
জন্মভূমি রিপোর্ট : দেশব্যাপী ডেঙ্গু আতঙ্কের মধ্যেই খুলেছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। পবিত্র ঈদুল আজহার ছুটি শেষে ঝুঁকি মাথায় নিয়েই ক্লাসে এসেছে শিক্ষার্থীরা। অনেক ক্ষেত্রেই মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) নির্দেশনা মেনে শ্রেণিকক্ষ ও স্কুলের আঙিনা পরিষ্কার করা হলেও অভিভাবকদের উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা কাটছে না।
রবিবার সকাল থেকে দেশের সব স্তরের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলেছে। কিছুদিন ধরে ঢাকাসহ সারাদেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করায় সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় প্রতিষ্ঠানকে বাড়তি কিছু নির্দেশনা মানতে বলা হয়েছে। ডেঙ্গু রোধে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান নিয়মিত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাসহ পাঁচদফা নির্দেশনা দিয়েছে মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি)। নির্দেশনায় এডিস মশার বংশবিস্তার রোধে প্রতিষ্ঠানের খেলার মাঠ ও ভবনে জমে থাকা পানি দ্রুত সরিয়ে ফেলতে বলা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানের ফুলের টব নিয়মিত পরিষ্কার করা ও যাতে পানি জমতে না পারে তা নিশ্চিত করতে বলা হয়েছে। এছাড়া উপস্থিত শিক্ষকদের ডেঙ্গু প্রতিরোধের উপায়গুলো সম্পর্কে প্রতিদিন শিক্ষার্থীদের জানাতে বলা হয়েছে। আদেশটি সব সরকারি-বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধান ও মাঠ পর্যায়ের শিক্ষা কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে।
সরেজমিনে খুলনার কলিজিয়েট গালর্স স্কুলে গিয়ে দেখা যায়, প্রথম দিনে তুলনামূলক কম শিক্ষার্থী ক্লাসে এসেছে। স্কুল আঙিনা অনেকটাই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। যদিও সকালের বৃষ্টিতে আবার মাঠে পানি জমেছে। ক্লাসরুমগুলো আগেই পরিষ্কার করা হয়েছে বলে জানান শিক্ষকরা।
সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে দেখা যায় শিক্ষার্থীরা ক্লাসে এসেছে। তবে উপস্থিতি কম।
তৃতীয় শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক আসাফুদ্দৌলা সাগর জানান, ঈদের পর থেকে খুলনায় ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে। এডিস মশা দিনে কাঁমড়ায়। নগরীজুড়ে উন্নয়ন কাজ চলছে। ফলে ড্রেনে পানি জমছে। তাই খুলনায় মশার উপদ্রব সাধারণ সময়ের থেকে বেশি। সে কারণে কিছুটা উদ্বিগ্ন আছি।
মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক আঞ্চলিক শিক্ষা পরিচালক বলেন, আমাদের কাছে শিক্ষার্থীদের সুরক্ষা সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ। সেকারণে প্রতিটি বিদ্যালয়ে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। যেন কোনভাবে এডিস মশা বংশ বিস্তার করতে না পারে।
এ বিষয়ে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ডা. নিয়াজ মুস্তাফি চৌধুরী বলেন, বাড়ী ও বিদ্যালয়ের আঙ্গিনা পরিষ্কার রাখতে হবে। কোন অবস্থাতেই বাড়ির চারপাশে পানি জমতে দেওয়া যাবে না এ দায়িত্ব সাধারণ মানুষকে নিতে হবে।
চিকিৎসকরা শুধুমাত্র চিকিৎসা সেবা দিতে পারেন। আর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চেষ্টা করলেই ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। এজন্য প্রয়োজন সকল স্টেক হোল্ডারদের সমন্বিত কার্যক্রম। তিনি বলেন, দুদিনের বেশি সময় জ্বর হলেই নিকট চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়ার আহ্বান জানান তিনি।
খুলনা সিটি কর্পোরেশনের কঞ্জারভেন্সি বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত আব্দুল আজিজ বলেন, ডেঙ্গু প্রতিরোধ খুলনা সিটি কর্পোরেশন বিস্তারিত কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। ড্রেন পরিষ্কার, নিয়মিত ফকার মেশিন দিয়ে মশা নিরোধক ঔষধ সিটানোরসহ যে সকল বাড়িতে ছাদবাগান রয়েছে তা মনিটরিং করছে। সে কারণেই ঢাকা বা অন্যান্য জেলা তুলনায় খুলনাতে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা অনেক কম। এ সময় তিনিও সকলকে সতর্ক ও সচেতনতা পরিচয় দেয়ার আহ্বান জানান।