তালা প্রতিনিধি : আকাশ বন্যা আর নদী ভাঙনের কারণে অগ্রহায়নে আমনের ক্ষেতে হাসি দেখা যায়নি কৃষকের মুখে। মৌসুমের শুরুতে অনাবৃষ্টি আর শেষে অতিবৃষ্টি কৃষকের হাসি কেড়ে নেয়। হেমন্তের এইদিনে যে বিলগুলোতে থাকার কথাছিল সোনালী ধানের সমারোহ। সেই বিলগুলোতে এখনও পানিতে থৈ থৈ করছে। পানি ভরা বিলে আগাম বোরো চাষ করে ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার স্বপ্নে বিভোর কৃষক। তাই তালায় চলতি বোরো মৌসুমে বীজতলা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। রীতিমত কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন তারা। উপজেলার হাট-বাজারে ব্রি ২৮ ও ৮৮ ছাড়া হাইব্রিড জাতের বোরো ধানের বীজ বিক্রি হচ্ছে। ধানের বীজ নিয়ে চলছে রমরমা বাণিজ্য। বীজ ডিলারসহ সার ও কীটনাশক ডিলারের দোকানে বিভিন্ন কোম্পানির হাইব্রিড ধানের বীজ বিক্রি হচ্ছে। দোকানগুলিতে বেড়েছে কৃষকদের উন্নত ফলনশীল জাতের বোরো ধানের বীজ কেনার হিড়িক। বাংলাদেশ ধান গবেষণা ইন্সটিটিউট উদ্ভাবিত বোরো ধানের ২৭টি জাতের মধ্যে কৃষকরা সববীজ গ্রহণ করছে না বলে জানান ব্যবসায়ীরা। তালার বারুইহাটী, মহান্দী, খলিলনগর, নলতা, তেঁতুলিয়া, ইসলামকাটী, গোপালপুর, শাঁকদহ, মিঠাবাড়ী, ধানদিয়া, নগরঘাটা, কুমিরা, খলিষখালীসহ অধিকাংশ বিলে মাছ চাষ হওয়ায় আমন ধানের পরিবর্তে বোরো ধানই কৃষকদের একমাত্র ভরসা। বোরো ধান চাষ করে একদিকে নিজেদের চালের চাহিদা মেটানো, অপরদিকে মাছ চাষে লোকসান থাকলে বোরো ধান চাষ করে লোকসানটা পুষিয়ে নেয়। চাষিরা বলেন, আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বীজতলা তৈরিতে তেমন কোন সমস্যা হচ্ছে না। ডিসেম্বরের শেষে অথবা জানুয়ারির শুরুতেই জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ শুরু করবে হবে বলে আশা করছেন কৃষকরা। এছাড়া ঝড়-বৃষ্টির মৌসুম আসার আগেই যেন বোরো ধান কেটে বাড়িতে তোলা যায় এজন্য কৃষকরা আগাম বীজতলা তৈরি করছেন। নগরঘাটা গ্রামের কৃষক মনিরুল ইসলাম বলেন, চার বিঘা জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যে তিনি আগাম বীজতলা তৈরী করছেন। আগামবীজতলা তৈরী করে আগাম চারা রোপন করলে আগাম ফসল ঘরে তোলা সম্ভব হবে। কুমিরা গ্রামের কৃষক আজিবার রহমান জানান এ বছর ব্রি-২৮, ব্রি ৮৮ ও হাইব্রিড চাষে ঝুকছেন চাষীরা।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, এবছর ১৯হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। চাষীরা বোরো চাষের জন্য আগাম প্রস্তুতি নিয়ে বীজতলা তৈরীতে প্রস্তুতি গ্রহণ করছে। আমারা আশা করছি আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি জমিতে ধান চাষ হবে।