By using this site, you agree to the Privacy Policy and Terms of Use.
Accept

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • জেলার খবর
    • খুলনা
    • চুয়াডাঙ্গা
    • বাগেরহাট
    • মাগুরা
    • যশোর
    • সাতক্ষীরা
  • ফিচার
  • ই-পেপার
Reading: ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন: অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ মাস, মেলেনি অনেক হিসাব
Share
দৈনিক জন্মভূমিদৈনিক জন্মভূমি
Aa
  • মূলপাতা
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • ই-পেপার
অনুসন্ধান করুন
  • জাতীয়
  • জেলার খবর
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলাধূলা
  • বিনোদন
  • ই-পেপার
Have an existing account? Sign In
Follow US
প্রধান সম্পাদক মনিরুল হুদা, প্রকাশক আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত
দৈনিক জন্মভূমি > জাতীয় > ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন: অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ মাস, মেলেনি অনেক হিসাব
জাতীয়

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন: অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ মাস, মেলেনি অনেক হিসাব

Last updated: 2025/10/25 at 5:13 PM
জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago
Share
SHARE

ডেস্ক রিপোর্ট : অন্তর্বর্তী সরকারের সাড়ে ১৪ মাস অতিবাহিত হয়েছে। গণঅভ্যুত্থানের পর গঠিত এই সরকার কতটা প্রত্যাশা পূরণ করেছে? এ বিষয়ে হতাশাই প্রকাশ করেছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষক, সাংবাদিক, নারী অধিকার কর্মীসহ সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি- পেশার মানুষ।
এই ১৪ মাসে ১৩টি দেশে ১৪ বার সফর করেছেন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এসব সফর থেকে বাংলাদেশ কী পেয়েছে? ব্যবসা-বাণিজ্য, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে কতটা ভূমিকা রেখেছে? বিশেষ করে প্রধান উপদেষ্টার সর্বশেষ রোম সফর নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই।
এই সফরে তিনি কী অর্জন করেছেন? প্রোটোকল অনুযায়ী রোমের মেয়রের অফিসে গিয়ে তিনি বৈঠকে অংশ নিতে পারেন কিনা – এমন প্রশ্নও উঠেছে।
সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ এ বিষয়ে ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, “একটি দেশের শীর্ষ নেতার ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়াটা খুব জরুরি কিনা? উনি একটা মাল্টিলেটারাল বা বহুপাক্ষিক অনুষ্ঠানে গিয়েছেন। এটা ইটালি ও বাংলাদেশের মধ্যে একটা দ্বিপাক্ষিক সফর নয়। এটা নিয়ে মানুষ চিন্তিত।
প্রধান উপদেষ্টা বিভিন্ন ধরনের অনুষ্ঠানে যাচ্ছেন। কিন্তু দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক অনুষ্ঠান সত্যিকার অর্থে খুব কম হচ্ছে। ফলে, এগুলোতে যাওয়া কি ওনার জন্য খুব জরুরি? প্রধান উপদেষ্টার এর চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ কাজ রয়েছে।”
