ডেস্ক রিপোর্ট : যশোরের ঝিকরগাছায় নিষিদ্ধ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাশেম শিকদার ও তার ছেলে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ইমরান শিকদার এখনো চাঁদাবাজি ও সন্ত্রাসী কার্যকলাপ চালিয়ে যাচ্ছে প্রকাশ্যে। তাদের বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ করেও কোন কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহন করেননি পুলিশ।
কাশেম শিকদারের বাবার নাম হাকিম শিকদার। তাদের বাড়ি নাভারণ ইউনিয়নের রঘুনাথপুর ডাংগী গ্রামে। কাশেম নাভারণ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক মেম্বার ও একই ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। তার ছোট ছেলে ইমরান শিকদার যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক। ইমরানের বিরুদ্ধে পূর্বে যশোরে পুলিশের ওপর হামলার মামলা এবং শার্শার দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামের তোজাম হত্যা মামলার প্রধান আসামি ছিল।
অভিযোগে জানা যায়, বিগত ১৫ বছর আওয়ামী লীগের শাসনামলে আলোচিত কাশেম শিকদার ও ইমরান শিকদার সশস্ত্র দলবল নিয়ে ঝিকরগাছার নাভারণসহ আশপাশের এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছিল। তাদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল সাধারণ মানুষ। চিহ্নিত এই সন্ত্রাসীদের অত্যাচারের সর্বোচ্চ শিকার হয়েছিল বিএনপির নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা। অনেককে তারা বছরের পর বছর বাড়িছাড়া করে রেখেছিলেন। সেসময় নাভারণ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি কাশেম শিকদারের প্রধান কাজ সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি, চুরি-ডাকাতি, জমি দখল, ভাড়ায় মাস্তানি, ব্যবসায়ীদের জিম্মি করে চাঁদা আদায় এবং প্রবাসী পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে অর্থ আদায়সহ নানা অপকর্মে লিপ্ত ছিল। শার্শা উপজেলার নাভারণ সাতক্ষীরা মোড়, ঝিকরগাছার নাভারণ পুরাতন বাজার, রঘুনাথপুর ডাঙ্গী ও বাগ গ্রামে কাশেম বাহিনী ছিল বেপোরোয়া।
কাশেম- ইমরানের এসব অপকর্ম নিয়ে গত ৭ অক্টোবর স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশিত হয়। সংবাদ প্রকাশের পর কাশেম-ইমরান কিছুদিন গা ঢাকা দিয়েছিলেন। বর্তমানে এলাকায় ফিরে এসে আবারও বেপরোয়া হয়ে উঠেছে কাশেম-ইমরান বাহিনী। ফলে নতুন করে আতঙ্ক দেখা দিয়েছে সাধারণ মানুষের মধ্যে।
স্থানীয় বাসিন্দার জানান, কাশেম-ইমরান দিনের বেলায় থাকছেন শার্শার নাভারণ সাতক্ষীরা মোড়ে অবস্থিত সোহাগ পরিবহণের কাউন্টারে। এবং সন্ধ্যার পর প্রকাশ্যে দলবল নিয়ে এলাকায় মহড়া দিতে দেখা যায় তাদেরকে। পুলিশকে বিষয়টি একাধিকবার জানানোর সত্ত্বেও রহস্যজনক ভূমিকা পালন করছে। যা নিয়ে জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
রঘুনাথপুর বাগ গ্রামের ভুক্তভোগী রেজাউল ইসলাম জানান, বিগত আওয়ামী লীগের আমলে কাশেম শিকদারের নেতৃত্বে তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী অর্থের বিনিময়ে তার ভিটেবাড়ির তিন শতক জায়গা আওয়ামী লীগ নেতা হায়দারকে দখল করে দেয়। অভিযুক্ত কাশেম শিকদারের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করলে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
নিষিদ্ধ ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ নেতা কাশেম ও ছাত্রলীগ নেতা ইমরান শিকদারকে কেন গ্রেপ্তার করছেন না এমন প্রশ্নের জবাবে ঝিকরগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবলুর রহমান খান জানান, কাশেম-ইমরানের বিরুদ্ধে তদন— চলছে দ্রুতই তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। উল্লেখ্য- গত দুই মাস ধরে পুলিশের কাছে তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিলেও পুলিশ কোন ব্যাবস্থা গ্রহন করেননি।
ঝিকরগাছায় কাশেম-ইমরান বাহিনী ফের বেপরোয়া: পুলিশ নিরব

Leave a comment