গাজী জাহিদুর রহমান, তালা : সাতক্ষীরার তালায় মাঠ জুড়ে চির সবুজের বুকে কাঁচা হলুদের আলপনা। আদিগন্ত মাঠে সরিষা ফুলের সমারোহ। সরিষার বাম্পার ফলনের আশায় কৃষকের মুখে হাসি। সরিষা ফুলের হলুদ রাজ্যে মৌমাছির গুঞ্জনে মুখরিত। মনে হয় পৃথিবী তার রঙ হারিয়েছে, শুধু কালের বিবর্তনে হলুদ রঙটা এখনও টিকে আছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে চলতি মৌসুমে সরিষার উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা কৃষকদের।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, এবছর তালা উপজেলায় সরিষা চাষে লক্ষ্যমাত্রা ছিলো ১০৬০হেক্টর যা অতিক্রক করেছে। এ বছর ভাল ফলনের জন্য টরি-৭, বারি-১৪ ও ১৫ জাতের সরিষা চাষ করেছেন শতকরা ৯০ভাগ কৃষক। বাকি ১০ভাগ চাষ হয়েছে দেশী সরিষাসহ অন্যান্য জাতের।
সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার মাঠে ধান কাটার পর ক্ষেতের পর ক্ষেতে সরিষার আবাদ দেখা গেছে। মাঠের পর মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য। সরিষার ফুলে আকৃষ্ট হয়ে মৌমাছিরা মধু আহরণসহ ছেলে-মেয়ে সরিষা ফুলের ক্ষেতে বসে ছবিও তুলছে। তবে অনেক জমিতেই ফুল আসতে দেখা গেছে। ফলগুলো বেশ তরতাজা, যা ভালো ফলনের সম্ভাবনার জানান দিচ্ছে। এক বিঘা জমিতে এক কেজি সরিষার বীজ বপন করতে হয় সার বীজ কীটনাশকসহ সকল খরচ মিলে প্রায় তিন হাজার টাকা ব্যয় হয়। বিঘা প্রতি জমিতে চার থেকে পাঁচ মণ সরিষা হয়।
সরিষা চাষী মকবুল সরদার,আব্দুর রহমান শেখ ও হোসাইন আলী মোড়ল জানান, তারা জমিতে টরি ৭ জাতের সরিষার চাষ করেছেন। বর্তমানে ফুল আসতে শুরু করেছে। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে ভালো ফলন পেয়ে লাভবান হতে পারবেন বলে জানান তারা।
চাষী হামিজউদ্দীন জানান, তিনি ৪বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। বিঘা প্রতি জমিতে ১৪ কেজি ইউরিয়া সার, ৮.৫ কেজি পটাশ, টিএসপি ১৮ কেজি, জিপসাম ১২.৫ ও প্রয়োজন মত গোবর সার মিশিয়ে জমিতে ছড়িয়ে দিয়ে সরিষার বীজ বপন করেন। পরে আরেকবার প্রয়োজন মতো সার ওষুধ ও সেচ দিয়েছেন। এতে তিনি ভাল ফলনের আশা করছেন।
তালা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজিরা খাতুন বলেন, উপজেলার কৃষকদের মাঝে সরকারিভাবে সরিষা বীজ প্রদান করাসহ উপজেলা বিভিন্ন গ্রামে বা ক্ষেত পরিদর্শনসহ ভালো ফলন পেতে কৃষকদের পরামর্শ দিয়েছেন। উপজেলায় এ বছর ১০৯১ হেক্টর জমিতে সরিষা চাষ করা হয়েছে। কিন্তু নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করে বেশি জমিতে সরিষা চাষ হয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে উপজেলায় এবারও সরিষার উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে।
তালায় সরিষা ক্ষেতে সবুজের বুকে হলুদের সমারোহ
Leave a comment