গাজী জাহিদুর রহমান, তালা : তালায় হঠাৎ করে বিভিন্ন স্থানে বোরো ধান ক্ষেতে ব্লাস্টের আক্রমণ দেখা দিয়েছে। এতে আতঙ্কিত হয়ে ধান পাকার আগেই কাটা শুরু করেছেন কৃষকরা। ধানে ব্লাস্ট রোগের লক্ষ্মণ দেখা দেয়ায় তারা আগেভাগেই ধান কাটা শুরু করেছেন। কৃষকেরা বলছেন, এখন ধান না কাটলে কিছুদিন পর সব ধান বিচালি হয়ে যাবে।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলার ১৯ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। তবে ব্লাস্ট রোগের প্রকোপ দেখা দেয়ায় আশানুরূপ ফসল পাওয়া নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে অনেক কৃষক আগাম ধান কাটা শুরু করেছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার প্রায় সকল ইউনিয়নে বোরো ধানের একই চিত্র। ব্লাস্টার রোগে শেষ করে দিয়েছে কৃষকের স্বপ্ন। উচ্চ ফলনশীল ব্রি-২৮ জাতের ধান ব্লাস্টার রোগে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ব্রি-৬৭ রডমিনিকেট ধানের শীষ কাটা রোগ দেখা দিয়েছে।
ইসলামকাটি ইউনিয়নের কাজীডাঙ্গা গ্রামের দেবব্রত হালদারের জমিতে ব্লাস্টের আক্রমণে জমির আংশিক ধান সাদা করে ফেলেছে। তিনি বলেন, ‘দুই বিঘা জমিতে ব্রি-২৮ জাতের বোরো চাষ করেছি। ধান পাকার মুহূর্তে ব্লাস্ট রোগে আক্রমণ করেছে। নানা ধরনের ঔষধ স্প্রে করেও কোন ফল হয়নি। ’
চোমরখালী গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, ‘এ বছর আড়াই বিঘা জমিতে ধান লাগিয়েছি। কিন্তু কি যে আছে কপালে সেটা বুঝতে পারছিনা। ব্লাস্ট রোগের আক্রমণে ধানগাছ সাদা হয়ে কুঁকড়ে গেছে। বিভিন্ন ধরনের কীটনাশক স্প্রে করেও কোনো লাভ পাচ্ছি না। এ অবস্থা চলতে থাকলে ধান তো নয়ই, বিচালি পাওয়াও কঠিন হয়ে যাবে। এতে দোকানে সার কীটনাশকের বকেয়া পরিশোধ করা যাবে না। ’
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, ‘দিনে গরম ও রাতে ঠান্ডা পড়ার কারণেই বোরো ধানে বিশেষ করে ব্রি-২৮ জাতের ধানে ব্লাস্ট রোগের আক্রমণ ঘটছে। কৃষি বিভাগ থেকে কৃষকদের এ জাতের ধান রোপণ না করতে পরামর্শ প্রদান করা হয়েছিল। তবুও অনেক কৃষক ব্রি-২৮ জাতের ধান রোপণ করেন।
তিনি আরও বলেন, ব্লাস্ট একটি ছত্রাকজনিত মারাত্মক ক্ষতিকারক রোগ। এক ধরণের ছত্রাকের আক্রমণে এ রোগ হয়ে থাকে। অনুকূল আবহাওয়ায় রোগটি দ্রুত বিস্তার লাভ করে এবং ব্যাপক ক্ষতি করে থাকে। রোগপ্রবণ জাতের ধানে রোগ সংক্রমণ হলে ফলন শতভাগ পর্যন্ত কমে যেতে পারে।