
গাজী জাহিদুর রহমান, তালা : তালা উপজেলায় আমের বাম্পার ফলন হলেও দাম নিয়ে হতাশ চাষীরা। আম সংগ্রহের শুরুতেই বাজারে আমের সরবরাহ গত বারের তুলনায় কয়েক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আনুষ্ঠানিকভাবে আম পাড়ার ভরা মৌসুমে দাম নিয়ে হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষী ও ব্যবসায়িরা। ঘূর্ণিঝড় মোখার সংকেতের কারণে চাষীরা আম সংগ্রহে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। যে কারণে বাজারে আমের প্রভাব পড়েছে। দাম কম, ক্রেতা নেই।
রবিবার (১৪ মে) বাজারে সব ধরনের আমের দাম গত মৌসুমের তুলনায় প্রায় অর্ধেকে নেমে আসে। কম মূল্যের আমের বাজারে অসহায় বিক্রেতাদের মূলধন বাঁচানোই যেন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পাইকারি বাজারে আমের এই দাম অব্যাহত থাকলে লোকসানের আশঙ্কা করছেন আমচাষী ও ব্যবসায়িরা।
সূত্রমতে, স্থানীয় প্রশাসন ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কর্তৃক ঘোষিত আম পঞ্জিকা অনুযায়ি, গোবন্দিভোগ, বোম্বাই ও গোলাপখাসসহ স্থানীয় জাতের আম সংগ্রহের দিন ছিল ৫ মে। ঘূর্ণিঝড় মোখার আক্রমনের কারণে আমচাষীরা দ্রত আম ভাঙতে শুরু করে। যে কারণে বাজারে সরবরাহ বেড়ে গেছে কয়েকগুণ।
স্থানীয় আম ব্যবসায়ী আনারুল ইসলাম বলেন, দাম বেশি পাওয়ার আসায় শনিবার আড়তে ৬০মণ আম নিয়ে আসেন। কিন্তু জেলার বড় বাজারে এসেই হতাশ হয়েছেন আমের দাম দেখে। গত মৌসুমের প্রথম দিকে এই বড় বাজারের আড়তে গোবিন্দভোগ আম বিক্রি করেছিলেন মণ প্রতি ২ হাজার ৯শত টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা দরে। গতকাল একই বাজারে গোবিন্দভোগ বিক্রি করেছেন ১ হাজার ৪শত টাকা মণ দরে। বোম্বাই ও গোলাপখাস আমও গত বছরের একই সময়ের তুলনায় অর্ধেক দামে বিক্রি করেছেন। বাগান ক্রয়, পরিচর্যা, শ্রমিক ও অন্যান্য খরচ বাদ দিয়ে প্রতি মণ গোবিন্দভোগ আম উৎপাদন খরচ পড়েছে কমপক্ষে ২ হাজার টাকার উপরে। সেখানে বাজারে প্রতি মণ আম বিক্রি হয়েছে ১ হাজার থেকে ১২শ’ টাকা দরে। ফলে বাজারে এমন দাম গেলে ৮টি বাগানে তার কয়েক লক্ষ টাকা লোকসান হবে। অপর আমচাষী মোকলেছুর রনিগাজী জানান, গোপালভোগ আম ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকায় বিক্রি করেছি যা গত বছরের তুলনায় অর্ধেকেরও কম।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তালা, পাটকেলঘাটা ও সাতক্ষীরা বাজারের ছোটবড় সব আড়তে আমে সয়লাব হয়ে গেছে। একদিনেই কয়েক হাজার মণ আম উঠলেও ক্রেতাদের আনাগোনা ছিল খুবই কম। যে কারণে ভালো দাম পাচ্ছেন না চাষী বা ব্যবসায়িরা। গত বছরের তুলনায় সব ধরনের আম গত দুই দিনে অর্ধেক দামে বিক্রি হচ্ছে আড়তগুলোয়। অন্তত ১৫-১৬ জাতের আম উৎপাদন হয়। যা এলাকার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ করা হয়ে থাকে বলে জানা যায়।
তালা উপজেলা ভারপ্রাপ্ত কৃষি কর্মকর্তা আফরোজা আক্তাির রুমা বলেন, উপজেলায় ৬৫০ হেক্টর আমবাগান রয়েছে। গোপালভোগ, গোবিন্দভোগ, বোম্বাই, গোলামখাস, বৈশাখীসহ বিভিন্ন জাতের আম আজ থেকে পাড়া শুরু হয়েছে।