প্রধান উপদেষ্টা দায়িত্ব নেওয়ার পর ভাষণে বলেছিলেন, “বর্তমান সরকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে স্পষ্ট অবস্থান গ্রহণ করেছে।
আমাদের সকল উপদেষ্টা দ্রুততম সময়ের মধ্যে তাদের সম্পদের বিবরণ প্রকাশ করবেন। পর্যায়ক্রমে এটি সকল সরকারি কর্মকর্তাদের ক্ষেত্রেও নিয়মিত ও বাধ্যতামূলক করা হবে।”
কিন্তু ১৪ মাস পার হলেও উপদেষ্টারা সম্পদের হিসাব দেননি। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)-র সম্মাননীয় ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বিষয়টি নিয়ে আক্ষেপ করে বলেছেন, “ঘটনাটা অনেকটা শেখ হাসিনার মতো হলো। কারণ, উনিও উনার নির্বাচনি ইশতেহারে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে, উনার পুরো যে মন্ত্রিপরিষদ হবে, তাদের তথ্য দিবেন বিত্ত-বৈভব ও আয়ের ব্যাপারে এবং উনি সেটা রক্ষা করেননি।
অনেক প্রত্যাশা ছিল যে, বর্তমান সরকার একটা নতুন নজির স্থাপন করবে। কিন্তু দুঃখজনকভাবে সেটাও হয়নি।”
তবে প্রধান উপদেষ্টার সিনিয়র সহকারী প্রেস সচিব ফয়েজ আহমেদ ডয়চে ভেলেকে বলেছেন, “আমি যতদূর জানি অনেক উপদেষ্টাই সম্পদের হিসাব প্রধান উপদেষ্টার কাছে জমা দিয়েছেন। এই সংখ্যাটা অধিকাংশই। তবে এই মুহুর্তে নির্দিষ্ট করে বলা যাচ্ছে না। এখনো তো সময় আছে, প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু কথা দিয়েছেন, ফলে উনি এটা করবেন।”
‘মবসন্ত্রাস’ ও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি
অভ্যুত্থানের পর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি। নির্বাচনের সময় এগিয়ে এলেও আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির কতটা উন্নতি হয়েছে? থামানো গেছে ‘মবসন্ত্রাস’? পরিস্থিতি এমনই যে, গত মাসে রাজবাড়ির গোয়ালন্দে নুরুল হক ওরফে ‘নুরাল পাগলার’ মৃত্যুর পর মরদেহ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয়া হয়েছে। গত ৫ সেপ্টেম্বর নুরাল পাগলার কবর কয়েক ফুট উঁচু থেকে নীচে নামানোসহ কয়েকটি দাবি জানিয়ে ‘ইমান-আকিদা রক্ষা কমিটি’ ও ‘তৌহিদী জনতা’ গোয়ালন্দ বাজারের আনসার ক্লাবে সমাবেশের আয়োজন করে। পরে সেই সভা থেকে কিছু লোক পুলিশের ওপর হামলা চালায়৷ পুলিশ ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-র গাড়ি ভাঙচুর করার পর একদল উচ্ছৃঙ্খল ব্যক্তি নুরাল পাগলার দরবার ও বাড়িতে কয়েক দফা হামলা ও ভাঙচুর চালায়। কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয়া হয় নুরাল পাগলার মরদেহ৷ লাশ কবর থেকে তুলে পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনা তোলপাড় তোলে দেশে-বিদেশে৷ ৬ সেপ্টেম্বর রাতে পুলিশের ওপর হামলা ও গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে মামলা হয়। সেই মামলায় ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। ৮ সেপ্টেম্বর নুরাল পাগলার দরবারে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগে আরেকটি মামলা হয়। ওই মামলায় পুলিশ রিপন রায়সহ ১২ জনকে গ্রেপ্তার করে৷ দুটি মামলাতেই প্রকৃত অপরাধীদের আইনের আওতায় না আনার অভিযোগ রয়েছে৷
দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে বিভিন্ন পর্যায়ে উদ্বেগ থাকলেও অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে অবশ্য দাবি করা হয় পরিস্থিতি অতটা উদ্বেগজনক নয়৷ গত ১৪ জুলাই প্রধান উপদেষ্টার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে অপরাধ সংক্রান্ত কিছু পরিসংখ্যান দিয়ে এমন দাবি করা হয়৷ সেখানে বলা হয়, গত ১০ মাসে (২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত)দেশে ডাকাতি হয়েছে ৬১০টি, দস্যুতা ১,৫২৬টি, খুন ৩,৫৫৪টি, দাঙ্গা ৯৭টি, ধর্ষণ ৪,১০৫টি, এসিড নিক্ষেপ ৫টি, নারী ও শিশু নির্যাতন ১২,৭২৬টি, অহরণ ৮১৯টি, সিঁধেল চুরি ২,৩০৪টি, চুরি ৭,৩১০টি এবং এই সময়ে রুজুকৃত মামলার সংখ্যা ১,৪৪,৯৫৫টি। পরিসংখ্যান পুলিশ সদর দপ্তরকে ‘উদ্ধৃত’ করে
আরো বলা হয়, ২০২৫ সালের প্রথম ছয় মাসে দেশে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ৩৬৭টি, খুন হয়েছে ১,৯৩৩টি এবং ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে ২,৭৪৪টি, এছাড়া নারী নির্যাতন ৬,১৪৪টি এবং শিশু নির্যাতন হয়েছে ২,১৫৯টি। সেই ফেসবুক পোস্টে আরো দাবি করা হয়, ২০২৪ সালে সারা দেশে ডাকাতি হয়েছিল ৪৯০টি, খুন ৪,১১৪টি, ধর্ষণ ৪,৩৯৪টি, নারী নির্যাতন ১০,১৯৮টি এবং শিশু নির্যাতন ২,৯৬৪টি। এসব পরিসংখ্যান দিয়ে ‘গত ১০ মাসে গুরুতর অপরাধের প্রবণতা স্থিতিশীল রয়েছে’ বলেও সেখানে দাবি করা হয়৷ তবে জুলাই অভ্যুত্থানের পর পুলিশের সার্বিক পরিস্থিতি আইন-শৃঙ্খলা সংক্রান্ত প্রকৃত তথ্য সংরক্ষণে অনুকূল ছিল কিনা সে বিষয়ে বিশ্লেষকদের সন্দেহ রয়েছে৷
আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অন্তর্বর্তী সরকার কতটা সফল – এমন এক প্রশ্নের জবাবে পুলিশের সাবেক আইজিপি আশরাফুল হুদা ডয়চে ভেলেকে বলেন, “আইন-শৃঙ্খলার যতটা উন্নতি হওয়ার কথা ছিল, সেটা হয়নি। পুলিশের মনোবল ফেরাতে ঊর্ধ্বতনদের যে ধরনের উদ্যোগ নেওয়ার দরকার ছিল, সেটা নেওয়া হয়নি।আমি মনে করি, একটা নির্বাচিত সরকার এলে ধীরে ধীরে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হবে।”
আলোচনায় বিচারাঙ্গন
গত ১৪ মাসে বিচারাঙ্গন কতটা স্বাধীন হয়েছে? নিয়োগ বা অবসর কি সঠিক নিয়মে হচ্ছে? গ্রেপ্তারকৃতরা কি যথাযথভাবে জামিনের অধিকার পাচ্ছেন? সুপ্রিমকোর্টের প্রবীণ আইনজীবী জেড আই খান পান্না মনে করেন , “আইন আছে, কিন্তু আইনের শাসন নেই। বিচারালয়কে দুর্নীতিমুক্ত করা না গেলে দেশের কোথাও দুর্নীতিমুক্ত হওয়া সম্ভব না। দুই দিন আগে সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বললেন, ‘এখন থেকে আমরা দেখবো গ্রেপ্তারকৃতরা যাতে জামিন না পায়। এই বক্তব্য থেকেই তো বোঝা যাচ্ছে বিচার কিভাবে চলছে? স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা জামিনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিচ্ছেন। ফলে আমি মনে করি, বিচার বিভাগের ১২টা না, ১৪টা বেজে গেছে।”
সুপ্রিমকোর্টের সিনিয়র আইনজীবী সাইদ আহমেদ রাজা বলেন, “আমরা যদি ২০২৪ সালের মে-জুনের হিসাব দেখি, হাইকোর্ট ডিভিশনের একটা সিদ্ধান্তের কারণে সারা বাংলাদেশে আগুন ছড়িয়ে পড়লো। সেটার প্রেক্ষিতে একটা সরকারের পতন হলো। তখন মানুষের ধারণা হয়েছিল বিচার বিভাগের একটা সংস্কার হবে। কিন্তু আমরা দেখলাম, এখানে মব তৈরি হবে হাইকোর্টের বেশ কয়েকজন বিচারককে ছুটিতে পাঠিয়ে দেওয়া হলো। প্রধান বিচারপতি, আইন উপদেষ্ঠা ও অ্যাটর্নি জেনারেলের কিছু মন্তব্যে বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। বিচারের পরিবেশ এখন আর নেই।”
আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রে আসিফ মাহমুদ
স্থানীয় সরকার ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই ঘুরে-ফিরে নানা ধরনের আলোচনা-সমালোচনায় থাকছেন। তার এপিএসের দুর্নীতি, কিছু অডিও রেকর্ড বাইরে চলে আসায় বিতর্কে জড়ান তিনি। বিমানবন্দরে অস্ত্রের গুলি নিয়ে প্রবেশ বা গভীর রাতে ৩০০ ফিটে হাঁসের মাংস খেতে যাওয়া নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ট্রল হয়েছে। এমনকি নিজের মন্ত্রণালয়ের সবচেয়ে বেশি টাকা এলাকার জন্য বরাদ্দ দেয়া নিয়েও সমালোচিত হতে হয়েছে তাকে।
ক্রীড়াঙ্গনেও তিনি সব সময় আলোচনায় ছিলেন। ক্রিকেট বোর্ডের সভাপতি ফারুক আহমেদকে সরিয়ে দেওয়া, আমিনুল ইসলাম বুলবুলকে দায়িত্ব দেয়া এবং পরে নির্বাচনের নামে প্রহসনের মাধ্যমে তাকে সভাপতি নির্বাচিত করার অভিযোগেও জড়িয়েছে এই তরুণ উপদেষ্টার নাম। সাবেক ক্রিকেটার তামিম ইকবাল ও বিভিন্ন ক্লাবের কর্মকর্তাদের বিসিবির এই নির্বাচন থেকে ‘বাইরে’ রাখা হয়।
দৈনিক যুগান্তরের বিশেষ প্রতিনিধি মোজাম্মেল হক চঞ্চল বলেন, “তরুণ উপদেষ্টা হিসেবে সবার আশা ছিল, তিনি ভালো করবেন। কিন্তু তিনি ক্রীড়াঙ্গনকে কলঙ্কমুক্ত করতে এসে কলুসিত করে ফেলেছেন। আগে তো খেলা মাঠে ছিল, এখন তিনি খেলাকে টেবিলে নিয়ে এসেছেন। ফলে খেলা আর মাঠে নেই। বিশেষ করে বিসিবি নির্বাচনে তিনি যে উদাহরণ সৃষ্টি করেছেন তার জন্য বাংলাদেশের ক্রিকেট অনেক পিছিয়ে গেছে। এখান থেকে বের হয়ে আসতে বাংলাদেশের আরো বহু দিন ভুগতে হবে।”
পররাষ্ট্রনীতি ও ভিসা সংকট
পররাষ্ট্র উপদেষ্টা হিসেবে তৌহিদ হোসেন দায়িত্ব নেওয়ার পর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতিতে কী ধরনের পরিবর্তন এসেছে? বাংলাদেশ কি বন্ধু বাড়াতে পেরেছে? প্রধান উপদেষ্টার সফরগুলো থেকে কি বাংলাদেশের নতুন কোনো বন্ধুত্ব হয়েছে? নাকি বন্ধু দেশগুলোও তাদের দেশের ভিসা বন্ধ করে দিয়েছে?
বাস্তবতা হলো, অনেক দেশই বাংলাদেশের পাসপোর্টে ভিসা বন্ধ রেখেছে। ভারত সীমিত পরিসরে মেডিকেল ভিসা দিলেও অন্য কোনো ভিসা দিচ্ছে না। ইউএই, উজবেকিস্তান, কাতার, ভিয়েতনাম, ওমান, কুয়েত, বাহারাইন বাংলাদেশের পাসপোর্টধারীদের ভিসা দিচ্ছে না। থাইল্যান্ড কিছু ভিসা দিলেও অন্তত ৪৫ দিন সময় নিচ্ছে। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়াও ভিসা দিচ্ছে খুব কম। অষ্ট্রেলিয়া, জাপানও খুব কম ভিসা দিচ্ছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর বহির্বিশ্ব কার্যত কতটা আস্থা রাখছে জানতে চাইলে সাবেক রাষ্ট্রদূত মুন্সী ফয়েজ আহমেদ বলেন, “আমাদের দেশে তো রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা আছে। প্রতিবেশী দেশ ভারত যখন ভিসা বন্ধ করে দেয়, তখন সারা বিশ্বেই একটা খারাপ বার্তা যায়। অনেকেই মনে করেন, প্রতিবেশীরা যখন ভিসা বন্ধ করেছে, ফলে এর ভেতরে নিশ্চয়ই খারাপ কিছু আছে। এই কারণে অনেকেই আমাদের ভিসার ব্যাপারে নেতিবাচক অবস্থান নিচ্ছে। পাশাপাশি বদনাম ছড়িয়ে পড়েছে- এখানে জঙ্গিবাদীদের বিস্তার শুরু হয়েছে। এটা ঠিক না হলেও বাইরে এমন একটি ধারণা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। এটা নিয়ে বিভিন্ন দেশ চিন্তা করছে। এই সংকট উত্তরণে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যথেষ্ট ভুমিকা দেখা যাচ্ছে না।”
