তালা প্রতিনিধি : তালা উপজেলার পল্লীতে দীর্ঘদিন জমি ক্রয় করে উক্ত জমিতে যেতে পারছেন না শিক্ষক দম্পত্তি পরিবার। এ ঘটনায় তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত আবেদন করেন ভুক্তভোগি পরিবারটি। এদিকে আবেদনের প্রেক্ষিতে উক্ত জমিতে প্রথমে তহশীলদার এবং পরে একজন সার্ভেয়ার মাপজোপের কাজে গেলে দুর্বৃত্তরা বাধা সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
শিক্ষক দম্পত্তি মোঃ নুর ইসলাম ও মমতাজ খাতুনের বাড়ি তালা উপজেলার জালালপুর ইউনিয়নের দোহার গ্রামে। আর জমি দখলকারী দোহার গ্রামের সাহেব আলী শেখ ও জাহিদুল ইসলাম গং।
ভুক্তভোগি শিক্ষক মোঃ নুর ইসলাম জানান, ২০২৩ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ৪১৯২ নং রেজিঃ কবলা দলিলের মাধ্যমে তিনি ও তার স্ত্রী মমতাজ খাতুন দোহার মৌজার এসএ খতিয়ান নং ৩৮১, সাবেক দাগ ১৯৬৬, হাল দাগ ৩৯৬৫ এর ১ একর ৩৪ শতক জমির মধ্যে ৩৮ শতাংশ জমি পৈত্রিক সূত্রে রেকর্ডীয় মালিকের ওয়ারেশের নিকট থেকে ক্রয় করেন। উক্ত জমির নামপত্তনসহ সকল খাজনাও পরিশোধ রয়েছে। কিন্তু দোহার গ্রামের রওশন আলী শেখের ছেলে সাহেব আলী শেখ ও জাহিদুল ইসলাম,ইমান আলী শেখের ছেলে আমিরুল শেখ ও সোহরাব শেখ, আমিরুল শেখের ছেলে আল মামুন, মিজানুর শেখের পুত্র বিল্লাল শেখ, রাশিদুল শেখ ও মিলন শেখ গায়ের জোরে উক্ত জমি দখল করে রেখেছে। এ নিয়ে ইতিপূর্বে জালালপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে আবেদন করলে তিনি উভয় পক্ষকে ডাকেন। এ সময় তারা উক্ত জমির কোন ধরণের কাগজপত্র দেখাতে না পারায় ইউপি চেয়ারম্যান তাদেরকে উক্ত জমির দখল ছেড়ে দিতে বললেও তারা সেখানে অদ্যবধি ধান রোপন করে চলেছে। নিরুপায় হয়ে তিনি গত ২০/১২/২০২৩ তারিখে তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসারের নিকট একটি লিখিত আবেদন করেন। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য সহকারী কমিশনার (ভূুিম) কে নির্দেশ দেন। এ সময় এসিল্যান্ডের নির্দেশে প্রথমে খেশরা ইউনিয়নের তহশীলদার গিয়ে উক্ত জমি ছেড়ে দেয়ার জন্য মৌখিক নির্দেশ প্রদান করলেও তারা কোন কর্ণপাত করেনি। পরবর্তীতে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারের কাছে তদন্তভারের নির্দেশ প্রদান করা হয়।
এদিকে উক্ত তদন্তের জন্য উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার অমল কান্তি ঘোষ উভয় পক্ষকে গত ২০/০২/২০২৪ তারিখে জমিটি পরিমাপের জন্য নোটিশ করেন। কিন্তু ঐদিন মাপজোপ করে জমির সীমানা নির্ধারণের সময় বাধাপ্রাদান করেন সাহেব আলী শেখ ও জাহিদুল ইসলাম। এ সময় তারা শিক্ষক নুর ইসলামের হাতে থাকা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন কাগজ কেড়ে নিয়ে ছিয়ে ফেলে এবং সার্ভেয়ারকে হুমকি প্রদান করেন। স্থানীয় কয়েকজন সংবাদ কর্মীর সামনে এহেন ঘটনা ঘটে।
স্কুল শিক্ষক আরও বলেন, উক্ত জমি নিয়ে চলমান দেওয়ানী মামলা (যার নং ১০৩৬) রায়ও তাদের অনুকূলে রয়েছে। এছাড়া ৩০ (যার নং ৫৩৮৯২) ও ৩১ (যার নং ৮২২৪৮) ধারার রায়ও পক্ষে রয়েছে। অথচ আদালতের রায় ও প্রশাসনের নির্দেশ তোয়াক্কা না করে উক্ত ব্যক্তিরা বীরদর্পে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। তাদের খুঁটির জোর কোথায় এ নিয়েও জনমনে প্রশ্ন উঠেছে।
তবে সাহেব আলী শেখ জানান, আমাদের কাছে ওরা কোন জমি পাবে না।
এ বিষয়ে উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার অমল কান্তি ঘোষ জানান, এটি তো বলার কিছুই না। সেদিন যেটা ঘটেছিল কয়েকজন সংবাদকর্মীসহ অনেকেই সেটা প্রত্যক্ষ করেছেন।
তালায় নিজের জমিতে যেতে পারছেন না শিক্ষক দম্পত্তি পরিবার
Leave a comment