জন্মভূমি রিপোর্ট
নগরীতে নৃশংসভাবে খুন হওয়া সাতক্ষিরার যুবক হাবিবুর রহমান ওরফে সবুজ (২৬) হত্যা মামলার আসামি একেএম মুজতবা চৌধুরী মামুন ওরফে মোস্তফা উচ্চ আদালতের একটি বেঞ্চ হতে জামিন না মঞ্জুর হওয়ার তথ্য গোপন করে অপর একটি বেঞ্চ হতে জামিনে মুক্ত হয়েছেন। গত বুধবার মামলার ধার্য তারিখে বিষয়টি খুলনার জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের নজরে আসে। এর প্রেক্ষিতে ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো: সাইফুজ্জামান হিরো আসামি মুজতবাসহ সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ক্রিমিনিল মিস কেসের আদেশের অনুলিপিসহ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার জেনারেল এবং দুই ডেপুটি এটর্নি জেনারেলের দপ্তরে চিঠি দিয়েছেন। ট্রাইব্যুনালের উচ্চমান বেঞ্চ সহকারী মো: ছায়েদুল হক শাহিন এসব তথ্য জানান।
গত ২০১৯ সালের ৬ মার্চ রাতে ফারাজিপাড়া লেন এলাকার হাসনাত মঞ্জিলের একটি কক্ষে সবুজকে ঘাতকেরা ছুরিকাঘাতে হত্যার পর মরদেহ বাথরুমে নিয়ে ১৩ টুকরা করেছিল। এ ঘটনায় নিহতের ভগ্নিপতি গোলাম মোস্তফা ৮ মার্চ রাতে সদর থানায় অজ্ঞাত আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলাটি দায়ের করেছিলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, আসামি মুজতবা চৌধুরী মামুনকে দীর্ঘদিনেও পুলিশ গ্রেফতার করতে পারেনি। মামলার বিচার কার্যক্রম শুরু হওয়ার এক পর্যায়ে সে আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করে। আদালত তার আবেদন না-মঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। এরপর গত ৩ অক্টোবর উচ্চ আদালতে তার জামিনের আবেদন করা হয়। আদালত তার জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে মামলাটি আগামী দুই মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির আদেশ দেন। কিন্তু আসামি এ তথ্য গোপন করে ১০ অক্টোবর উচ্চ আদালতের অপর একটি বেঞ্চে জামিনের আবেদন করেন। আদালত রুল নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত তার জামিন মঞ্জুর করেন। এই আদেশটি জননিরাপত্তা বিঘœকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালে আগে আসে এবং পরবর্তীতে ২ নভেম্বর পূর্বের জামিন না-মঞ্জুর হওয়ার আদেশটি পৌঁছায়।
সূত্র জানান, মামলার অপর আসামি অনুপম মহলদার (৪২), মো: খলিলুর রহমান ওরফে খলিল (৪৫) এবং আব্দুল হালিম গাজী (৩২) জামিনে আছেন। আরেক আসামি আসাদুজ্জামান আসাদ ওরফে আরিফ (৩৫) উচ্চ আদালত থেকে এক বছরের জন্য অন্তর্বর্তীকালীন জামিনে মুক্তির পর থেকে পলাতক রয়েছে। এই চার আসামির মধ্যে খলিল বাদে অন্য তিন জন আদালতে অপরাধ স্বীকার করে জবানবন্দি দেয়।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা (আইও) দৈনিক জন্মভ‚মিকে বলেছিলেন, আসামি মোস্তফা মামুনের স্ত্রী এবং বোনের সাথে নিহত সবুজ অনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তুলেছিল। এর প্রতিশোধ নিতে সে তাকে খুলনার আদালত পাড়ায় বসে হত্যার পরিকল্পনা করে। যা বাস্তবায়নে আসামি আসাদকে সে ৫০ হাজার টাকা দিয়েছিল। আইও হত্যাকাÐে ব্যবহার হওয়া ধাঁরালো অস্ত্র, নিহতের ব্যাবহৃত মোটর সাইকেল, হেলমেটসহ ৩৮ প্রকারের আলামত আদালতে জমা দিয়েছেন। পাঁচ আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্রসহ ১৪শ’ ৩৬ পৃষ্ঠার কেস ডকেট জমা দেন। তিনি ৪৬ জন সাক্ষীর জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন।
তথ্য গোপন করে আসামি মুজতবার জামিন, ব্যবস্থা নিতে রেজিস্ট্রার জেনারেলকে চিঠি
Leave a comment