দখল-দূষণ থেকে কতটা মুক্তি মিলেছে?
দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিবেশ উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান পলিথিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। সেন্টমার্টিনে সাধারণ মানুষের যাতায়াতে নানা ধরনের বিধিনিষেধ আরোপ করেন। এমনকি দখলি জমি উদ্ধারের বিষয়টিকেও ব্যাপক গুরুত্ব দেন।কিন্তু তার এসব তৎপরতায় এই সেক্টরে কতটা উন্নতি হয়েছে? বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্স (বিআইপি)-র সভাপতি পরিকল্পনাবিদ অধ্যাপক ড. আদিল মুহাম্মদ খান মনে করেন, “এক কথায় যদি বলি, কোনো উন্নতি হয়নি, বরং অবনতি হয়েছে। কেমন অবনতি হয়েছে? যেমন ধরেন, আগে যারা দখল করেছিলেন সেগুলো তো উদ্ধার করা যায়নি, বরং নতুন করে আরো দখল হয়েছে। এখন বাকি কয়মাসে সরকার দখলি জমি উদ্ধারের পরিকল্পনা নিয়েছে। কোনো পরিকল্পনা ছাড়াই সেন্টমার্টিনে যাতায়াত সীমিত করা হলো। আবার ঢাকা বায়ুদূষণের শীর্ষে রয়েছে অনেকদিন ধরে, কিন্তু এ ব্যাপারে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে না। উল্টো পরিবেশ-প্রতিবেশকে ধ্বংস করার চেষ্টা হচ্ছে। একটা উদাহরণ দেই৷ রাজধানীর প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজারে পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংস করে এলিভেটেড এক্সপ্রেসের র‌্যাম্প বানানো হচ্ছে। এটা বন্ধ করতে আমরা মানববন্ধন করলাম, আবেদন করলাম, কিন্তু কেউ শুনলো না আমাদের কথা।”
পলিথিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধে সফলতার বিষয়ে ড. আদিল মুহাম্মদ খান বলেন, “আপনি বাজারে গিয়ে পলিথিনের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছেন, ব্যবসায়ীকে জরিমানা করা হচ্ছে, কিন্তু সরকার কি জানে না পলিথিনের উৎপাদন করে কারা? অবশ্যই জানে। কিন্তু সেখানে যাবে না। তাহলে পলিথিন বন্ধ হবে কিভাবে?”
সড়ক-মহাসড়ক, সংস্কারের উদ্যোগ নেই
চলতি মাসেই ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বেহাল অবস্থা দেখতে গিয়েছিলেন সড়ক পরিবহণ ও সেতু মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। মহাসড়কে যানজট এখন যেন নিত্যদিনের সঙ্গী। তবে এ সড়কের দুরবস্থা নিয়ে মানুষের অভিযোগ বহুদিনের। বেহাল মহাসড়ক পরিদর্শন করতে গিয়ে উপদেষ্টা নিজেও তীব্র যানজটের কবলে পড়েন। এরপর তিন ঘণ্টা যানজটে আটকে পড়ে অবশেষে মোটরসাইকেল চড়ে পৌঁছান গন্তব্যে। সম্প্রতি ফরিদপুর থেকে ভাঙা মহাসড়কটি নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনা হয়েছে। সড়কটির অবস্থা এতটাই ভয়াবহ যে, যানবাহন চলাই দায়।
