ডুমুরিয়া প্রতিনিধি : ডুমুরিয়া উপজেলার চলতি মৌসুমে মসলার জগতে মৌরির চাহিদা রয়েছে। অনেক আগে থেকেই মৌরির চাষ করে আসছি। সার সেচ কিছুই লাগে না। এবছর পাঁচ বিঘায় আবাদ করেছি। আশা করছি ফলন অনেক ভালো হবে। ডুমুরিয়ার মাগুরঘুনা ইউনিয়নের আরশনগরের কৃষক সেলিমুল ইসলাম বলছিলেন তার মৌরি চাষের কথা। শুধু সেলিমুলই নয়, উপজেলা বহু চাষী এখন ঝুঁকে পড়েছেন মৌরি চাষে। উৎপাদন খরচ যেমন কম তেমনি লাভও বেশি। বিঘাপ্রতি ৬ থেকে ৮ মণ মৌরি উৎপাদন হয়। মৌরির বাজারমূল্য মণ প্রতি ৪০ থেকে ৪৫ হাজার টাকা পর্যন্ত। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন জানালেন, উপজেলায় দিন দিন জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে মৌরি চাষ। বহুল পরিচিত সুগন্ধযুক্ত উচ্চমূল্যের মশলাদার ফসল মৌরি দৈনন্দিন রান্নার অনেকখানি জুড়ে আছে। পাঁচ ফোঁড়নের এক ফোঁড়ন মৌরি। বহুগুণে গুণান্বিত এই মসলা। এতে প্রচুর পরিমাণে ঔষধি গুণও বিদ্যমান। ডুমুরিয়ার কৃষকরা উচ্চ চাহিদা ও ভালো বাজার মূল্যের জন্য মৌরি চাষে আগ্রহী হয়ে উঠছে। তাদের ক্ষেত ভরে এখন মৌরি ফুলের দৃষ্টনন্দন দৃশ্য আর ঘ্রাণ বাতাসে ভাসছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, জমির কার্যকারিতা বাড়ানোর জন্য এলোমেলো ব্লক নকশা ব্যবহার করে বাঁধাকপি, ফুলকপি ও অন্যান্য ফসলের সাথী ফসল হিসেবে মৌরি চাষ লাভজনক। এই গাছের পাতা, বীজ, কন্দ, শিকড় কোনো কিছুই ফেলনা নয়। বর্তমানে মৌরির ইউরোপে সর্বাধিক জনপ্রিয়। আমাদের দেশে মৌরির ফল বা বীজ মসলা হিসেবে ব্যবহার করা হয়। বিভিন্ন ধরনের মাছ-মাংসের তরকারি, আচার, পিঠা, নানা ধরনের মিষ্টি খাবারে মৌরি ব্যবহৃত হয়। পান মসলা হিসেবেও খুব জনপ্রিয় বিভিন্ন এলাকায় মৌরি ভিন্ন ভিন্ন নামে পরিচিত। কোথায় গুয়ামুরি, কোথাও মহুরি নাম। এর গাছ দুই থেকে পাঁচ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। ফুল দেখতে অনেকটা খোলা ছাতার মতো। সাধারণত ফুলের রঙ হলুদ আর শাদা হয়ে থাকে। পাতাগুলো চিরল, মসৃণ এবং পাখির পালকের মতো হয়েছে। মৌরি চাষের জন্য বেলে, বেলে দো-আঁশ মাটি ভালো। জমি একটু উঁচু সুনিষ্কাশিত হলে ভালো হয়।