
গাজী জাহিদুর রহমান, তালা : তালা উপজেলায় ১৯৫টি মণ্ডপে হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজার প্রতিমা তৈরিতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগররা। প্রতিমা তৈরিতে সৌন্দর্য, চাকচিক্য, ভিন্নতা করতে উপজেলার প্রতিটি মণ্ডপে চলছে প্রতিযোগিতা। খড়, কাদামাটি ও বাঁশের সাহায্যে তাদের নিজস্ব শৈল্পিক সৌন্দর্যের নিখুঁত হাতের ছোঁয়া লাগিয়ে চলছে দুর্গতিনাশিনী দেবী দুর্গার আকৃতিদান। দেবী দুর্গার সঙ্গে ধনের দেবী লক্ষ্মী, জ্ঞানের দেবী সরস্বতী, গণেশ, অসুর, মহিষ, কার্তিক, সিংহের মৃন্ময়সহ তৈরি হচ্ছে। বিভিন্ন প্রতিমায় আনা হচ্ছে আধুনিকতার ছোঁয়া।
পঞ্জিকা অনুসারে, আগামী ১৪ অক্টোবর মহালয়ার মধ্যে দিয়ে শারদীয় দুর্গোৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়বে। ২০ অক্টোবর ষষ্ঠী, ২১ অক্টোরর সপ্তমী, ২২ অক্টোবর অষ্টমী, ২৩ অক্টোবর নবমী, ২৪ অক্টোবর বিজয়া দশমীর মধ্যে দিয়ে ৫দিনব্যাপী হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের সবচেয়ে বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজা পরিসমাপ্তি ঘটবে। ইতোমধ্যে তালা উপজেলার ১৯৫টি পূজামণ্ডপে ব্যস্ত সময় পার করছেন মৃৎশিল্পীরা। এরমধ্যে ধানদিয়া ইউনিয়নে ১৭টি, নগরঘাটায় ৯টি, সরুলিয়ায় ২১টি, কুমিরায় ১৪টি, তেঁতুলিয়ায় ১০টি, তালা সদর ইউনিয়নে ১৯টি, ইসলামকাটিতে ২১টি, মাগুরায় ১২টি, খলিষখালী ২২টি, খেশরায় ১৪টি, জালালপুরে ১৩টি ও খলিলনগর ইউনিয়নে ২৩টি পূজা মণ্ডপে চলছে প্রতিমা তৈরির কাজ। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে দেবী তৈরীর কারিগররা এসেছেন মূর্তি তৈরী করার কাজে।
ভাস্কররা জানান, প্রতিমা তৈরিতে পৌরাণিক কাহিনীকে নানা আদলে ফুটিয়ে তুলার চেষ্টা চলছে। কারুকার্যতা শেষ হলে রং তুলির নিখুঁত আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলা হবে। প্রকৃত রূপ তোলা হবে নাক, কান, চোখ, মুখ ইত্যাদি দিয়ে। তবে এই কাজে পরিশ্রমের তুলনায় পারিশ্রমিক পর্যাপ্ত না হলেও দৃষ্টিনন্দন সুন্দর প্রতিমা তৈরি করতে মনের মাধুরী দিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
তালা উপজেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সহ-সভাপতি নারায়ন চন্দ্র মজুমদার জানান, এবার অত্র উপজেলায় ১৯৫টি পূজামণ্ডপে দুর্গাপূজা অনুষ্ঠিত হবে। শান্তিপূর্ণভাবে পূজা অনুষ্ঠানের জন্য ইতোমধ্যেই পুলিশি তদারকি শুরু হয়েছে। প্রতিটি পূজা মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হচ্ছে।
তালা থানার ওসি মোঃ মোমিনুল ইসলাম-পিপিএম ও পাটকেলঘাটা থানার ওসি সেখ মাহমুদ হোসেন জানান, দুর্গাপূজায় আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় সর্বাত্মক চেষ্টা করা হবে। এ বছর থানার প্রতিটি মণ্ডপে সিসি ক্যামেরা স্থাপন করা হবে। পূজামন্ডপগুলোয় সাধারণত তিন ভাগে বিভক্ত করে কঠোর নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে থাকে। এবারও পুলিশ সদস্য, র্যাব বাহিনীর সদস্য, আনসার ভিডিপিসহ গোয়েন্দা পুলিশের কঠোর নজর থাকবে। আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারীদের কঠোর হাতে দমন করা হবে বলে জানান তারা।