এই ১৪ মাসেসড়ক-মহাসড়কের কতটা পরিবর্তন হয়েছে জানতে চাইলে যাত্রী কল্যাণ সমিতির মহাসচিব মোজাম্মেল হক চৌধুরী বলেন, “বিগত সরকারের সময় সড়ক মহাসড়কের যে অবস্থা ছিল, এখন তার থেকে অনেক বেশি খারাপ হয়েছে। কারণ কোনো সংস্কার হচ্ছে না। গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের কিছু জায়গায় অল্প কাজ হলেও অধিকাংশ জায়গায় কোনো কাজই হচ্ছে না। এমনকি বিগত সরকার যেভাবে এই সেক্টর চালাতো, এখনও সেভাবেই চলছে। নতুন কোনো পরিকল্পনা দেখা যাচ্ছে না।”
গণমাধ্যম যে অবস্থায়
অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কৃতি উপদেষ্টা মোস্তফা সরয়ার ফারুকীকে প্রশ্ন করায় গত এপ্রিলে তিন সাংবাদিকের চাকরি হারানোর ঘটনাও দেখেছে বাংলাদেশ। তিন প্রতিষ্ঠানের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, মূলত মব-সহিংসতার ভয়েই তিন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে ‘ব্যবস্থা’ নিয়েছেন তারা। সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকরা সংস্কৃতি বিষয়ক উপদেষ্টার কাছে সাম্প্রতিক নানা বিষয়ে প্রশ্ন করেন। এর মধ্যে এটিএন বাংলার রিপোর্টার ফজলে রাব্বী, দীপ্ত টিভির রিপোর্টার মিজানুর রহমান (রহমান মিজান) ও চ্যানেল আই-এর রিপোর্টার রফিকুল বাসারের প্রশ্ন এবং পরবর্তী ঘটনাবলী ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনার জন্ম দেয়।
এছাড়া সময় টেলিভিশনের মালিকের অফিসে এনসিপি নেতা হাসনাত আব্দুল্লাহর যাওয়া এবং কয়েকজন সাংবাদিকের চাকরি যাওয়া নিয়েও ব্যাপক আলোচনা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকারের সময় মিডিয়ার অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে সাংবাদিক মাসুদ কামাল বলেন, “আমি খুব বেশি পরিবর্তন দেখি না। আগে যারা মিডিয়ার দায়িত্বে ছিলেন, তারা শেখ হাসিনার সুবিধাভোগী হয়ে নিজেরাই তার এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতেন। এর জন্য কাউকে কিছু বলতে হতো না। আর এখন মিডিয়ার শীর্ষ পদে বিএনপি ও জামায়াতের লোক বসানো হয়েছে। ফলে, তারা এখন বিএনপি ও জামায়াতের স্বার্থ দেখছে। আগেও সাংবাদিকরা স্বাধীন ছিল না, এখনও নেই।”
প্রসঙ্গত, জুলাই অভ্যুত্থানে খুন ও খুনের চেষ্টার মামলায় আসামি করা হয়েছে ২৬৬ জন সাংবাদিককে৷ তাদের মধ্যে ১৩ জন আছেন কারাগারে৷
গত ৪ মে মুক্ত গণমাধ্যম দিবসের আলোচনায় সম্পাদক পরিষদের সভাপতি ও ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম বিষয়টি নিয়ে তীব্র হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘‘বর্তমানে ২৬৬ জন সাংবাদিকের বিরুদ্ধে হত্যা অথবা সহিংসতা সংক্রান্ত অপরাধের অভিযোগে মামলা চলছে৷ এটা কীভাবে সম্ভব? এটা আমাদের জন্য অসম্মানের৷ এটার অর্থ এই নয় যে, কেউ দোষ করেননি৷ দোষ করে থাকলে সঠিকভাবে মামলা করে শাস্তি দেন এবং আমরা কোনোভাবেই তার পাশে দাঁড়াবো না, যদি সত্যিকার অর্থে সমাজের বিরুদ্ধে বা জুলাই-আগস্টের আন্দোলনের বিরুদ্ধে তার অবস্থান সেরকম থাকে৷ কিন্তু আজকে ছয় থেকে সাত মাস হয়েছে, তারা এসব মামলায় পড়েছেন৷ একটি কদমও এগোয়নি তদন্তের ব্যাপারে৷”
