গাজী জাহিদুর রহমান,তালা : সাতক্ষীরার তালা উপজেলার কাাশিপুর গ্রামে আম বাগানে মৌবাক্স স্থাপন করে মৌমাছির মাধ্যমে সরিষা থেকে শুরু করে বরইসহ বিভিন্ন ফসলের ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করছেন মৌচাষী আলতাফ হোসেন। তিনি ভ্রাম্যমান মধুবক্স স্থাপন করে মৌসুমে প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা আয় করছেন। আলতাফ হোসেন সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার শ্রীফলাকাটি গ্রামের আসলাম হোসেনের ছেলে।
জানা গেছে, প্রায় ১০ বছর আগে মৌচাষ শুরু করেন আলতাফ হোসেন। জেলার বিভিন্ন জায়গায় বাগান নিয়ে তিনি মধু চাষ করে থাকেন। বর্তমান তালার কাশিপুর এলাকায় একটি আম বাগানে ১৫০ টি মৌ বক্স স্থাপন করে মধু সংগ্রহ করছেন তিনি।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পরিচর্যা ও মৌমাছি দেখভালের জন্য টোং তৈরি করে সেখানে রাত্রি যাপনসহ খাওয়া-দাওয়া করেন আলতাফ হোসেন। এই চাষ দেখাশুনা করার জন্য দু’জন কর্মচারীও রয়েছে। আসন্ন শীত মৌসুমের শুরু থেকে ছয় মাস মধু সংগ্রহ করা হবে এ বাক্স থেকে।
মৌচাষী আলতাফ হোসেন জানান, প্রতিটি মৌ বাক্সের মধ্যে একটি করে রানি মৌমাছির সাথে রয়েছে হাজার হাজার মৌমাছি। মৌমাছিগুলো প্রায় চার কিলোমিটার দূরে গিয়ে মধু সংগ্রহ করে আনতে পারে। ভরা মৌসুমে সপ্তাহে একটি মৌ বাক্স থেকে ৩ থেকে ৪ বারে ২ কেজি পর্যন্ত মধু পাওয়া যায়। এখানে প্রতিবছর ৫ থেকে সাড়ে ৫ মন মধু উৎপাদন হয়। এ মধু তিনি তিনি ঢাকাসহ বিভিন্নস্থানে পাইকারী বিক্রি করে থাকেন। সরিষা, ধনে, কালোজিরা, লিচু, বোরই ফুলসহ বিভিন্ন ফুল থেকে মৌমাছির সংগ্রহকৃত মধু আহরণ করেন তিনি।
আলতাফ হোসেন আরও বলেন, ‘সাতক্ষীরায় অনেকগুলো ভ্রাম্যমান মধুর ক্ষেত রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে এ চাষ পদ্ধতি লক্ষ্য করে এক সময় এসে নিজেই আম বাগান নিয়ে চাষ শুরু করি। প্রথমদিকে মৌসুম শেষে খুব বেশি লাভের মুখ দেখতে পায়নি। তবে বছর গড়াতেই আস্তে আস্তে বেশ লাভবান হচ্ছি। আমি নিজে উদ্যোগ নিয়ে এ কাজ করতে নেমেছি। বর্তমানে খুচরা বাজারে প্রতিকেজি মধু ৫শ’ টাকায় বিক্রি করছি।’ তবে সরকারি বা বেসরকারিভাবে কোন সহযোগিতা পেলে আরো বড় পরিসরে মৌচাষ করতে পারবেন বলে জানান এই মৌচাষী।
সরুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান শেখ আব্দুল হাই বলেন, আলতাফ হোসেন একজন সফল মধু ব্য¦সায়ী। প্রতিবছর শীত মৌসুমে তিনি অত্র এলাকায় মধু চাষ করে থাকেন।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, অত্র উপজেলায় নির্দিষ্ট কোন চাষী মধুচাষ করেন না। তবে বাইরে থেকে এসে অনেকেই এখন মধুচাষ শুরু করেছেন।
তালায় মৌচাষে সফল আলতাফ হোসেন
Leave a comment