জন্মভূমি ডেস্ক : সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফগামী দুটি ট্রলার ও কয়েকটি স্পিডবোট লক্ষ্য করে মিয়ানমারের ওপার থেকে গুলিবর্ষণ করা হয়েছে। এর ফলে টেকনাফগামী ট্রলার ও স্পিড বোটগুলো পুনরায় সেন্টমার্টিনে ফিরে যায়।
আজ মঙ্গলবার (১১ জুন) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকায় এ গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। এ নিয়ে গত সাত দিন ধরে চলছে একই ধরনের ঘটনা।
সেন্টমার্টিন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে সেন্টমার্টিন থেকে টেকনাফগামী দুটি ট্রলার ও কয়েকটি স্পিডবোটকে লক্ষ্য করে মিয়ানমার থেকে আবারও গুলি করা হয়। এতে ওই নৌযানগুলো টেকনাফ না গিয়ে আবার সেন্টমার্টিনে ফিরে আসে। গত সাত দিন ধরে মিয়ানমার থেকে এভাবে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। এতে আতঙ্কে টেকনাফ-সেন্টমার্টিনে যাত্রী ও পণ্যবাহী সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এ অবস্থায় প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনের বাসিন্দারা চরম সংকটে রয়েছেন।
জানা যায়, এই দ্বীপে বসবাস করেন ১০ হাজারের বেশি বাসিন্দা। বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হওয়ায় বাসিন্দাদের খাদ্য ও নিত্যপণ্য আসে টেকনাফ থেকে। আর নৌযানই যাতায়াতের একমাত্র মাধ্যম। টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে প্রতিদিন ট্রলারে করে দ্বীপের বাসিন্দারা আসা-যাওয়া করে। একই সঙ্গে খাদ্যপণ্য পরিবহনেও ব্যবহৃত হয় ট্রলার।
চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি থেকেই সংঘাত চলছে মিয়ানমারের অভ্যন্তরে। এর জেরে এখন টেকনাফ-সেন্টমার্টিন নৌরুটে নাফ নদীর নাইক্ষ্যংদিয়া পয়েন্টে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া হচ্ছে গুলি। এরই মধ্যে গেল ৫ জুন সেন্টমার্টিন থেকে ফেরার সময় নির্বাচনী সরঞ্জাম ও কর্মকর্তাদের বহনকারী নৌযানে গুলি ছোঁড়া হয় মিয়ানমার থেকে। এতে ট্রলারটি ক্ষতিগ্রস্ত হলেও কেউ হতাহত হননি। এরপর ৮ জুন পণ্যবাহী ট্রলারে আবারও গুলি করা হয়। এতে কেউ হতাহত না হলেও ট্রলারটিতে সাতটি গুলি লাগে।
দ্বীপের বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, টেকনাফ থেকে সেন্টমার্টিন যাওয়ার পথে নাফ নদীর মোহনা শেষে নাইক্ষ্যংদিয়া এলাকা দিয়ে পার হওয়ার সময় মিয়ানমারের থেকে দ্বীপে যাতায়াত করা বোটগুলোকে লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হয়। যার কারণে মানুষ প্রাণের ভয়ে পারাপার হতে চায় না। তবে মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী, নাকি বিদ্রোহীরা গুলি চালাচ্ছে— তা নিশ্চিত করতে পারেনি কেউ। গত কয়েক দিনে ২-৩টি বোটে এ রকম আক্রমণ চালানো হয়। পরে বোট চলাচল বন্ধ করে দেন মালিকরা।
সেন্টমার্টিন স্পিড বোট মালিক সমবায় সমিতির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম বলেন, বোটে প্রকাশ্যে গুলি করতে দেখে মানুষ ভয়ে আর এ রুটে যাচ্ছেন না। তাছাড়া, ওই পথ ছাড়া সেন্টমার্টিনে আসার বিকল্প কোনও ব্যবস্থা বা রুটও নেই। প্রতিদিন সেন্টমার্টিন-টেকনাফ নৌ রুটে ৪টি ট্রলার ও ৬টি স্পিড বোটের মাধ্যমে শতাধিক মানুষ আসা-যাওয়া করার পাশাপাশি খাদ্য ও নিত্যপণ্য বহন করা হতো।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইয়ামিন হোসেন বলেন, সম্প্রতি মিয়ানমার থেকে ট্রলার ও স্পিড বোট লক্ষ্য করে গুলি ছোঁড়া হচ্ছে। তাই ওই নৌরুটে নৌযান চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জরুরি ভিত্তিতে শাহপরীর দ্বীপ অংশ থেকে বিকল্প পদ্ধতিতে বঙ্গোপসাগর হয়ে সেন্টমার্টিন যাওয়া যায় কি-না তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।