তিনি আরো বলেন, ‘‘আইন উপদেষ্টা বলেনছেন,‘ আমাদের কিছু করার নেই, জনগণের অধিকার আছে মামলা করার’ মেনে নিলাম মামলা করার অধিকার৷ কিন্তু কোনো আইনের যদি অপপ্রয়োগ হয়, তাহলে কি সরকার কিছু করবে না? সেখানেই আমার বড় প্রশ্ন- যাদের নামে মামলা হয়েছে, সেসব সাংবাদিক একটা ভয়ের মধ্যে থাকেন৷ তারা ‘মব সন্ত্রাসের’ ভয়ে থাকেন৷ এ রকম দু-একটা ঘটনা ঘটেছে৷”
দ্রব্যমূল্য, ব্যবসা ও বিনিয়োগ
দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে মানুষের জীবনে নাভিশ্বাস উঠেছে। নতুন বিনিয়োগ আসেনি, চাকরি হারিয়েছেন বহু মানুষ। এমন পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীরা কী ভাবছেন? কিভাবে টিকে আছে ব্যবসা? গার্মেন্টস ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক পরিচালক ও ডেনিম এক্সপোর্ট লিমিটেডের পরিচালক মহিউদ্দিন রুলেন বলেন, “বিদেশে ক্রেতারা মূলত আগামী নির্বাচনের দিকে তাকিয়ে আছে। তারা এখনও অর্ডার করছেন, কিন্তু সেটা একেবারেই নগণ্য। তারা অপেক্ষা করছেন যে নির্বাচন হলে একটি নির্বাচিত সরকার আসবে, নির্বাচিত সরকারের সঙ্গে তারা কাজ করতে চান। এই ১৪ মাসে নতুন কোনো বিনিয়োগ আসেনি, বরং অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়েছে এবং চাকরি হারিয়েছেন বহু শ্রমিক।”
৬ সংস্থার সাম্প্রতিক বিবৃতি ও সরকারের অবস্থান
আওয়ামী লীগের কার্যক্রমে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহারের আহ্বান জানিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে চিঠি লিখেছে ৬টি আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থা। চিঠিতে আওয়ামী লীগের কার্যক্রমের ওপর দেওয়া নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়া ছাড়াও সব রাজনৈতিক দলের কার্যক্রমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করার পাশাপাশি বাংলাদেশে মানবাধিকার, নিরাপত্তা খাত সংস্কার, বিচারিক জবাবদিহি এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনগুলো। চিঠিতে স্বাক্ষরকারী সংগঠনগুলো হলো- হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ), বিশ্বজুড়ে সাংবাদিকদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় কাজ করা নিউইয়র্কভিত্তিক সংস্থা কমিটি টু প্রটেক্ট জার্নালিস্ট (সিপিজে), বিশ্বজুড়ে নাগরিক সমাজের অধিকার রক্ষায় কাজ করা দক্ষিণ আফ্রিকাভিত্তিক সংস্থা সিভিকাস, রোহিঙ্গাদের অধিকার নিয়ে বিশেষভাবে কাজ করা মানবাধিকার সংগঠন থাইল্যান্ডভিত্তিক ফোরটিফাই রাইটস, যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন রবার্ট এফ কেনেডি হিউম্যান রাইটস ও টেক গ্লোবাল ইনস্টিটিউট।
এটি মানবাধিকার সংস্থাগুলোরের চিঠির বিষয়ে সরকার কোনো প্রতিবাদ বা বিবৃতি দেবে না বলে জানিয়েছেন পররাষ্ট্র উপদেষ্টা তৌহিদ হোসেন। তৌহিদ হোসেন বলেন, ‘‘প্রত্যেকে নিজ নিজ কাজ করবে। আমরা এটাই মনে করি। মানবাধিকার সংগঠনগুলো তাদের কাজ করবে। সরকারের পক্ষে কখনোই তাদের সবকিছু মেনে নেওয়া সম্ভব হবে না। অবশ্যই মানবাধিকার নিয়ে কোনো উদ্বেগ এলে সেটাকে আমরা বিবেচনায় নেই এবং সরকারের পক্ষে যেটুকু সম্ভব, সেটা করা হয়। সবার দৃষ্টিভঙ্গিও এক না। প্রত্যেকে তাদের নিজেদের দৃষ্টিভঙ্গি থেকে কথাবার্তা বলে থাকে এবং সরকারকে অনেক কিছু বিবিচনায় নিয়ে কাজ করতে হয়।”

