গাজী জাহিদুর রহমান, তালা : ক্লাইমেট স্মার্ট প্রযুক্তির মাধ্যমে খুলনা কৃষি অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন প্রকল্পের আওতায় পলিনেট হাউজ পদ্ধতি ব্যবহার করে সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় কৃষিতে নব দিগন্তের সৃষ্টি করেছে আচিমতলা গ্রামের বেকার যুবক এসএম রায়হান উল্লাহ আওরঙ্গী। বাংলাদেশ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ক্লাইমেট স্মার্ট প্রকল্পের আওতায় অত্র অঞ্চলে এই প্রথম ২০ শতক জমিতে পলিনেট হাউজের মাধ্যমে উন্নত প্রযুক্তিতে অতি জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাব মুক্ত পরিবেশে বছরব্যাপী নিরাপদ চারা তৈরী ও উচ্চ মূল্যে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যে চারা উৎপাদন করছে।
আচিমতলা গ্রামের এএফএম হাবিবুল্লাহ আওরঙ্গীর পুত্র এসএম রায়হান উল্লাহ আওরঙ্গী বলেন, সরকারের সহযোগিতায় তিনি উন্নত জাতের চারা উৎপাদন করে উন্নত জাতের সবজি উৎপাদনে কৃষককে সহায়তা করে চলেছেন। এছাড়াও তিনি ৬বিঘা জমিতে ক্যাপসিকাম, মরিচ টমেটোসহ বিভিন্ন সবজি চাষ করে সফলতা দেখিয়েছেন। থাইল্যান্ড, ভারত ও নেদারল্যান্ড থেকে বীজ সংগ্রহ করে প্লটে বর্তমানে ১ হাজার বেগুন , পেঁপে ১ হাজার ৬শ’, লাউ ২ হাজার, শসা ১ হাজার ২শ’, মরিচ ৮ হাজার ক্যাপসিকাম ৫ হাজার ও বারমাসী সজিনা ৫শ’ চারা উৎপাদন করেছেন। সিডলিং পদ্ধতিতে ট্রেতে কোকোপিট ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করে বীজ বপন করা হয়। বীজ থেকে চারা তৈরী করে উৎপাদনকৃত চারা কৃষকদের মাঝে বিক্রি করছেন তিনি। বর্তমানে তার প্লটে সবমিলে ১৫হাজার চারা চারা আছে। তিনি পেঁপে ২৫টাকা, বেগুন ২টাকা, মরিচ ২টাকা, লাউ ৭টাকা, শসা ২টাকা, ক্যাপসিকাম ১০টাকা ও বার মাসী সজিনা ৫০টাকা করে বিক্রি করছেন। তার উৎপাদিত সব চারা বিক্রি হয়ে গেছে। যেখানে ২০/২৫ হাজার টাকা লাভ হবে। এরপর পর্যায়ক্রমে চারা উৎপাদন হলে বছর শেষে লাখ লাখ টাকার লাভ হবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।
এ সময় পাইকগাছা উপজেলার শিমুল মোড়ল ও ঝিনাইদহের কামরুল ইসলাম তার উৎপাদিত সব চারা ক্রয় করেছেন দু-একদিনের মধ্যে চারা ডেলিভারী দেবেন বলে জানান।
সরুলিয়া ইউনিয়ন উপ-সহকারী কর্মকর্তা কল্যাণ কুমার পাল জানান, প্রকল্প পরিচালক শেখ ফজলুল হক মনিসহ কৃষি বিভাগের উর্দ্ধতন কর্মকর্তারা ইতোমধ্যে প্রকল্প পরিদর্শন করেছেন। পলিনেটে উৎপাদিত চারা কৃষকদের মাঝে ন্যায্য মূল্যে বিক্রি করার উদ্দেশ্যে সরকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন জানান, বিদেশি প্রযুক্তি ব্যবহার এখানে উন্নত জাতের ভালো মানের চারা উৎপাদন করা হয়। কৃষকদের এখন আর খুলনা যশোরসহ বাইরের জেলা থেকে চারা সংগ্রহ করতে হবে না। এ পদ্ধতিতে একশ’টি বীজে একশটি চারা গজায়। পলিনেটের মধ্যে চারা উৎপাদনের জন্য সঠিক তাপমাত্রা নির্ধারণ করা হয় বলে এটা সম্ভব।
তালায় পলিনেট হাউজ পদ্ধতি: কৃষিতে নব দিগন্তের সূচনা
Leave a comment