একবারের জন্য নয় বরং তা সারা জীবনের জন্য। হাদিস থেকে জানা যায় মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘হে লোক সকল! জেনে রাখ, প্রত্যেক পরিবারের পক্ষে প্রত্যেক বছরই কোরবানি করা আবশ্যক’ (আবু দাউদ ও নাসাঈ)।
দয়াময় আল্লাহর কাছে আমাদের প্রার্থনা, তিনি যেন আমাদের সকলকে জিলহজ মাসের বরকত থেকে কল্যাণ মতি হওয়ার সৌভাগ্য দিন, আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদের কোরবানি তিনি গ্রহণ করে নেন। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি সামর্থ্য লাভ করে অথচ কোরবানির আয়োাজন করেনি, সে যেন আমাদের ঈদ গাহের কাছে না আসে’ (ইবনে মাজাহ)। হজরত ইবনে উমর (রা.) বলেন, মহানবী (সা.) মদীনায় ১০ বছর অবস্থান করেছেন এবং বরাবর কোরবানি করেছেন (তিরমিযি)। মহানবী (সা.) বলেছেন, কোরবানির দিনে কোরবানি করাই সবচেয়ে বড় ইবাদত। কোরবানির জন্তুর শরীরের প্রতিটি পশমের বিনিময়ে কোরবানিদাতাকে একটি করে সওয়াব দান করা হবে। কোরবানির পশুর রক্ত জবাই করার সময় মাটিতে পড়ার আগেই তা আল্লাহর দরবারে কবুল হয়ে যায় (মেশকাত)। আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির জন্য মুসলিম উম্মাহ প্রতি বছর হজব্রত পালন ও পশু কোরবানি করে থাকে। হজরত ইব্রাহিম (আ.) ও তার পুরো পরিবারের নজিরবিহীন কোরবানির ইতিহাস মানুষকে যে ত্যাগের শিক্ষা দেয় তাতে উদ্বুদ্ধ হয়ে একজন মুমিন তার সবকিছুই আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য উৎসর্গ করতে সদা প্রস্তুত থাকে। আল্লাহর কাছে আমাদের প্রার্থনা, তিনি যেন সকলকে জিলহজ মাসের বরকত থেকে কল্যাণ মতি হওয়ার সৌভাগ্য দিন, আমাদের পাপসমূহ ক্ষমা করুন এবং আমাদের কোরবানি তিনি গ্রহণ করে নেন।