জন্মভূমি ডেস্ক October 25, 2025
Share this Article
Facebook Twitter Whatsapp Whatsapp LinkedIn Email Copy Link Print
Previous Article বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, ৭৯১৭ জন উত্তীর্ণ
Next Article সুন্দরবনে হরিণের মাংসসহ আটক ২

দিনপঞ্জি

October 2025
S M T W T F S
 1234
567891011
12131415161718
19202122232425
262728293031  
« Sep    
- Advertisement -
Ad imageAd image
আরো পড়ুন
বাগেরহাট

ফকিরহাটে ট্রাকের ধাক্কায় নারীর মৃত্যু: আহত ২

By জন্মভূমি ডেস্ক 11 minutes ago
খুলনাতাজা খবর

সুন্দরবনে হরিণের মাংসসহ আটক ২

By জন্মভূমি ডেস্ক 52 minutes ago
জাতীয়

ডয়চে ভেলের প্রতিবেদন: অন্তর্বর্তী সরকারের ১৪ মাস, মেলেনি অনেক হিসাব

By জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago

এ সম্পর্কিত আরও খবর

জাতীয়

বার কাউন্সিলের লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশ, ৭৯১৭ জন উত্তীর্ণ

By জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago
জাতীয়

পে স্কেল বাস্তবায়নে ‘নতুন উৎস’ দেখছে সরকার

By জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago
জাতীয়

দেশে ২৪ ঘণ্টায় ডেঙ্গু আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ৬৫৯

By জন্মভূমি ডেস্ক 2 hours ago

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

প্রকাশনার ৫২ বছর

দৈনিক জন্মভূমি

পাঠকের চাহিদা পূরণের অঙ্গীকার

প্রতিষ্ঠাতা: আক্তার জাহান রুমা

প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদক: হুমায়ুন কবীর বালু

রেজি: কেএন ৭৫

প্রধান সম্পাদক: লে. কমান্ডার (অব.) রাশেদ ইকবাল, প্রকাশক: আসিফ কবীর কর্তৃক জন্মভূমি প্রকাশনী লি: ১১০/২,সাংবাদিক হুমায়ুন কবীর বালু সড়ক, খুলনা থেকে মূদ্রিত ও প্রকাশিত

Developed By Proxima Infotech and Ali Abrar

Removed from reading list

Undo
Welcome Back!

Sign in to your account

Lost your password?