তালা উপজেলা খলিষখালী ইউনিয়নের গাছা চোরাবাল্লে খালে অবৈধ নেটপাটা দিয়ে মাছ ছাষ চলছে কয়েক বছর ধরে। যে কারণে প্রতি বছর এসময় চোরাবাল্লে খালের দুই পাশে প্রায় এক হাজার বিঘা জমিতে কৃষি ও মৎস্য ঘের পানিতে তলিয়ে থাকে। ক্ষতিগ্রস্ত হয় এলাকার শত শত মৎস্য চাষী ও কৃষকরা। অভিযোগ উঠেছে, শুক্তিয়া গ্রামের ইউপি সদস্য গনেশ চন্দ্র বর্মণ প্রভাব খাটিয়ে দীর্ঘদিন যাবৎ গাছা বাজার সংলগ্ন বিলের চোরা বাল্লে খালটি অবৈধভাবে দখল করে মাছ চাষ করে আসছে। কেউ প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে মাছ চুরির মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ রয়েছে গনেশ বর্মনের বিরুদ্ধে। এলাকাবাসী অবৈধ নেটপাটা উচ্ছেদের জন্য উপজেলা নির্বাহী অফিসারের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিশেষকাটি গ্রামে ঠাকুর দাশ মন্ডল, গুরুপদ মন্ডল, শিবপদ বিশ্বাস, কৃষ্ণপদ মন্ডল, গাছা গ্রামে কমল মন্ডল, কুমোদ মন্ডল, শিবপদ সরকার, পবিত্র রায়, কৃষ্ণনগর গ্রামে সুকুমার সরকার অভিযোগ করে বলেন, গাছা চোরাবাল্লে খালটি দৈর্ঘ্য প্রায় এক কিলোমিটার। এই খালের দুই পাশে এলাকার লোকজন মাছ চাষসহ ধান চাষ করে থাকে। কিন্ত বর্ষা মৌসুমে খালটি দিয়ে তারা পানি নিষ্কাশন করতে পারে না। আবার শুকনো মৌসুমে মৎস্য ঘেরে পানি ওই খাল দিয়ে বের করতে পারে না। স্থানীয় ইউপি সদস্য শুক্তিয়া গ্রামের গনেশ বর্মন প্রভাব খাটিয়ে চোরাবাল্লে খালটি তার নিয়ন্ত্রণে নিয়ে ১২ মাস দখলে রেখে মাছ চাষ করে লাখ লাখ টাকা ব্যবসা করছেন। অথচ কোন প্রকার আইনগত ভিত্তি তার নেই।
গ্রামবাসীরা অভিযোগ করেন, গতবছর সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসক এস এম মোস্তফা কামাল জেলার সকল খালের অবিধ নেটপাটা অপসারণ করার নির্দেশ দিলেও এই খালে তা বাস্তবায়ন হয়নি। তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকবাল হোসেন খালটির অবৈধ নেটপাটা অপসারণ করতে এসে পর্যাপ্ত জনবল না থাকায় তিনি ফিরে যান।
এদিকে পানি নিষ্কাশনের জন্য গ্রামবাসীরা নেটপাটা সরানোর উদ্যোগ নিলে গনেশ বর্মন ইতিপূর্বে ৩২ জন গ্রামবাসীর নামে মাছচুরির মামলা দিয়ে হয়রানী করে। অভিযোগ উঠেছে খলিষখালী ভ‚মি অফিসের চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী আক্তার হোসেন ওই চোরাবাল্লে খাল থেকে প্রতিবছর লক্ষাধিক টাকা ঘুষ নিয়ে থাকেন। আক্তার হোসেন গাছা এলাকায় গিয়ে চোরাবাল্লে খাল ইজারা আছে বলে প্রচার দেয়ায় এলাকার সবাই জানে গনেশ চন্দ্র বর্মণ ভ‚মি অফিস থেকে ইজারা নিয়ে খালটিতে মাছ চাষ করেন।
চোরাবাল্লে খাল দখলকারী ইউপি সদস্য গনেশ বর্মণ জানান, পাটকেলঘাটা ভ‚মি অফিস ও খলিষখালী ভ‚মি অফিস জানে খালটি তিনি দখল করে মাছ চাষ করেন। তবে এতে পানি নিষ্কাশনে কোন সমস্যা হয় না এমন দাবি তার।
তালা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ ইকবাল হোসেন জানান, উপজেলার সকল খালের অবৈধসহ নেট-পাটা অপসারণ করতে ইতিমধ্যে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। দ্রæত নেট-পাটা অপসারণের কাজ শুরু করা হবে বলে জানান তিনি।