
৬৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ : ডুমুরিয়া উপজেলাতেই ২২ হাজার ১৩৫ হেক্টর
# উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা হেক্টর প্রতি ৬ মেট্রিক টন : নমুনা শষ্য কর্তনে উৎপাদন হয়েছে ৬ দশমিক ১২ মেট্রিক টন
জি এম ফিরোজ, ডুমুরিয়া : দিগন্ত জোড়া সোনালী ধানের ক্ষেত। পাকা ধানের শীষ দুলছে বাতাসে। ধানের ঘ্রাণে মৌ মৌ চারিদিক। খুলনার মাঠে মাঠে ধূম পড়েছে বোরো ধান কাটার। ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক। ধান কাটা চলবে মে মাসের প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত। খুলনা জেলার মধ্যে ডুমুরিয়া উপজেলায় এবার রেকর্ড পরিমাণ জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। ফলনও হয়েছে বেশ ভাল। ইতোমধ্যে কৃষি বিভাগ বোরো ধান চাষের জন্য যাদের প্রণোদনার আওতায় প্রদশর্ণী দিয়েছিল সেসব জমির ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষি বিভাগের হিসেব মতে বোরো উৎপাদন এবার লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফলন হয়েছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, খুলনা জেলায় এবার ৬৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়। তার মধ্যে শুধুমাত্র ডুমুরিয়া উপজেলাতে আবাদ হয়েছে ২২ হাজার ১৩৫ হেক্টর জমিতে। যার মধ্যে উফসী জাতের ৮ হাজার ২০০ হেক্টর ও হাইব্রিড জাতের ১৩ হাজার ৯৩৫ হেক্টর জমিতে। ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি অফিসের মাধ্যমে প্রণোদনার আওতায় যারা বোরো আবাদ করেছিলেন সেসব প্রদর্শণী ক্ষেতের ধান কাটা শুরু হয়েছে। উপজেলার কয়েকটি ব্লকে ধান কাটার মাঠ দিবস অনুষ্ঠিত হয়। যার মধ্যে মেছাঘোনা, হাজিবুনিয়া, পেড়িখালী, কুলটি, মধূগ্রাম, খলশি, বরুনা ও কোমরাইল মাঠ দিবস ও শষ্য কর্তণ অনুষ্ঠিত হয়েছে। বোরো ধানের গড় উৎপাদন হয় প্রতি হেক্টরে ৬ মেট্রিক টন। তবে এসব মাঠ দিবসে ধান কেটে মাড়াই করে দেখা গেছে গড় উৎপাদন হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ১২ মেট্রেক টন। এই উপজেলায় প্রণাদনা দেয়া হয় হাইব্রিড জাতের ধানের চাষে ৬ হাজার ৫০০ জন কৃষককে এবং উফসী জাতের ধান আবাদে ৫ হাজার কৃষককে।
উপজেলার গুটুদিয়া ইউনিয়নের উপ-সহকারি কৃষি অফিসার তুষার কান্তি মন্ডল জানান, গত মৌসুমে বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় অনেক বিলে কৃষকের আমন আবাদ ও চিংড়ি চাষের জন্য বিলে নদী থেকে নোনা পানি প্রবেশ করায়। বোরো ধান নোনা সহ্য করতে পারে না। তাই কিছু কিছু বিলে সামান্য রোগের আক্রমণ দেখা দেয়। কিন্তু বর্তমানে সেসব ধান ক্ষেতের কৃষকদের পরামর্শ দিয়ে রোগ দমন করা হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ ইনসাদ ইবনে আমিন জানিয়েছেন, সব প্রতিকূলতা কাটিয়ে বোরো ধানে এবার আশানুরুপ ফলন হয়েছে। যেখানে গড় উৎপাদন হেক্টর প্রতি ৬ মেট্রিক টন ধরা হয় সেখানে আমারা নমুনা শষ্য কর্তনের মাধ্যমে পেয়েছি গড় উৎপাদন হযেছে হেক্টর প্রতি ৬ দশমিক ১২ মেট্রিক টন।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শষ্য) মোঃ মোসাদ্দেক হোসেন বলেন, জেলায় এবার ৬৩ হাজার ৭০০ হেক্টর জমিতে বোরোর আবাদ হয়েছে। তার মধ্যে ডুমুরিয়া উপজেলাতেই বেশি। রোগের আক্রান্ত বোরো ক্ষেতের পরিমাণ শতকারা হারের দশমিক ৫১ ভাগ। তিনি বলেন, বড় ধরণের কোন প্রাকৃতিক বিপর্যয় না হলে বোরো ধানের এবার টার্গেটের অধিক ধান ঘরে উঠবে বলে আশা করছি।