ঝিনাইদহ : লাল-সবুজ পতাকা হাতে অতন্দ্র প্রহরী হয়ে রেলগেট সামলাচ্ছেন ফাতেমা খাতুন সুমি (৩২)। তিনি জনসাধারণের জান-মালের নিরাপত্তা ও নিরবচ্ছিন্ন রেল যাত্রা নিশ্চিত করে চলেছেন দিনের পর দিন। প্রতিদিন সকাল ৬টা থেকে সন্ধা ৬টা পর্যন্ত যাত্রিবাহি ও মালবাহি ট্রেন আসা যাওয়ার সময় রেলগেটটি নিরাপদ রাখতে দায়িত্ব পালন করছেন সাহসী এই নারী গেটম্যান। আর গত ৩ বছরের দায়িত্বে তিনি একটি দিনও ছুটি কাটাননি। ফাতেমা খাতুন সুমি সাব্দালপুর বাজারের ইদ্রিস আলীর মেয়ে। তার স্বামী মনিরুল ইসলাম একজন ইলেকট্রিসিয়ান। এই দম্পতির ঘরে আছে দুই ছেলে। ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরের সাব্দালপুর টি-৬০ রেলগেট। যে রেল গেটের দুই পাশের রাস্তায় নেই কোন স্প্রিড ব্রেকার। এমনকি নেই কোনো রেল ব্যারিকেটও। অথচ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যাস্ততম এ রেলগেটটিতে সতর্কতার সঙ্গে সার্বক্ষণিক নিরাপত্তা দিয়ে চলেছেন সুমি। কারণ তিনিই এ রেলগেটের গেটম্যান। ট্রেন আসার সিগনাল পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই পথচারীদের সতর্ক করে সবুজ পতাকার মাধ্যমে ট্রেনকে সংকেত দেন লাইন ক্লিয়ার আছে। সংকেত দেখে পথচারীরাও দুই দিকে ট্রেনটি অতিক্রম করা পর্যন্ত অপেক্ষা করেন। এই রেলগেটটি স্টেশনের তালিকাভুক্ত নয়। যে কারণে সেখানে নেই কোনো প্রতিবন্ধক ও গেটম্যানের দাঁড়ানোর ঘর। তাই রোদ, বৃষ্টি ও ঝড়ে খোলা আকাশের নিচে দাঁড়িয়েই গত তিন বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন এই নারী গেটম্যান। দ্রুত রেলব্যারিকেট ও গেটম্যানের ঘর করার দাবি জানিয়েছেন স্থানীয়রা। গেটকিপার ট্রাফিক ফাতেমা খাতুন সুমি জানান, ব্যারিকেড না থাকায় দুর্ঘটনা এড়াতে আরও বেশি সতর্ক থেকে দায়িত্ব পালন করতে হয়। তবে দাঁড়ানোর জন্য কোনো ব্যবস্থা থাকলে ভালো হতো। ঝিনাইদহ সাফদারপুর সহকারি ষ্টেশন মাস্টার গোলাম রসুল জানান, উন্মুক্ত গেটটিতে অনেক সতর্ক থেকে ও সঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন সুমি। গেট ব্যারিয়ারের জন্য উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানাবো। ২০১৯ সালে ৩০ এপ্রিল গেট কিপার ট্রাফিক পদে বাংলাদেশ রেলওয়েতে যোগদান করেন ফাতেমা খাতুন সুমি। প্রথমে তিনি কোটচাঁদপুর রেলষ্টেশনে যোগদান করলেও বর্তমানে সাফদারপুর ষ্টেশনে ডেপুটেশনে আছেন। এখানে ৩ বছর দায়িত্ব পালনকালে তিনি একটি দিনও ছুটি কাটাননি।