ডুমুরিয়া প্রতিনিধি : ডুমুরিয়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় একের পর এক সংঘটিত চুরির রহস্য অবশেষে পুলিশ উদ্ধার করতে সক্ষম হয়েছে। থানা পুলিশের অভিযানে আন্তঃজেলা চেতনাশক ওষুধ চক্রের ৮ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তাদের কাছ থেকে বিভিন্ন এলাকা থেকে লুট করা স্বর্ণ, রৌপা, মোটরসাইকেল, মোবাইল ফোনসহ লুটকাজে ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রাংশ উদ্ধার করা হয়। বৃহস্পতিবার দুপুরে থানা চত্বরে আয়োজিত প্রেস ব্রিফিংয়ে জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহাবুব হাসান (বিপিএম) এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, সম্প্রতি ডুমুরিয়া উপজেলার খর্ণিয়ার আঙ্গারদোহা, চুকনগরসহ বিভিন্ন স্থানে চুরির ঘটনা ঘটে। তবে এসব চুরির ধরণ ছিল একই রকম। ভুক্তভোগী বাড়ির মালিকদের এক ধরনের চেতনানাশক খাইয়ে অজ্ঞান করে মালামাল নিয়ে যাচ্ছিল। যা নিয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ে ডুমুরিয়া থানাসহ জেলা পুলিশের উর্ধ্বতন মহল। একই সাথে চোরদের আটকের বিষয়ে তৎপর হয়ে শুরু করা হয় কঠোর অভিযান। একটানা ১০/১২ দিনের অভিযান শেষে বেরিয়ে আসে অনেক তথ্য ও সংশ্লিষ্ট চোরদের হদিস। প্রেস ব্রিফিংকালে তিনি বলেন, ডুমুরিয়ায় একের পর এক চুরি হচ্ছিল। ঘটনগুলো প্রথমতঃ আমাদের কাছে বিচ্ছিন্ন মনে হতে থাকে। পরে খোঁজ নিয়ে দেখি এ ধরনের চুরির ঘটনা অন্যান্য উপজেলাসহ যশোর, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট জেলাতেও সংঘঠিত হচ্ছে। তখন আমরা উর্ধ্বতন মহল বিষয়টি নিয়ে তৎপর হয়ে বিভাগীয় ভাবে তদন্ত শুরু করি। একই সাথে কঠোর অভিযানে নেমে পড়ি। আর এ অভিযানে আমরা মোট ৮ জন চোরকে আটক করতে সক্ষম হয়েছি এবং তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে বেশ কিছু অলঙ্কার যেমন ৩টি সোনার রুলি (বালা), ৪টি আংটি, ১টি চেইন, কিছু রোপার গহনা উদ্ধার করা হয়। এছাড়া চুরির কাজে ব্যবহৃত একটি মোটরসাইকেল, ৭টি মোবাইল ফোন ও কয়েকটি হাতুড়ি জব্দ করা হয়েছে। আটক ৮ জন হলো সাতক্ষীরা সদরের ধুলহর বেড়বাড়ি এলাকার মৃত জামাল উদ্দিন গাজীর ছেলে আলমগীর হোসেন (৩৫), একই জেলার পাটকেলঘাটার চৌগাছা গ্রামের মৃত শেখ আলফাজ উদ্দিনের ছেলে শেখ পলাশ আহমেদ (৪৫) ও আশাশুনির রাধারআটি এলাকার সামাদ মিস্ত্রীর ছেলে সুমন মিস্ত্রী (৩০), তালার জেটুয়া গ্রামের মৃত সামেদ আলী আকুঞ্জীর ছেলে জিয়াউর আকুঞ্জি ওরফে জিয়া (৪০), ডুমুরিয়ার গুটুদিয়া গ্রামের শেখ রুহুল আমিনের ছেলে শেখ আরিফুল ইসলাম (৩৪), যশোর ঝিকরগাছার মধুখালি হাটখোলা এলাকার মৃত গোলাম মন্ডলের ছেলে রমজান আলী মন্ডল ওরফে মনা (৫১) ও বেনাপোল পোর্ট থানার কায়েডা এলাকার মৃত বজলু মোড়লের ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪৬) একই থানার কাগজপুর খেদাপাড়া এলাকার মৃত আজগর আলীর ছেলে বাবুল হোসেন (৩৩)। বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে এদেরকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে। বিফ্রিং’র শেষ পর্যায়ে তিনি বলেন, এখনো আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। এদের নিকট থেকে আমরা অনেক তথ্য ও এদের সহযোগীদের নাম ও তাদেরকে সনাক্ত করতে সক্ষম হয়েছি। এছাড়া কিছু চোরাই অলংকার, মোবাইল ফোন দোকানে বিক্রি করা হয়েছে, সেগুলো উদ্ধার করা হবে। আবার ওই চোরদের সহয়তাকারী হিসেবে স্থানীয়ভাবে অনেকের নাম উঠে এসেছে। সব মিলিয়ে আমরা অত্যন্ত সতর্কতার সাথে কাজ করছি। তাই তদন্তের স্বার্থে আর আপনাদের বেশি কিছু জানাতে পারছি না। ব্রিফিং কালে আরও উপস্থিত ছিলেন ডুমুরিয়া থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সেখ কনি মিয়া, ইন্সপেক্টর (তদন্ত) মুক্ত রায় চৌধুরীসহ অন্যান্য কর্মকর্তাবৃন্দ।